ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রের দাস নয়, পাল্টা জবাব এরদোয়ানের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৫ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০১৯
তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রের দাস নয়, পাল্টা জবাব এরদোয়ানের ‘এস-৪০০’ ক্ষেপণাস্ত্র ও তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়্যব এরদোয়ান, ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: রাশিয়া থেকে ‘এস-৪০০’ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তুরস্ককে ওয়াশিংটন হুঁশিয়ারি দিলেও তাতে যেন কর্ণপাত করছেন না দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়্যব এরদোয়ান। রুশ ওই ক্ষেপণাস্ত্র কিনলে তুরস্কের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমান ‘এফ-৩৫’ বিক্রি চুক্তি ‘ক্ষতিগ্রস্ত’ হবে বলে সতর্কতা পেয়েও এরদোয়ান বলছেন, ‘আঙ্কারা যুক্তরাষ্ট্রের দাস নয়’ যে, তারা সিদ্ধান্ত দেবে আর আমরা তাদের কথা মেনে অস্ত্র কিনবো।

বুধবার (০৬ মার্চ) তুর্কি প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দিয়েছেন, দেশের আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার পরিকল্পনা এগিয়ে নেওয়ার অংশ হিসেবে রাশিয়ার ‘এস-৪০০’ ক্ষেপণাস্ত্র আঙ্কারা কিনবেই।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট করে বলেন, রুশ ‘এস-৪০০’ সিস্টেম কেনার ওপর মার্কিন চাপের বিরুদ্ধে আঙ্কারা কঠোর অবস্থান দেখাবে।

সিদ্ধান্তে অনড় থাকবে তুরস্ক। এছাড়া তুরস্ক একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। এখানে চাপ প্রয়োগ হয় না। তুর্কির পছন্দ মতো বাণিজ্য অংশীদার এবং অস্ত্র সরবরাহের অধিকার রয়েছে। এটাই ঠিক।

এরদোয়ান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘এস-৪০০’ চুক্তি বিবেচনা করতে কখনই বলতে পারে না। এমনকি এর জন্য তাদের সঙ্গে করা ‘এফ-৩৫’ চুক্তিতেও আঘাত করতে পারে না তারা। দু’টি দুই বিষয়। তাই আমি বলবো, এটা নৈতিক হবে না, অনৈতিক হবে। আমরা কী করবো, সেটা কাউকে জিজ্ঞেস করতে হবে না।

প্রেসিডেন্ট বলেন, রুশ ‘এস-৪০০’ কেনা চুক্তির বিতর্ক তুরস্ককে বিবেচনা করতে বাধ্য করবে ২০২০ সালে রাশিয়ার পরবর্তী প্রজন্মের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘এস-৫০০’ ক্ষেপণাস্ত্র কিনতেও। আর ‘এস-৫০০’ আকাশপথে আরও শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হবে বলেও উল্লেখ করেন এরদোয়ান।

এর আগে তুরস্কের রুশ ‘এস-৪০০’ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার সিদ্ধান্তে তাদের প্রতি সতর্কতা প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় কমান্ডের প্রধান ক্যাপিটল হিলে বলেছিলেন, এ বছর রাশিয়ার কাছ থেকে ‘এস-৪০০’ কেনার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তুরস্ক, সেটি তাদের পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন। এমন মন্তব্যের পরই তুরস্কের প্রতি সতর্কতা প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমান ‘এফ-৩৫’ এর হুমকি হিসেবে দাঁড়াতে পারে রাশিয়ার এই ‘এস-৪০০’ ক্ষেপণাস্ত্রটি। এ কারণেই তুর্কির ওপর হুঁশিয়ারি বা সতর্কতা জারি করে প্রধান পরাশক্তির দেশটি।

মঙ্গলবার (০৫ মার্চ) স্টেট মুখপাত্র রবার্ট পাল্লাদিনো বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে তুরস্ককে সতর্ক করে দিয়েছি, তারা যদি রাশিয়া থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাটি কিনে, তাহলে আমাদের সঙ্গে তাদের যে ‘এফ-৩৫’ চুক্তি হয়েছিল, তা পুনর্বিবেচনা করা হবে এবং ভবিষ্যতে দেশটিতে কোনো ধরনের অস্ত্র সরবরাহ করা হবে কি-না তাও অনিশ্চিত হয়ে যাবে।

এরও আগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুরস্কের ‘এফ-৩৫’ চুক্তি হয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১০০টি ‘এফ-৩৫’ যুদ্ধবিমান কেনার কথা ছিল তুরস্কের। চুক্তির পর ইতোমধ্যে দু’টো যুদ্ধবিমান পাঠিয়েও দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে বাকিগুলো পাঠাতে কিছু সময় চেয়েছিল দেশটি।

এদিকে, তুর্কির এই সিদ্ধান্তকে যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটো জোটভুক্ত অন্যান্য দেশগুলো সন্দেহের চোখে দেখছে। তুরস্কের এই সিদ্ধান্তে সেসব দেশের সঙ্গে তাদের কূটনৈতিক জটিলতা শুরু হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তবে আঞ্চলিক হুমকি মোকাবিলায় নিজেদের বিকল্প ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজন বলে জানিয়েছে তুরস্কের রাজধানী অঙ্কারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৯
টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।