তুষারে ঢেকে যাওয়া ইউক্রেনের তাপমাত্রা এখন শূন্য দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতে মানুষরা কাঁপলেও ইউরোপের দেশটি নিয়ে বিশ্ব রাজনীতির মাঠ চরম উত্তপ্ত।
ইউক্রেন ইস্যুতে যখন পশ্চিমা বিশ্বের মুখোমুখি রাশিয়া, তখন ‘আতঙ্ক’ সৃষ্টি না করতে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানালেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, সীমান্তে রাশিয়ার সৈন্য মোতায়েন এখন বড় সমস্যা নয়। ইউক্রেনের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হলো, দেশের ‘অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির অস্থিতিশীলতা’।
৩০ বছর আগে স্বাধীনতা পাওয়া ইউক্রেন জনগণের বিশাল একটা অংশ রুশ ভাষাভাষী, তারা জাতিগতভাবেও রুশ। রাশিয়ার সঙ্গে তাদের রয়েছে ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক ও সামাজিক যোগাযোগ।
তাই ইউক্রেনের একটি অংশ চায়, দেশটি রাশিয়ার বলয়ে থাকুক। আরেকটি অংশের দাবি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর সঙ্গী হয়ে এককভাবে এগিয়ে যাক।
এমন পরিস্থিতিতেই ২০১৪ সালের শুরুতে পূর্ব ইউক্রেনে সংঘাতের সূচনা। পরে তা অচলাবস্থায় রূপ নেয়। তবে ২০২১ সালের বসন্তে সহিংসতা বৃদ্ধি পায়, এখনো সেখানে নিয়মিত গোলাগুলি ও সংঘর্ষ ঘটে।
২০২১ সালের অক্টোবরে রাশিয়া ইউক্রেন সীমান্তের কাছে সৈন্য এবং সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করে। এটা দেখেই পশ্চিমারা মনে করে, ইউক্রেন আক্রমণের পরিকল্পনা করছে রাশিয়া। যদিও সেই দাবি সঠিক নয় বলে জানায় রাশিয়া।
স্যাটেলাইটের ছবি, নভেম্বর ও ডিসেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, বর্ম, ক্ষেপণাস্ত্র এবং ভারী অস্ত্র ইউক্রেন সীমান্তের পাশে জড়ো করা হচ্ছে। কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা ছাড়াই রাশিয়া এই কাজটি করছে।
ডিসেম্বরের মধ্যে এক লাখের বেশি সৈন্য ইউক্রেন সীমান্তের কাছাকাছি নিয়ে এসেছে রাশিয়া। মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এ বিষয়ে সতর্ক করে বলেছে, রাশিয়া ২০২২ সালের প্রথম দিকে ইউক্রেন আক্রমণের পরিকল্পনা করছে।
২০২১ সালের ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি জানায়, ইউক্রেন যেন ন্যাটো জোটে প্রবেশ করতে না পারে। একই সঙ্গে পূর্ব ইউরোপে ন্যাটো সৈন্য এবং সামরিক সরঞ্জাম যেন কমানো হয়।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো মিত্ররা এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। একই সঙ্গে রাশিয়াকে সতর্কবার্তা দিয়ে তারা বলেছে, ইউক্রেন আক্রমণ করলে তারা বসে থাকবে না। অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথাও বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে ইউক্রেনে অস্ত্র সহায়তা পাঠানো হচ্ছে। পাশের দেশে জড়ো করা হচ্ছে সৈন্য।
ইউক্রেন নিয়ে জাতিসংঘে বৈঠক ডেকেছে যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেন সংকট নিয়ে আলোচনার জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি উন্মুক্ত বৈঠক ডেকেছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার (৩১ জানুয়ারি) এ বৈঠক হতে পারে। এরই মধ্যে ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার আচরণকে হুমকিমূলক বলে অবিহিত করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড।
এদিকে, সংকট কাটাতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলার ঘোষণা দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। রাশিয়াকে পিছু হটার প্রয়োজনীয়তা এবং কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়ে নিতে তাদের মধ্যে কথা হতে পারে।
রাশিয়া-ইউক্রেন বৈঠকের পর যুদ্ধরিবতি
পরিস্থিতির মধ্যে বুধবার (২৬ জানুয়ারি) ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে আলোচনায় বসে রাশিয়া ও ইউক্রেনের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল। সেই বৈঠকে ছিলেন ফ্রান্স ও জার্মান প্রতিনিধিরাও। প্রায় ৮ ঘণ্টা ধরে চলা ওই বৈঠকের পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে দেশ দুটি।
ফিরে দেখা
ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচকে রুশপন্থি হিসেবে মনে করা হয়। তবে তিনি মস্কোর সঙ্গে থাকার পাশাপাশি পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গেও সখ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে এক বিশাল বাণিজ্য চুক্তি করতে যাচ্ছিলেন, তখন এর চরম বিরোধীতা করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কেননা এই চুক্তি ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ পেতে কয়েক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেত।
