চরম অর্থনৈতিক সংকটে ভুগতে থাকা দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপ দেশ শ্রীলঙ্কায় প্রধানমন্ত্রী ছাড়া বাকি ২৬ মন্ত্রী একযোগে পদত্যাগ করেছেন। রোববার (৩ এপ্রিল) রাতে এক বৈঠকের পর তারা প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
দেশটির শিক্ষামন্ত্রী দীনেশ গুণবর্ধন সংবাদমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। খবর বিবিসি।
পদত্যাগকারীদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে নমাল রাজাপক্ষেও আছেন। এক টুইট বার্তায় তিনি আশা প্রকাশ করছেন, এটি জনগণ ও সরকারের জন্য স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিতে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে সহায়তা করবে।
এর আগে দেশের চলমান অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবিলায় সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভেযোগ এনে গত বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) মধ্যরাতে রাজধানী কলম্বোয় প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন কয়েক শ মানুষ। এক পর্যায়ে তারা প্রেসিডেন্টের বাসভবনেও ঢোকার চেষ্টা করেন। তবে নিরাপত্তারক্ষীরা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এছাড়া সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ঠেকাতে শ্রীলঙ্কায় শনিবার (২ এপ্রিল) থেকে ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ চলছে। যা সোমবার (৪ এপ্রিল) সকালে শেষ হয়েছে।
উল্লেখ্য, বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে জ্বালানির ঘাটতি দেখা দেওয়ায় দেশটিতে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে দৈনিক ১০-১২ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দ্বীপরাষ্ট্রটির প্রশাসন। এ বছর শুরু থেকেই দেশটির মানুষ ৯২ শতাংশ পেট্রোল ও ৭৬ শতাংশ ডিজেল বেশি দাম দিয়ে কিনেছে। কিন্তু, দেশটিতে এখন তেল ও কয়লার ঘাটতি দেখা দিয়েছে। আর্থিক সংকট থাকায় এ দুটি জ্বালানি আমদানি করতে পারছে না দেশটির সরকার।
১৯৪৮ সালে ব্রিটিশদের থেকে স্বাধীনতা লাভের পর অর্থনীতিতে কখনও খারাপ হয়নি দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটির। গৃহযুদ্ধের সময় অত্যাধিক সামরিকখাতে ব্যয় শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিকে চাপে ফেলেছিল। করোনা পরিস্থিতির কারণে পর্যটন শিল্প প্রায় স্থবির হয়ে যায়। যার প্রভাব পড়েছে বিদেশ থেকে আসা আয়ের ওপর। এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসার উপায় খুঁজছে লঙ্কান সরকার ।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৮ ঘণ্টা, ৪ এপ্রিল, ২০২২
এমএমজেড