বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) এ তথ্য জানায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
খবরে বলা হয়, চীনের আধা-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হংকংয়ের সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সমর্থন করে বুধবার (২০ নভেম্বর) দু’টি বিল পাস করে যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সই বা ভেটোর জন্য বিল দু’টি এখন হোয়াইট হাউসে পাঠানো হবে। এটি সই করার জন্য ট্রাম্পকে ১০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, ভেটো নয়, বিলটি সই করে সেটি আইনে পরিণত করতে চান ট্রাম্প। চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের সঙ্কটপূর্ণ সময়ে এমন উদ্যোগ নিলো যুক্তরাষ্ট্র।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) ‘হংকং হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্র্যাসি অ্যাক্ট’ নামে একটি বিল পাস হয় মার্কিন সংসদের উচ্চকক্ষ সিনেটে। তারপর বুধবার বিলটি হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে পাঠানো হলে, সেখানেও সেটি পাস হয়।
ওই বিল অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্য করার জন্য প্রতি বছর একবার করে হংকংয়ে স্বায়ত্তশাসন বজায় আছে এমন প্রমাণ দেখিয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সার্টিফিকেট নিতে হবে চীনকে। এছাড়াও, মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে হংকংয়ে সহিংসতা চালানো কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হবে।
তাছাড়া, মার্কিন সিনেটে দ্বিতীয় আরেকটি বিল পাস হয়েছে। ওই বিল অনুযায়ী, এখন থেকে হংকং পুলিশের কাছে কাঁদানে গ্যাস, পেপার স্প্রে, রাবার বুলেটসহ অন্য গোলাবারুদ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হবে।
গত জুনে শুরু হওয়া হংকং বিক্ষোভ এ সপ্তাহে তীব্রতর সহিংস রূপ নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীদের রুখতে পুলিশ গুলি ও রাবার বুলেট চালায়। সেই সঙ্গে কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে।
এছাড়া, অঞ্চলটির পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটিতে আটকে আছে এক শতাধিক শিক্ষার্থী। ক্ষুধার্ত শিক্ষার্থীরা হামলা ও আটকের ভয়ে সেখান থেকে বের হতে পারছেন না।
আরও পড়ুন: হংকংয়ে পুলিশ-শিক্ষার্থী ব্যাপক সংঘর্ষ, ক্যাম্পাস ঘেরাও
বুধবার চীনা গণমাধ্যম ‘গ্লোবাল টাইমস’ বলে, এটি মানবাধিকার ও গণতন্ত্র রক্ষার আইন নয়। বরং এই আইনের নাম হওয়া উচিত ছিল ‘সাপোর্ট হংকং ভায়োলেন্স অ্যাক্ট’ যা মূলত হংকংয়ে দাঙ্গাকারীদের সহিংসতাকে সমর্থন করছে। এছাড়া, হংকং সরকারের মতে বিল দু’টি বিক্ষোভকারীদের ‘ভুল বার্তা’ দিচ্ছে।
চলতি বছরের জুন মাসে চীন প্রস্তাবিত একটি অপরাধী প্রত্যর্পণ বিল বাতিলে দাবিতে আন্দোলন শুরু হয় হংকংয়ে। অপরাধী প্রত্যর্পণ আইন অনুযায়ী, চীন যদি চায় সন্দেহভাজন অপরাধীদের নিজ ভূখণ্ডে নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করতে পারবে। আইনে বলা হয়েছে, বেইজিং, ম্যাকাও ও তাইওয়ান থেকে হংকংয়ে পালিয়ে আসা কোনো অপরাধীকে ফেরত চাইলে, তাকে ফেরত দিতে হবে। গত ২৩ অক্টোবর বিলটি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় হংকং আইনসভা। কিন্তু, এর আগেই বিক্ষোভটি রূপ নেয় সরকারবিরোধী আন্দোলনে।
আরও পড়ুন: হংকং বিক্ষোভে পুলিশের গুলি, আহত ১
বাংলাদেশ সময়: ১২০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৯
এফএম