সোমবার (১৫ জুলাই) তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
সংবাদমাধ্যম জানায়, দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে জানিয়েছে, তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোয়ান বলেছেন, রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনা আধুনিক তুরস্কের ইতিহাসে অন্যতম একটি চুক্তি।
এ বিবৃতি দেওয়ার কিছুক্ষণ পর ‘এস-৪০০’ এর উপাদান বহনকারী রুশ নবম প্লেন অবতরণের কথা জানিয়েছে তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, ১২ জুলাই রাশিয়ার কাছে থেকে এ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার প্রথম চালান গ্রহণ করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার হুমকির মুখে থাকা উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোটের (ন্যাটো) অন্যতম সদস্য দেশ তুরস্ক। ওইদিন তিনটি কার্গো প্লেনে করে এ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার নানা উপাদান আনা হয় মার্তাদ বিমান ঘাঁটিতে। পরেরদিন আরও একটি চালান গ্রহণ করে তুরস্ক। পরে রোববার (১৪ জুলাই) সাত নম্বর প্লেন অবতরণ করে তুরস্কের মাটিতে। সর্বশেষ নবম প্লেন অবতরণের কথা জানিয়েছে তুরস্ক।
রোববার তুর্কি প্রেসিডেন্ট জানিয়েছিলেন, ২০২০ সালের মধ্যে এ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সব চালান তুরস্কে আসবে।
রুশ এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র আকাশপথের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে। ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণের এই ক্ষেপণাস্ত্রের আওতা প্রায় ৪০০ কিলোমিটার। এটি একই সময়ে ৮০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। স্বল্প উচ্চতার ড্রোন থেকে শুরু করে যেকোনো উচ্চতায় যুদ্ধবিমান এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রে আঘাত হানতে সক্ষম। এই প্রযুক্তির প্রতি ইউনিটে থাকে নয়টি করে লঞ্চার (যেখান থেকে ছোড়া হয়), ১২০টি করে ক্ষেপণাস্ত্র এবং কমান্ড ও সাপোর্টের জন্য সরঞ্জাম ও বাহন।
নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতেই ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার চুক্তি করেছে তুরস্ক। এ জন্য মস্কোকে বড় অংকের অর্থও পরিশোধ করেছে তারা।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা, এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা নিজেদের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের জন্য বড় হুমকি। তাই উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোটের (ন্যাটো) অন্যতম সদস্য তুরস্ককে রুশ এস-৪০০ কিনতে বরাবরই নিষেধ করে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। এ নিষেধাজ্ঞায় কোনো ভ্রুক্ষেপ না করায় হুঁশিয়ারিও দিয়ে আসছিল মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
তুরস্ক যদি ‘এস-৪০০’ চুক্তি বাতিল না করে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা ‘এফ-৩৫’ চুক্তি বাতিল হয়ে যাবে বলেও জানিয়েছিলেন মার্কিন কর্মকর্তারা। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আসতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে তাদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৯
এইচএডি/টিএ