মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) চীনের গবেষকরা বলেছেন, সম্প্রতি চাঁদের ‘অন্ধকার পিঠে’ তাদের যে রোবোটিক চন্দ্রযান চা’ই-৪ সফলভাবে অবতরণ করেছে, সেটির এক কোণে একটি পাত্রে তুলা বীজের অঙ্কুরোদগম হয়েছে। গবেষকরা সেই চন্দ্রযান থেকে পাঠানো ছবিও প্রকাশ করেছেন।
এর আগে বিজ্ঞানীরা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) লেটুস উৎপাদনও করেছেন, ফুটিয়েছেন ফুলও। কিন্তু মনুষ্যসভ্যতার বাইরের জগত চাঁদে গাছ জন্মানোর ঘটনা এটিই প্রথম। এতে যেন আর্মস্ট্রংয়ের সেই ভাষ্য পুনরুচ্চারিত হচ্ছে, গোটা মনুষ্যজাতির জন্য এ এক বিরাট ঘটনা।
চাঁদে গাছ জন্মানোর পরীক্ষামূলক প্রক্রিয়ার নেতৃত্বদাতা শাই জেংশিন বলেন, ‘চাঁদের বুকে গাছ জন্মানোর এই অভূতপূর্ব ঘটনায় গোটা গবেষকদল উচ্ছ্বসিত। ’
বিজ্ঞানীরা বলছেন, তুলা বীজের অঙ্কুরোদগম চাঁদে উদ্ভিদ জন্মানোর পরিবেশ আছে বলেই ধারণা দিচ্ছে। সেজন্য দীর্ঘমেয়াদী মহাকাশ গবেষণা এবং পৃথিবীর বাইরে মঙ্গল গ্রহসহ সৌরজগতের অন্য কোথাও মনুষ্য বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা প্রক্রিয়ায় এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
গত ৩ জানুয়ারি বেইজিং সময় সকাল ১০টা ২৬ মিনিটে মনুষ্যবিহীন চাং’ই-৪ চাঁদের দক্ষিণ মেরুর এইটকেন বেসিন স্পর্শ করে। চাঁদের ‘অন্ধকার পিঠ বা উল্টো পিঠের’ ভূতাত্ত্বিক বিষয় বিশ্লেষণে এটিকে সেখানে পাঠিয়েছে চংকিং ইউনিভার্সিটি।
অ্যাডভান্সড টেকনোলজি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চন্দ্রযানটির একটি কার্গোতে বায়ুরোধক কয়েকটি কন্টেইনারের মধ্যে মাটিতে তুলা ও আলুর বীজ এবং ইস্ট (এককোষী ছত্রাক) ও মাছির ডিম পাঠানো হয়েছে।
চাং’ই-৪ এর সঙ্গে চীনা গবেষকদের নিয়ন্ত্রণকক্ষের সরাসরি কোনো যোগাযোগ না থাকায় চন্দ্রযানটিকে ছবি ও তথ্য প্রথমে পাঠাতে হয় অন্য একটি কৃত্রিম উপগ্রহে। সেখান থেকে সেগুলো পৃথিবীতে আসে।
চংকিং ইউনিভার্সিটি বলেছে, তুলার চারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠলেও অন্য কিছু অঙ্কুরিত হয়নি বা ফোটেনি।
তবে তুলার বীজের অঙ্কুরোদগমকেই মহাকাশ গবেষণার ‘ভালো খবর’ বলে অভিহিত করেছেন বিজ্ঞানীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৯
এইচএ/