ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

‘পৃথিবীর ফুসফুস’ জ্বলছে মানুষের কারণে!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৯
‘পৃথিবীর ফুসফুস’ জ্বলছে মানুষের কারণে! আগুনে পুড়ছে আমাজনের বিশাল অংশ। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ভয়াবহ দাবানলে জ্বলছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ বন আমাজন। স্থানীয় পশুপালক, কাঠুরে ও কৃষকদের দেওয়া আগুন থেকেই এ দাবানল সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন ও গবেষকরা। 

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়েছে।

অলাভজনক সংগঠন আমাজন ওয়াচের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ক্রিশ্চিয়ান পয়ারিয়ার জানান, ক্যালিফোর্নিয়া বা অস্ট্রেলিয়ার জঙ্গলের মতো গরমের মৌসুমেও আমাজনে এত সহজে আগুন ছড়ায় না।

কৃষক ও পশুপালকরা দীর্ঘদিন থেকে ভূমি পরিষ্কার করতে আগুন দেওয়ার পদ্ধতি ব্যবহার করছে। আজ এভাবে আমাজন জ্বলার কারণও তারাই।  

মানুষই বনে আগুন লাগিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।  ছবি: সংগৃহীত

ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইএনপিই) জানিয়েছে, এবছর ব্রাজিলে আগুন লাগার ঘটনা গত বছরের চেয়ে প্রায় ৮০ শতাংশ বেশি। গত বছর এ সময়ে আগুন লেগেছিল ৪০ হাজারবারের মতো। এবার এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭২ হাজারেরও বেশি, যার অর্ধেকই ঘটেছে আমাজন অঞ্চলে। স্যাটেলাইটের পাঠানো ছবিতেও ধরা পড়েছে বনের বিশাল অংশ উধাও হওয়ার চিত্র।  

বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ অক্সিজেন তৈরি করে আমাজন। এ কারণে, এটিকে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ বলা হয়। ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড লাইফ ফান্ড জানিয়েছে, আমাজন যদি এভাবে জ্বলতেই থাকে, তাহলে একসময় সেটি উল্টো কার্বন নিঃসরণ শুরু করতে পারে।  

এবছর বন পুড়েছে গতবারের দ্বিগুণ।  ছবি: সংগৃহীত

শুষ্ক আবহাওয়া, প্রবল বাতাস ও গরমের কারণে আমাজনে আগুন লেগেছে বলে দাবি করেছেন ব্রাজিলের পরিবেশমন্ত্রী রিকার্ডো সালেস। কিন্তু, সিএনএনের আবহাওয়াবিদ হেইলি ব্রিঙ্ক বলেন, এটি অবশ্যই মনুষ্য-সৃষ্ট। একে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলার সুযোগ নেই। এবারের আগুনের ঘটনাও প্রচলিত কৃষিভিত্তিক কারণের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।  

তিনি বলেন, গাছপালা সব শুকনো, আগুন লাগানোর এটাই সেরা সময়। কৃষকেরা শুষ্ক মৌসুমের জন্য অপেক্ষা করে আর আগুন লাগিয়ে জমি পরিষ্কার শুরু করে, যেন তাদের পশুগুলো চরানো যায়। আমাদের ধারণা, আমাজনে সেটাই চলছে।

আগামী সেপ্টেম্বরে গরমের মৌসুম শুরু হবে বলেও জানান তিনি।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টকে দুষছেন পরিবেশবাদীরা
বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন, কর্মী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা আমাজনের দাবানল নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আগুন ছড়িয়ে পড়ায় ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারোকেও দায়ী করছেন অনেকেই।  

স্যাটেলাইটের ছবিতে অ্যামাজনের দাবানল।  ছবি: সংগৃহীত

গত বছর নির্বাচনী প্রচারণার সময় আমাজনের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা অনুসন্ধানের মাধ্যমে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। তার অনুপ্রেরণাতেই পশুপালক, কৃষক, কাঠুরেরা গণহারে বনে আগুন লাগাচ্ছে বলে অভিযোগ পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর।  

এছাড়া, মাত্র সপ্তাহখানেক আগেই আমাজন বিষয়ে বাকবিতণ্ডার জেরে আইএনপিইর পরিচালককে বরখাস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট বোলসোনারো। এবারের জুন মাসে গত বছরের চেয়ে ৮৮ শতাংশ বেশি বন উজাড় হয়েছে- স্যাটেলাইটের এ তথ্যের পক্ষে কথা বলেছিলেন আইএনপিই পরিচালক। এসময় তার তথ্য ‘মিথ্যা’ বলে দাবি করেন প্রেসিডেন্ট। সম্প্রতি বিদেশ থেকে অর্থ সাহায্য আসা বন্ধ হয়ে যাওয়া পরিবেশবাদী এনজিওগুলোই আমাজনে আগুন লাগিয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৯
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।