বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানায়।
খবরে বলা হয়, ইউনিভার্সিটি অব সিডনির পরিবেশবিদরা জানান, দাবানলে সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪৮ কোটি স্তন্যপায়ী, পাখি ও সরীসৃপ মারা গেছে।
দাবানলে পুড়ে ছাই হয়েছে গেছে হাজার হাজার কোয়ালা। বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা এ প্রাণীটির বেশিরভাগই বাস করতো অস্ট্রেলিয়ার বনাঞ্চলে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের মধ্য-দক্ষিণ উপকূলবর্তী অঞ্চলে বসবাসরত প্রায় আট হাজার কোয়ালা মারা গেছে এ দাবানলে, যা এ অঞ্চলের কোয়ালাসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবিতে দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলবর্তী অঞ্চলে দাবানলের লেলিহান শিখা থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে ক্যাঙ্গারুরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য প্রাণী পুড়ে মরে গেছে। কাকাতুয়াসহ অন্য অনেক পাখি মরে গাছের নিচে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
যেসব কৃষক আগুন থেকে বাঁচার জন্য অন্য স্থানে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তারা পরে বাড়ি ফিরে দেখেন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ফসলি জমি, গৃহপালিত ও বন্যপ্রাণী।
পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের পরিবেশবিদ মার্ক গ্রাহাম বলেন, অত্যন্ত গরম ও দ্রুত ছড়িয়ে পড়া এ দাবানলে পুড়ে মরে গেছে অসংখ্য প্রাণী। বিশাল এলাকা এখনো জ্বলছে দাবানলে। এতে সামনের দিনগুলোতে আরও অনেক প্রাণী পুড়ে মরবে। পরবর্তীকালে সম্ভবত ওইসব প্রাণীদের মরদেহও খুঁজে পাওয়া যাবে না।
স্বেচ্ছাসেবী প্রাণী উদ্ধারকর্মী ট্র্যাসি বার্গেস বলেন, প্রত্যাশার চেয়ে খুব কম প্রাণীকে আহতাবস্থায় চিকিৎসার জন্য আনা হচ্ছে, যা বেশ উদ্বেগজনক। আমাদের দুশ্চিন্তার কারণ এটাই যে, হয়তো তারা মরেই গেছে, তাই তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য আনা হচ্ছে না।
ক্রমশ আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার দাবানল। গেলো বছর সবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল জলবায়ু সঙ্কট। প্রাণীদের মৃত্যুর মিছিলে এ সঙ্কট আরও তীব্র রূপ ধারণ করার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশ্বজুড়ে আশঙ্কাজনক হারে মারা যাচ্ছে বন্যপ্রাণীরা। অনেক প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে, অনেকে বিলুপ্তপ্রায়। আমাজন বনে দাবানলে হারানো প্রাণীদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই অস্ট্রেলিয়ার দাবানলে হারিয়ে গেলো প্রায় ৫০ কোটি প্রাণী। নিঃসন্দেহে এ সংখ্যা আরও বাড়বে এবং পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে গোটা বিশ্ব খুব দ্রুত আরও জটিল পরিস্থিতিতে পড়তে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০২০
এফএম