ছোট-বড় সব বয়সের মানুষেরই পিকনিক করতে মজা লাগে। ঘাসের ওপর চাদর বিছিয়ে সবাই মিলে খাবার খাওয়ার আনন্দই আলাদা।
সুইজারল্যান্ডের দুই শিল্পী বিশাল চাদর তৈরি করে গোটা শহরের মানুষকে নিয়ে ‘বিগনিক’-এর মজা নিচ্ছেন।
ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশাল এক পিকনিকের চাদর তৈরি করা হয়েছে। ‘বিগনিক’ নামের প্রকল্পের আওতায় সুইজারল্যান্ডের উত্তর-পূর্বে সেন্ট গালেন জেলায় মানুষের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সুইস কনসেপ্ট আর্টিস্ট হিসেবে ফ্রাংক ও পাট্রিক রিকলিন নামের দুই যমজ ভাইয়ের মাথায় এই আইডিয়া এসেছিল।
প্রকল্পের প্রেরণার উৎস ব্যাখ্যা করে ফ্রাংক বলেন, আসলে দাদি আমাদের এমন পিকনিকের প্রেরণা দিয়েছিলেন। তিনি সবসময় লাল-সাদা নকশার চেকার্ড টেবিলক্লথের ওপর রাতের খাবার পরিবেশন করতেন। আমাদের সেটা খুব ভালো লাগত। গত ১০ বছর ধরে সেই টেবিলক্লথের নতুন রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছি এবং প্রকৃতির কোলে, শহরের মাঝে পেতে দিচ্ছি।
পাট্রিক রিকলিন বলেন, বিশেষ করে ‘বিগনিক’ প্রকল্পের প্রেক্ষাপটে আমরা সচেতনভাবে সীমা ভাঙতে চাই। শুধু দুটি গ্রীষ্মে নয়, দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে এই উদ্যোগ চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
এত চাদর জোগাড় করতে দুই শিল্পী প্রায়ই স্থানীয় মানুষের বাসায় বেল বাজান। প্রায় সব সময়েই ভাগ্য ভালো থাকে, সবাই তাদের ভিতরে আসতে বলেন। এখন পর্যন্ত তারা প্রায় ৩ হাজার চাদর সংগ্রহ করেছেন। প্রতি বছর সেই সংখ্যা বেড়ে চলেছে।
স্কুল, স্টেশন এবং পথচারীদের জন্য নির্দিষ্ট এলাকায় সেই সব চাদর সেলাই করে জোড়া দেওয়া হয়। কেউ কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেই কাজে হাত লাগান, বাকিরা পেশাদার দরজি। চারটি করে চাদর জুড়ে দুই দিকেই এক মিটার চল্লিশ সেন্টিমিটার মাপের বড় মডিউল তৈরি করা হয়। তারপর প্রতিটি কোণে আঠালো ভেলক্রো স্ট্রিপ লাগানো হয়।
এভাবে সব টুকরো জুড়ে বিশাল অতিকায় এক চাদর সৃষ্টি হয়। সেই কর্মযজ্ঞের আওতায় স্থানীয় মানুষও পরস্পরের সান্নিধ্যে আসেন।
ফ্রাংক বলেন, নতুন এক সামাজিক ঐতিহ্য সৃষ্টি করাই বিগনিকের লক্ষ্য। কোনো এক সময় এই সৃষ্টিকর্ম সাংস্কৃতিক মূলধন হিসেবে স্বীকৃতি পাবে বলে আমরা নিশ্চিত।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০২১
জেএইচটি