ভারতে নিজেদের প্রযুক্তিতে তৈরি তেজস লাইট কমব্যাট এয়ারক্র্যাফটের বরাত দেওয়ার ব্যাপারে সম্প্রতি মন্ত্রিসভায় ছাড়পত্র মিলেছে। যুদ্ধবিমানটি বানাবে হ্যাল।
আর তা কতটা কার্যকরী হবে, সে কথা জানালেন ভারতের বিমান বাহিনীর প্রধান আরকেএস বাদুরিয়া। তিনি বলেছেন, প্রতিপক্ষের যুদ্ধবিমানের চেয়ে ভারতীয় তেজস অনেক বেশি কার্যকরী ও উন্নত।
বালাকোটের মতো হামলার জন্য তেজস বেশি কার্যকরী হবে বলে জানান বিমান বাহিনীর প্রধান। তিনি বলেছেন, শুধু যুদ্ধবিমান নয়, দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র ও অন্যান্য অস্ত্র আরো বেশি ব্যবহার করা হবে।
জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে পাকিস্তান ও চীন যৌথভাবে জেএফ-১৭ থান্ডার বানানোর ব্যাপারে চুক্তিবদ্ধ হয়। আর তা বানানোর খরচ দুই দেশ সমানভাবে দেওয়ার কথা।
সে অনুসারে, অল্প খরচে, অল্প ওজনের এবং সব ধরনের আবহাওয়ার জন্য উপযোগী করে বিমানটি তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। পশ্চিমা এভিয়নিক্স এর সরঞ্জাম, চীনের বিমানের কাঠামো এবং রাশিয়ার ক্লিমোভ আরডি ৯৩ অ্যারো-ইঞ্জিন ব্যবহার করে জেএফ-১৭ বিমান বানানো হয়।
চীনের প্রত্যাশা ছিল এটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন যুদ্ধবিমান হবে। তবে শেষ পর্যন্ত জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানটি অল্প খরচে বানানোর জন্য ভালোমানের হয়নি। অথচ, এই যুদ্ধবিমান ব্যবহারের খরচ আধুনিক বিমানের তুলনায় অনেক বেশি।
জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান তৈরিতে পাকিস্তানের অ্যারোনটিক্যাল কমপ্লেক্স (পিএসি) এর ৫৮ শতাংশ অংশ নেওয়ার কথা, তবে বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। বিমান তৈরির কাঁচামাল থেকে শুরু করে নির্মাণ সামগ্রী চীন থেকে আমদানি করে পাকিস্তান।
এর মধ্যে কেবল বিমানের পাখা, সামনের অংশের কাঠামো এবং লেজ তৈরি করে পিএসি, তার পরেও এগুলোর কাঁচামাল আসে চীন থেকে। আর পুরো বিমানটির বেশিরভাগ অংশ চীনের, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইউরোপ এবং ব্রিটেন থেকে আসে। পিএসি'তে বিমানটির অবয়ব দেওয়া হলেও এর বেশিরভাগ অংশই তৈরি হয়ে আসে চীনের সিএআইসি থেকে।
২০০৯ সালে কার্যক্রম শুরু করে ১১৫টির বেশি বিমান এরই মধ্যে তৈরি করেছে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সে দেশের বিমান বাহিনীতে দুই আসনের প্রশিক্ষণ বিমানও নির্মাণ করে যুক্ত করা হয়েছে। সেসব বিমান সেবা দেওয়ার ব্যাপারে অনুপযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও আনুষ্ঠানিকতা বজায় রাখতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করা হয়েছিল। তাদের বিমানের যন্ত্রাংশ উন্নয়নের কার্যক্রম এখনো অব্যাহত রয়েছে।
এমনকি জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানের দক্ষতা ভারতের বিমানবাহিনীর মিরাজ-২০০০ এবং সু-৩০ এর চেয়েও কম। ২০১৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের জঙ্গীদের ওপর আক্রমণের সময় বিষয়টি জানা যায়। জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানের সহনশীলতা কম, নির্ভুল হওয়ার ক্ষমতা কম এবং এটি বেশি অস্ত্র পরিবহন করতে পারে না। ভারতের যোদ্ধাদের আক্রমণের মুখে এটি লক্ষ্য ঠিক করতেই পারেনি।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২১
নিউজ ডেস্ক