ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

রোহিঙ্গাদের আবাসনে বর্মি সেনাপ্রধানের ঘোষণায় উদ্বেগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৪ ঘণ্টা, মে ৫, ২০১৮
রোহিঙ্গাদের আবাসনে বর্মি সেনাপ্রধানের ঘোষণায় উদ্বেগ গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে (ফাইল ফটো)

নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমারে ‘মডেল গ্রাম’ তৈরি করা হয়েছে জানিয়ে দেশটির সেনাবাহিনীর প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং বলেছেন, রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মিত নির্ধারিত এ অঞ্চলটি বাংলাদেশে আশ্রিতদের জন্য ‘নিরাপদ আবাস’ হবে। 

মিয়ানমার সফরে যাওয়া জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দলকে এ কথা বলেন মিন অং হ্লাইং। তবে তাদের সঙ্গে আলাপে রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ অভিবাসী বলেই দাবি করেন এই সেনাপ্রধান।

 

আপন বাসভূমি রাখাইনে ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের মধ্যে যে নিরাপত্তাহীনতা কাজ করছিল, সেনাপ্রধানের এ বক্তব্যে সে শঙ্কা আরও বেড়ে গেছে ভুক্তভোগী রোহিঙ্গাদের মধ্যে।  

শনিবার (৫ মে) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, সম্প্রতি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিদল মিয়ানমার সফরে গেলে তাদের সামনে পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার সময় সেনাবাহিনী প্রধান ‘নির্ধারিত এলাকায়’ রোহিঙ্গাদের ‘রাখার’ কথা বলেন। কার্যত যার মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের ‘অবরুদ্ধ’ রাখার মনোভাব প্রকাশ পায়।  

নিজ ফেসবুকের টাইমলাইনে শনিবার মিয়ানমার সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং রোহিঙ্গাদের আবারও ‘বাঙালি’ হিসেবে দাবি করেন। তার দাবি, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ থেকে রাখাইনে এসে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছে।  

‘তারা (রোহিঙ্গা) যদি নির্ধারিত এলাকায় থাকে তাহলে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই,’ লিখেন মিন অং।  

এমনকি বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের অভিযোগ নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।  

মিয়ানমার সেনাবাহিনী প্রধান বলেন, বাঙালি কখনও বলবে না তারা সুখে আছে। যদি তারা বলে থাকে অনেক কষ্ট ও নিপীড়ন সহ্য করেছে তাহলে তা হবে শুধু সহানুভূতি পাওয়ার জন্য। এছাড়া রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি ‘অতিরঞ্জিত’।  

গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইনে সেনা অভিযানের পর এ পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। রোহিঙ্গারা বলছেন, তাদের সম্পদ লুটপাটের পাশাপাশি নির্যাতন, খুন, ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। সেনাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে স্থানীয় মগরাও।  

এ হত্যাকাণ্ডকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ। যদিও বরাবরই বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার। রোহিঙ্গা ইস্যুতে নীরব ভূমিকা পালন করায় বিশ্বজুড়ে নিন্দিত হয়েছেন দেশটির নেত্রী অং সান সু চি।  

এদিকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বারবার দাবি জানালেও সেভাবে আগ্রহ দেখাচ্ছে না মিয়ানমার। মাঝে এ সংক্রান্ত সমঝোতা সই হলেও দুই দেশের যৌথ কমিটি কাজ তেমন একটা অগ্রগতি দেখাতে পারেনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০১৮
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।