‘আমলাতন্ত্র’ অতি পরিচিত একটি শব্দ। একটি গণতান্ত্রিক দেশের নাগরিকদের হরহামেশাই এই শব্দটি শুনতে হয়।
ব্রিটিশ আমল থেকেই আমলাতন্ত্র ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করে রেখেছে উপমহাদেশে। ভারতে এই আমলাতন্ত্রের প্রভাব ছিল আরও ভয়াবহ।
দেশটির আমলাতন্ত্রের কিছু চিত্র উঠে এসেছে ভারতের সাবেক প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ও বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসুর বয়ানে।
তার লেখা ‘পলিসিমেকারস জার্নাল: ফ্রম নিউ দিল্লি টু ওয়াশিংটন ডিসি’ বইটিতে তিনি এসব বিষয় তুলে ধরেছেন। খবর বিবিসির।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় আমলারা একসময় সাদা অ্যাম্বাসেডর গাড়ির ওপর লাল বাতি জ্বালিয়ে চলাফেরা করতেন। সময়ের সঙ্গে সে প্রথা উঠে গেছে। তবে এখনো তাদের তোয়ালেঢাকা চেয়ারে বসতে দেখা যায়। সময় বদলেছে, বদলেছে কাজের ধরন। তবে ভারতীয় আমলাতন্ত্রে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা টিকে রয়েছে। এর মধ্যে এমন একটি প্রথা রয়েছে তা হল অত্যধিক ‘স্যার’ বলা। একবা দুবার নয়, মিনিটে ১৬ বারও স্যার বলেন ভারতের একজন আমলা।
কৌশিক বসু বলেন, ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তারা ‘স্যার’ ডাক ভীষণ পছন্দ করেন। বলতে, শুনতে- উভয়ক্ষেত্রেই। তাই অধস্তনরা কথায় কথায় ঊর্ধ্বতনদের স্যার ডাকেন। তাই বলে কয়বার? একবার, দুবার, তিনবার। না, তা নয়।
তিনি বলেন, ভারতে মিনিটে গড়ে ১৬ বার স্যার শোনার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। একটি সরকারি বৈঠকে তিনি ইচ্ছা করে গুনেছিলেন। ওই বৈঠকে একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। একজন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা সেখানে প্রতি মিনিটে গড়ে ১৬ বার স্যার শব্দ উচ্চারণ করেছেন।
এ বিষয়ে কৌশিক বসু বইয়ে লিখেছেন, একবার স্যার শব্দ বলতে যদি আধা সেকেন্ড সময় লাগে, তাহলে ভারতীয় আমলারা তাদের কথা বলার মোট সময়ের ১৩ শতাংশই স্যার শব্দ ব্যবহার করতে ব্যয় করেন।