যখন রিচার্ডের পড়াশোনা শেষ হয়ে গেলো, তখন তিনি ডিগ্রি নিয়ে ফেরত গেলেন আপনভূমিতে। এরপর পেরিয়েছে বহু বছর।
ব্যস, স্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে রিচার্ড তার জীবন গড়ার স্মৃতিভূমি ভারতে ফিরে সেই ২০০ রুপি পাওনা শোধের সিদ্ধান্ত নিলেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২২ বছর পর সম্প্রতি আওরঙ্গবাদের ওয়াংখেড়েনগরে স্ত্রী মিশেলকে নিয়ে এলেনও রিচার্ড। তবে বকেয়া শোধ করতে এসে যেন আবেগে ডুবে গেলেন কেনিয়ার এই এমপি। কাশীনাথ এবং তার পরিবারও যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না, তাদের অনেক চেনা ছেলেটা সত্যিই দূরদেশের এই গলিতে এভাবে আসবেন ‘সামান্য অংকের বকেয়া শোধ করতে’!
২২ বছর পর এসে রিচার্ডের পাওনা শোধের কাহিনিটি এরইমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সংবাদমাধ্যমে। বকেয়ার চেয়ে তার আবেগ এবং ভালোবাসার প্রশংসা করছেন অনেকে। রিচার্ড সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার কাছে তার (কাশীনাথ) ২২ বছর আগের ২০০ রুপি পাওনা পড়েছিল। আমি সদাই করেছি, কিন্তু মূল্য দেইনি। যখন আমি কেনিয়ায় ফেরত গেলাম এবং বিয়ে করলাম, তখন আমার মনে পড়লো (পাওনার কথা), আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে- ভারতে ফিরে এই পাওনা শোধ করতে হবে। এখন আমি প্রশান্তি অনুভব করছি। ’
ভারতে এসে রিচার্ড যে আবেগে ডুবে গেলেন, সে কথাও এড়ালেন না। বললেন, ‘যখন আওরঙ্গবাদে থাকতাম, তখন আমার আর্থিক অবস্থা খুব ভালো ছিল না, এই মানুষগুলো (কাশীনাথ পরিবার) আমাকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। তখনই মনে হতো, একদিন আমি তাদের পাওনা শোধ করবো এবং তাদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাবো। এখানে এসে আবেগ ছুঁয়ে গেছে আমাকে। ’
শিক্ষাসনদ নিয়ে ফিরে যাওয়া রিচার্ড এতোবছর পর এলেন এমপি হয়ে। সে কথা যেন ভাবতেই পারছিলেন না কাশীনাথরা। তাইতো, অতিথি আপ্যায়নের জন্য রিচার্ড ও মিশেলকে আওরঙ্গবাদের সবচেয়ে ভালো হোটেলে নিয়ে যেতে চাইলো কাশীনাথের পরিবার। কিন্তু কাশীনাথের ঘরের খাবার খেতেই আগ্রহ দেখান রিচার্ড।
পরে রিচার্ড তার কলেজে গেলে তাকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। তিনি সেখানে স্মৃতিচারণ করেন। মতবিনিময় করেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। মহারাষ্ট্র থেকে ফেরত যাওয়ার সময় কাশীনাথের পরিবারকে কেনিয়া ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানান রিচার্ড।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৬ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৯
এইচএ/