দুনিয়াতে অনেক নারীই রয়েছেন বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন দীর্ঘ দিন হয়েছে, কিন্তু এখনও তারা গর্ভধারণের স্বাদ পাননি। এজন্য তাদের কুট কথাও হজম করতে হয় প্রতিনিয়ত।
পোল্যান্ড হলো পৃথিবীতে উর্বরতার হার নিম্নতম দেশগুলোর মধ্যে একটি। পোল্যান্ডে যেসব নারীরা মা হতে পারেন না, তারা বিকল্প এক পদ্ধতি বেছে নিয়েছেন। নারীরা বাস্তবে সন্তানের মা হতে না পারলেও ফেক বেবি পুতুলকে কিনে নিয়ে সন্তানের মতন দেখভাল করে থাকেন। বিষয়টি শুনতে উদ্ভট লাগেও তা সত্য। আসলে পুতুল শিশুদের দায়িত্ব নেওয়ার পর অনেক নারী উপকৃত হয়েছেন বলেও জানান এসব মায়েরা। এ ধরনের পুতুল শিশুকে বলা হয় ‘রিবর্ন ডল’। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
এসব নকল পুতুল শিশুকে এমন নিখুঁতভাবে বানানো হয়েছে যে, তা দেখতে হুবহু সত্যিকারের একটি নবজাতকের মতই। ওই দেশের নারীরা পুতুল শিশু কিনে তা সন্তানের মতন যত্ন করে থাকেন। তারা আবার পুতুল শিশুর জন্মদিন উপলক্ষে অনুষ্ঠানও করেন। অনেক পুতুলের আবার হৃদস্পন্দনও থাকে। পুতুল শিশুদের দায়িত্ব নেওয়ার পর অনেক নারী উপকৃত হয়েছেন বলেও জানান এসব মায়েরা। যা শুনে অনেকেই বিস্মিত। এসব পুতুলগুলোর দাম প্রায় ২০ থেকে ২২ হাজার ডলার। যেসব নারীদের জীবনে বন্ধ্যাত্ব, মিসক্যারেজ বা সন্তানের মৃত্যুর মত ঘটনা ঘটছে, তাদের বিষণ্ণতা দূর করার ক্ষেত্রে চিকিৎসারের মত অনুযায়ী করা হয়েছে এসব নকল শিশু পুতুল।
পোলিশ শিল্পী বারবারা স্মলিনস্কা এ ধরনের পুতুল বানিয়ে থাকেন। এ বছর বিবিসির ‘শত নারী' তালিকায় স্থান পেয়েছেন তিনি।
স্মলিনস্কা বলেন, ‘এসব শিশুপুতুলগুলো ভিনাইল দিয়ে তৈরি করা হয়। যা খুবই সুক্ষ্ম’। এসব পুতুল শিশু বানানোর কাজ শুরু করেন ১৯৯০ সালের দিকে। অনেক নারীই মানসিকভাবে সুস্থ হতে এই পুতুল শিশু থেরাপি হিসেবে ব্যবহার করেন।
ওলগা নামে আরেক নারী বলেন, আমি একজন কপিরাইটার ও শিক্ষিকা। একটি পুতুল সন্তানের মা। গর্ভধারণের ছয় সপ্তাহ পর আমার মিসক্যারেজ হয়। আমি এর ধকল সামলাতে পারিনি বলে নকল শিশু নিয়েছি। মনোচিকিৎসকের কাছেও গিয়েছিলাম। বিভিন্ন ওষুধ খেয়েছি, তবুও কাজ হচ্ছিল না। যখনই এটা নিলাম, তখন যে কি আনন্দ হয়েছে, তা বোঝাতে পারবো না। একেবারেই হুবহু সত্যিকারের নবজাতকের মতোই দেখতে পুতুল শিশুগুলো।
তিনি আরও বলেন, পুতুল নবজাতকটিকে পেয়ে আমি সত্যিই মানসিকভাবে অনেকটাই শক্ত। পরে তা আরেক নারীর উপকারের বিক্রি করে দিয়েছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২১
এএটি