লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চীনের সেনাবাহিনীর মধ্যে সোমবার (১৫ জুন) রাতে প্রাণঘাতী সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন। ভারতের দাবি থেকে জানা গেছে, সেই লড়াইয়ে হাতে তৈরি ওই অস্ত্র ব্যবহার করেছে চীন।
বিবিসি বলছে, প্রাণঘাতী সংঘর্ষে ভারতীয় সেনা মারা যাওয়ার ঘটনায় দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। চীন তাদের পক্ষে কোনো হতাহতের খবর স্বীকার করেনি। সংঘর্ষে প্ররোচনা দেওয়ার জন্য দুই পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করছে।
দুই দেশের মধ্যে সীমান্তের এই এলাকা ভালোভাবে চিহ্নিত নয়। এ উপত্যকার আবহাওয়া অত্যন্ত বৈরী। এর অবস্থান সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক ওপরে। এলাকাটি যে রকম ভূপ্রাকৃতিক পরিবর্তনের ঝুঁকির মুখে থাকে, যা স্পষ্ট সীমানা নির্ধারণ আরও কঠিন করে তোলে।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) ভারত সংঘর্ষে চীন ব্যবহার করেছে বলে যে অস্ত্রের ছবি প্রকাশ করেছে, সেটি দেখা যাচ্ছে লোহার রডের ওপর পেরেক পোঁতা হাতে তৈরি একটি অস্ত্র। ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিবিসির কাছে এই ছবি দিয়ে জানিয়েছেন, চীন গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষে ওই অস্ত্র ব্যবহার করেছে।
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অজয় শুক্লা প্রথম এই ছবি টুইটারে দেন এবং এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহারকে ‘বর্বরতা’ বলে বর্ণনা করেন। ছবিটি ভারতে টুইটারে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীরা তাদের ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন সামাজিক মাধ্যমে। তবে চীনা বা ভারতীয় কর্মকর্তারা এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার বন্ধ করার বিষয়ে চুক্তি হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। সংঘাত যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, তাই দুই দেশের মধ্যে বিরোধপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় গুলিবিনিময় ও বিস্ফোরকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয় ওই চুক্তিতে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, খাড়া পর্বতের প্রায় ১৪ হাজার ফুট (৪,২৬৭ মিটার) উচ্চতায় দুই দেশের সৈন্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে এবং কিছু সৈন্য পা পিছলে খরস্রোতা গালওয়ান নদীতে পড়ে গেছেন, যেখানে তাপমাত্রা ছিল হিমাঙ্কের নিচে।
সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও চীনের মধ্যে বিতর্কিত সীমান্ত এলাকায় ছোটখাটো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও ৪৫ বছরের মধ্যে এই প্রথম দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২০
নিউজ ডেস্ক