ওই সময় প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনের ওপর চাপ বাড়াতে শুরু করেন। সেই চাপে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বৃহত্তর অর্থনৈতিক চুক্তিটি প্রত্যাখ্যান করেন ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ। তার এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের নভেম্বরে রাজধানী কিয়েভে বিক্ষোভের মাধ্যমে ইউক্রেনের সংকট শুরু হয়।
সেই বিক্ষোভে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দমননীতির পরও বিক্ষোভ বাড়তে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ।
ক্রিমিয়া কেন দখলে নিল রাশিয়া
ওই ঘটনার পরের মাসেই ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চল দখলে নেয় রাশিয়া। ক্রিমিয়া অঞ্চলটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশ রাশিয়ার কেন দখলে নিতে হলো, এমন প্রশ্ন উঠতেই পারে। এর পেছনে রয়েছে বেশ কিছু কারণ।
এই অঞ্চলটির প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ জাতিগতভাবে রুশ। ১৯৫৪ সালে সোভিয়েত নেতা নিকিতা ক্রুশ্চেভ এটি হস্তান্তর করেন তৎকালীন সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র ইউক্রেনের কাছে। কিন্তু ১৯৯১ সালে ইউক্রেন স্বাধীনের পর ক্রিমিয়া হাতছাড়া হয়ে যায় রাশিয়ার।
ব্রিটেনের চেয়ে প্রায় ৭০ গুণ বড় রাশিয়া সারা বছর সচল রাখার মতো উষ্ণ পানির গুরুত্বপূর্ণ বন্দর প্রায় নেই বললেই চলে। ক্রিমিয়াই ছিল সেই একমাত্র জায়গা। ক্রিমিয়ার সেভাস্তাপোলে নৌঘাঁটি কৌশলগত কারণে তাই রাশিয়ার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাল্টিক সাগরে প্রবেশের জন্য রাশিয়ার পথ হচ্ছে এই বন্দর।
তাই অঞ্চলটি দখলের পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেন, তিনি ক্রিমিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ান নাগরিক এবং রুশ ভাষাভাষীদের অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয় সবকিছু করবেন।
জাতিগত সংকট বাড়ল যেভাবে
ক্রিমিয়া দখলের পর ইউক্রেনে জাতিগত সংকট বাড়তে থাকে। এর দুই মাস পরে পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল রাশিয়াপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ইউক্রেন থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করার জন্য একটি গণভোট আয়োজন করে।
পূর্ব ইউক্রেনে রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনী এবং ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সহিংসতা হয়। জানা যায়, ২০১৪ সালের এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত সেখানে অন্তত ১০ হাজার ৩০০ জন নিহত হয়েছেন এবং ২৪ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।
বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়তাসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছে রাশিয়া।
ইউক্রেনে আন্তর্জাতিক সংকটের শুরু
২০১৪ সালের জুলাইয়ে একটি ঘটনার মধ্য দিয়ে ইউক্রেন আন্তর্জাতিকভাবে চরম সংকটে পড়ে। তখন ইউক্রেনের আকাশসীমায় মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটকে গুলি করা হয়। এতে অন্তত ২৯৮ জন নিহত হন। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও রাশিয়ার মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি হয়। এর পেছনে জড়িত কে, সেটা নিয়ে শুরু হয় তদন্ত।
২০১৫ সালের অক্টোবরে ডাচ বিমান দুর্ঘটনা তদন্তকারীরা এই সিদ্ধান্তে আসে যে, বিমানটি একটি রাশিয়ান-নির্মিত সারফেস টু এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ভূপাতিত হয়েছিল। পরের বছর সেপ্টেম্বরে তদন্তকারীরা জানায়, ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাটি রাশিয়া সরবরাহ করেছিল, এটি পূর্ব ইউক্রেনে স্থানান্তরিত হয়েছিল এবং বিমানটি ভূপাতিত করে আবার রাশিয়ার ভূখণ্ডে ফিরে যায়।
ইউক্রেনে সহিংসতা বন্ধের উদ্যোগ ব্যর্থ
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও ইউক্রেন মিনস্ক চুক্তির মাধ্যমে সহিংসতা বন্ধ করার চেষ্টা শুরু করে। চুক্তিতে যুদ্ধবিরতি, ভারী অস্ত্র প্রত্যাহার এবং বিরোধপূর্ণ অঞ্চলজুড়ে ইউক্রেনীয় সরকারের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের বিধান রাখা হয়। তবে একটি কূটনৈতিক মীমাংসা এবং সন্তোষজনক সমাধানে পৌঁছানোর সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
