যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল নিজেদের এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, ইরানে চলমান বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০৬ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে অ্যামনেস্টির এ অভিযোগকে মিথ্যা দাবি করে সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করেছে তেহরান।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) প্রকাশিত অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ইরানে চলমান বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর ‘নির্মমতায়’ দেশটির ২১টি শহরে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০৬ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া সহিংসতার ভিডিও ও প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যের সাহায্যে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয় বলে জানিয়েছে তারা।
অন্যদিকে জাতিসংঘের তেহরান মুখপাত্র আলি রেজা মেহের ইউসেফি জানান, বিক্ষোভে ১০৬ জন মৃতের ব্যাপারে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দেওয়া তথ্য পুরোপুরি ভুল। ইরানবিরোধী বিভিন্ন দেশের উস্কানিতেই তারা এমন তথ্য দিয়েছে। সরকার নিশ্চিত না করা পর্যন্ত এ ধরনের কোনো তথ্য নির্ভরযোগ্য নয়।
বুধবার (২০ নভেম্বর) ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানিও একই কথা বলেন। দেশটিতে বিক্ষোভ ও সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ করা গেছে দাবি করে তিনি বলেন, এর পেছনে বিদেশি শত্রুদের উস্কানি রয়েছে।
ইরান সরকারের তথ্যমতে, বিভিন্ন এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক ও সরকারি ভবনে হামলা ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সহস্রাধিক বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে এ বিক্ষোভ ঘিরে ইরানে বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। এ নিয়ে মঙ্গলবার ইরান সরকারের একজন মুখপাত্র বলেন, ইন্টারনেটের অপব্যবহার করা হবে না, এমন নিশ্চয়তা পেলেই তা আবার চালু করা হবে।
সরকারি কর্মকর্তারা জানান, জনগণের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করার অধিকার আছে। কিন্তু, এ বিক্ষোভ দেশের নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলছে। তাছাড়া বিক্ষোভ রুখতে সরকার ইতোমধ্যেই দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ভাতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
মার্কিন সরকারের কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণে দীর্ঘ দিন ধরে তেল রফতানি করতে নানা বাধার সম্মুখীন হচ্ছে ইরান। এটিই দেশটির আয়ের অন্যতম উৎস। তেল রফতানিতে ব্যাঘাত ঘটায় সেখানে মূল্যস্ফীতি ও বেকারত্ব বেড়েছে। মান কমেছে রিয়ালের (ইরানি মুদ্রা)।
তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রতিবাদে ১৫ নভেম্বর থেকে ইরানজুড়ে বিক্ষোভে নামে হাজার হাজার মানুষ। বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন এলাকার প্রধান প্রধান সড়কগুলো অবরোধ করে। এছাড়া গ্যাস স্টেশন, ব্যাংক ও সরকারি বিভিন্ন ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৯
এফএম/এইচজে