করোনা ভাইরাস, ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলা—একের পর এক সংকটে জর্জরিত জার্মানি। এর ফলে মূল্যবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি ও নানা অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে।
এবার সাধারণ মানুষের এই দুর্দশা কিছুটা হলেও কমাতে পদক্ষেপ নিচ্ছে জার্মান জোট সরকার। প্রায় ১০ ঘণ্টা আলোচনার পর বৃহস্পতিবার এমনই কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। এর আওতায় আপাতত ৯০ দিনের জন্য বেশ কিছু ছাড় ঘোষণা করা হয়েছে।
ডিজেল-পেট্রোলের আকাশছোঁয়া মূল্যে রাশ টানতে জার্মান সরকার সাময়িক ভর্তুকি দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক্ষেত্রে পেট্রোলে লিটার প্রতি ৩০ সেন্ট এবং ডিজেলে লিটার প্রতি ১৪ সেন্ট কম গুণতে হবে। সেই সঙ্গে তিন মাস ধরে মাসে মাত্র নয় ইউরো মূল্যে ব্যবহার করা যাবে বাস-ট্রাম। দেশের সব গণপরিবহণ নেটওয়ার্কে সেই সুযোগ চালু করা হচ্ছে।
এমন ছাড়ের পাশাপাশি জনসংখ্যার নির্দিষ্ট কিছু অংশের জন্যও বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সরকার।
যেমন, জ্বালানির বাড়তি মূল্যের ধাক্কা সামাল দিতে আয়করদাতারা এককালীন ৩০০ ইউরো পর্যন্ত হাতে পাবেন। তবে বেশি আয়ের মানুষের ক্ষেত্রে কম হবে সেই ছাড়ের মাত্রা। সন্তানপ্রতি ১০০ ইউরো বাড়তি ভাতাও দেওয়া হবে। এমনকি স্বল্প আয়ের পরিবারগুলোর জন্যও ভর্তুকির ঘোষণা করেছে জার্মান সরকার।
এদিকে সরকারের এই ঘোষণার ফলে দেখা যাচ্ছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। একদল এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। অন্যদিকে সেই ভর্তুকি দিতে গিয়ে সরকারি কোষাগারে বিশাল ধাক্কা সম্পর্কেও সতর্ক করে দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করছেন ইউক্রেন সংকট দীর্ঘায়িত হলে তিন মাস পরে আরো ভর্তুকির প্রয়োজন হতে পারে।
আবার সাধারণ মানুযের পাশাপাশি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এখনো কোনো ছাড়ের ঘোষণা না করায় ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে।
জার্মান অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার জানিয়েছেন, সদ্য ঘোষিত পদক্ষেপগুলোর আর্থিক মূল্য নিশ্চিতভাবে বলা না গেলেও প্রায় এক হাজার ৩০০ কোটি ইউরো ব্যয় হতে পারে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তিনি ২০২২ সালের জন্য বাড়তি বাজেট পেশ করবেন বলে জানিয়েছেন। সবুজ দলের নেতা রিকার্ডা লাং বলেন, এর আগে জার্মানিতে এত সস্তায় বাস, ট্রাম বা ট্রেনে ভ্রমণ করা সম্ভব হয়নি।
সূত্র: ডয়চে ভেলে
বাংলাদেশ সময় ১৬৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২২
এনএসআর