ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ব্রিটিশ সামরিক শক্তিতে ধস!

টিটু আহমেদ, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৯
ব্রিটিশ সামরিক শক্তিতে ধস! ব্রিটিশ ‘বোমশেল’ ফাইটার জেট, ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: বিশ্বজুড়ে দ্রুতগতিতে বাড়ছে অস্ত্রের ঝলকানি। এক দেশ অপর পরাশক্তিকে টেক্কা দিয়ে অস্ত্রাগারে যোগ করছে নতুন নতুন প্রযুক্তি। সেখানে বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি হয়েও সামরিক সক্ষমতায় তেমন কোনো অগ্রগতি নেই যুক্তরাজ্যের। বরং দেশটির শক্তিতে একরকম ধস নেমেছে।

ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য মিররের বরাত দিয়ে রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুতনিক বলছে, যুক্তরাজ্যের সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা অব্যাহতভাবে হ্রাস পাচ্ছে। এটা অনেকগুলো দুঃসংবাদের মধ্যে একটি যে- ব্রিটিশ রাজকীয় বিমানবাহিনীর (আরএএফ) প্রতি তিনটি ‘বোমশেল’ ফাইটার জেটের মধ্যে একটি উড্ডয়নের সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছে।

এটি ব্রিটিশ বিমানবাহিনীর জন্য একটি দুঃখজনক পরিস্থিতি। দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ।

স্পুতনিক বলছে, মূলত প্রতিরক্ষা শক্তিতে একটা গোপনীয়তা থাকে। কিন্তু সেটা অনুসন্ধানে বের করে এনেছে তাদেরই দেশিয় সংবাদপত্র। তা-ও আবার বিমানবাহিনীর দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। দেশটির আকাশপথের সক্ষমতা কমে গেছে অনেকগুলো ফাইটার জেটের তিন ভাগের এক ভাগ ‘অচল’ হয়ে। আর এটা সবার নজড়ে চলে আসায় বিশ্বব্যাপী একটি সামরিক বিদ্বেষ দেখা দিতে পারে।

এর আগে ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য মিরর রিপোর্ট করেছিল, ব্রিটিশ রাজকীয় বিমানবাহিনীর অনেকগুলো ফাইটার জেট ‘উড়তে অযোগ্য’ হয়ে গেছে।

মিরর বলছিল, রিপোর্টটি যুক্তরাজ্যের বিমানবাহিনীর দুঃসংবাদের। বড় ধরনের একটি বেদনাদায়ক ব্যাপ্তি তাদের জন্য। তারা বিশ্বব্যাপী সামরিক বিদ্বেষের কবলে পড়তে পারে। কেননা, ব্রিটিশ বিমানবাহিনীর অন্তত ৪৩৪টি এয়ারক্রাফট রয়েছে। তার মধ্যে ১৪২টি আছে, যেগুলোকে মূলত বলা হয় ‘সাস্টেইনমেন্ট ফ্লিট’। এগুলো বিমানবাহিনীর একটি অজানা জায়গায় লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। এই  ১৪২টি ‘আউট-অব-অ্যাকশন’ জেটেরই বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন। এসব ‘ওড়ার অযোগ্য’ হয়ে গেছে। এছাড়া জেটগুলোর জন্য একটি ভালো সংরক্ষণাগারও দরকার।

বড় দুঃসবাদের বিষয় হলো- ব্রিটেনের ৪৩৪টি এয়ারক্রাফটের মধ্যে ১৫৬টি টাইফোন ফাইটার জেট। এই ১৫৬টির মধ্যে ৫৫টি জেটেরই উড্ডয়ন ক্ষমতা নেই। যেগুলোর সংস্কার জরুরি।

এদিকে, টাইফোন ফাইটারের প্রতিটি জেটের মূল্য ৮০ মিলিয়ন পাউন্ড। যেগুলো মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ‘অপারেশন ইনহারেন্ট রেজোলভ’এ সংযুক্ত করে জঙ্গি দমনে ইরাক এবং সিরিয়ায় বিশাল এলাকাজুড়ে বোমা হামলার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল।

দেশটির প্রতিরক্ষা সেক্রেটারি মিররকে জানিয়েছেন, রক্ষণশীলতার এই জয়াগাটিতে হ্রাস দেখা দেওয়ায় আমাদের প্রতিরক্ষার ওপর মারাত্মক একটি প্রভাব পড়েছে। এছাড়া যুক্তরাজ্যের সক্ষমতার পরিসীমা হুমকিতে।

লিবারেল ডেমোক্রেটদের প্রতিরক্ষা বিষয়ক মুখপাত্র জানিয়েছেন, যেমনই হোক, সবচেয়ে বড় বিষয় হলো- এই এয়ারক্রাফটগুলোকে সংস্কার এবং যাথযথ সার্ভিসিং করার জন্য বিমানবাহিনীর ফ্রন্ট লাইন থেকে অপসারণ করতে হবে। এটা একদমই পরিষ্কার। আর তখনই বিমানবাহিনীর অস্ত্রের হাত ফাঁকা হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আর যাই হোক, এয়ারক্রাফটের এই পরিসংখ্যানটি মেরামত এবং সার্ভিসিং করার জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়াদি আমাদের অতিক্রম করতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

রাজকীয় বিমানবাহিনী, ব্রিটিশ সেনাবাহিনী এবং রাজকীয় নৌবাহিনীকে কঠোরভাবে সুসংঠিত করে সামরিক সক্ষমতার নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে। বিশ্ব পরাশক্তিতে পাঁচ নম্বর অবস্থান তিনি ধরে রেখেছেন বলে বিভিন্ন জরিপের তথ্য।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৯
টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।