২০১৬ সালের এপ্রিলে সামরিক জোট ন্যাটো ঘোষণা করে, জোটটি পূর্ব ইউরোপে চারটি ব্যাটালিয়ন মোতায়েন করবে। এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও পোল্যান্ডের মধ্য দিয়ে সৈন্য যাবে ইউরোপের অন্য কোথাও, বিশেষ করে বাল্টিক অঞ্চলে সম্ভাব্য রাশিয়ান আগ্রাসন ঠেকাতে।
এই ব্যাটালিয়ন দুটি মার্কিন সেনাবাহিনীর ট্যাঙ্ক ব্রিগেডের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে জোটের প্রতিরোধ ব্যবস্থা বাড়াতে পোল্যান্ডে মোতায়েন করা হয়েছিল।
ইউক্রেনে একের পর এক সাইবার হামলা
২০১৪ সালে সংঘাত শুরুর পর থেকে ইউক্রেনে বেশ কয়েকটি সাইবার হামলা হয়। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর এক সাইবার আক্রমণে ইউক্রেনজুড়ে অন্তত ২ লাখ ২৫ হাজার মানুষ ক্ষমতা হারায় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে রাজধানী কিয়েভের কিছু অংশে ইউক্রেনীয় ইউটিলিটি কোম্পানি লক্ষ্য করে একই ধরনের সাইবার আক্রমণে আরেকটি পাওয়ার ব্ল্যাকআউটের সম্মুখীন হয়।
২০১৭ সালের জুনে ইউক্রেনের সরকারি এবং ব্যবসায়িক কম্পিউটার সিস্টেমগুলো আরেকটি সাইবার হামলার শিকার হয়েছিল। বিশ্বব্যাপী কম্পিউটার সিস্টেমেও আঘাত হানে এই সাইবার হামলা। এতে বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়। এসব সাইবার হামলায় রাশিয়াকে দায়ী করা হয়।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নানা উদ্যোগ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সময় ইউক্রেনের নিরাপত্তা সহায়তা বাড়ানো হয়। একই সঙ্গে পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ ঠেকাতে ক্রমাগত চাপ দেওয়া হয়।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ২১ জনের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেয়। যার মধ্যে বেশ কয়েকজন রাশিয়ান কর্মকর্তা এবং ৯টি কোম্পানি ছিল। তারা ওই সংঘর্ষে জড়িত ছিল বলে জানায় মার্কিন দপ্তর।
একই বছরের মার্চে স্টেট ডিপার্টমেন্ট ইউক্রেনের কাছে অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দেয়। এর মাধ্যমে ইউক্রেনে সংঘাত শুরুর পর ২০১৮ সালের অক্টোবরে প্রথম ‘ইথাল অস্ত্র’ বিক্রি করা হয়।
একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোটের বিমান অনুশীলনে যুক্ত হয় ইউক্রেন। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার বার্ষিক সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত হওয়ার পরই ওই মহড়া শুরু হয়েছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পর এটি ছিল সবচেয়ে বড় মহড়া।
যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া সম্পর্কের অবনতি
বিশ্বের চির শত্রু রাষ্ট্রগুলোর অন্যতম যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। ইউক্রেন ইস্যুতে চলমান সংঘাত মার্কিন-রাশিয়া সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। এখন ন্যাটো জোটে ইউক্রেন প্রবেশের বিষয়ে রাশিয়ার সৈন্য সমাগম এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরোধের ঘোষণা চলমান সংকট বাড়িয়েছে।
ইউক্রেনের পাশে রাশিয়ার এত বিশাল সৈন্য মোতায়েনের পেছনে পূর্ব ইউরোপ নিয়ে তাদের নতুন কোনো পরিকল্পনা আছে কি না, সেটা নিয়েও ভাবছে পশ্চিমা বিশ্ব। তাই চলমান এই দ্বন্দ্বটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের উত্তেজনাকে বাড়িয়ে তুলেছে।
একইভাবে রাশিয়ার উদ্বেগের কারণ হলো, তার পাশের দেশগুলোর ন্যাটো জোট ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদান। রাশিয়ার পাশের দেশ ইউক্রেন ও বেলারুশ ব্যতীত ইউরোপের প্রায় সব দেশ এখন ন্যাটো জোটে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, লাটভিয়া, লিথুনিয়া, পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র, স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরি।
তাই রাশিয়া কখনই চায় না নতুন করে আর কোনো দেশ ন্যাটো জোটে যোগ দিক। কেননা রাশিয়ার ধারণা, ন্যাটো জোট এভাবে তাকে ঘিরে ফেলছে।
আঞ্চলিক এই বিবাদের বাইরেও বিশ্বের ক্ষমতাধর বিভিন্ন দেশ নিজস্বতা টিকিয়ে রাখতে ইউক্রেন ইস্যুতে তাদের ক্ষমতা দেখাতে চাইছে। আফগানিস্তানে সৈন্য প্রত্যাহার-পরবর্তী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পরাজয়, আঙ্গেলা মেরকেল পরবর্তী জার্মানি, ব্রেক্সিট-পরবর্তী ব্রিটেন এবং বসন্তে প্রাক-নির্বাচনের সামনে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এসব কিছু নিয়ে নতুন সমীকরণে বিশ্ব।
সূত্র: বিবিসি, গার্ডিয়ান, আল-জাজিরা ও গ্লোবাল কনফ্লিক ট্র্যাকার
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২২
জেএইচটি/এজে