ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

এথেন্সে দুই শতাব্দী পর প্রথমবারের মতো মসজিদ নির্মিত হচ্ছে

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৭
এথেন্সে দুই শতাব্দী পর প্রথমবারের মতো মসজিদ নির্মিত হচ্ছে গ্রিসের রাজধানীর কেন্দ্রস্থলের নিকটবর্তী সাবেক নৌ ঘাঁটি ভোটানিকোসে নির্মিত মসজিদে চলতি বছরের এপ্রিল মাস নাগাদ নামাজ শুরু হবে

গ্রিসকে বলা হয় ইউরোপের প্রবেশ দ্বার। ইউরোপের অভিবাসীদের শতকরা ৮০ ভাগ গ্রিস দিয়ে প্রবেশ করেন এবং তাদের অনেকেই মুসলমান। গ্রিসের রাজধানী এথেন্স।

ইউরোপের অন্যসব দেশের রাজধানীতে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদযাপনের জন্য মসজিদ অথবা ইবাদতের নির্দিষ্ট স্থান থাকলেও গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে মুসলমানদের ইবাদত-বন্দেগির জন্য কোনো মসজিদ নেই।  

কোনো মসজিদ না থাকায় সেখানকার মুসলমানরা নামাজ ও অন্যান্য সম্মিলিত ইবাদত-বন্দেগি বিভিন্ন পরিত্যক্ত ভবনে সম্পন্ন করেন।

এথেন্সজুড়ে প্রায় একশ’রও বেশি এমন অস্থায়ী নামাজের জায়গা রয়েছে। এসব ঘর সম্পূর্ণভাবে জানালাবিহীন ও বায়ুহীন।

সেই এথেন্সে প্রায় দুই শতাব্দী পর প্রথমবারের মতো সরকারি উদ্যোগে একটি মসজিদ নির্মিত হচ্ছে। চলতি বছরের এপ্রিল মাস নাগাদ এ মসজিদের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে এবং মসজিদের নামাজ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) গ্রিসের দৈনিক ‘কাথিমেরিনি’ (Kathimerini) এ খবর জানিয়েছে।

মসজিদটি গ্রিসের রাজধানীর কেন্দ্রস্থলের নিকটবর্তী সাবেক নৌ ঘাঁটি ভোটানিকোসে নির্মিত হচ্ছে। যদিও মুসলমানদের দাবী ছিলো- রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে মসজিদ নির্মাণের।  

গ্রিসের জিসটারাকিস মসজিদ।  মুসলিম শাসনের অবসান ঘটলে মসজিদটিকে কারাগার এবং লোকশিল্প যাদুঘরে রূপান্তর করা হয়
মসজিদটি নির্মাণের জন্য ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে দেশটির পার্লামেন্টে একটি বিল পাস করা হয়।  

এর আগে উনিশ শতাব্দীতে সরকারি উদ্যোগে একটি মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হলেও কিছু স্বঘোষিত গ্রিক ‘দেশপ্রেমিক’ কর্তৃক মসজিদ নির্মাণের স্থানটি দখল করে নিলে মসজিদের নির্মাণ স্থগিত হয়ে যায়।

পরে দীর্ঘ দেন-দরবারের পর দেশটির পুলিশের মধ্যস্থতায় দখলদারিত্বের অবসান ঘটিয়ে ফের মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। খুব দ্রুতগতিতে চলছে মসজিদের নির্মাণ কাজ।  

নির্মিত মসজিদের কোনো মিনার থাকবে না। দু’টি ব্লকে বিভক্ত মসজিদটিতে একসঙ্গে ৩৫০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। মসজিদ কমপ্লেক্সের পাশে পার্কিং, কনফারেন্স রুম, বাচ্চাদের খেলাধুলার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

গ্রিসের জেনারেল অ্যাকাউন্টিং অফিস জানায়, মসজিদটি নির্মাণের প্রায় ১ মিলিয়ন ইউরো খরচ হবে এবং গ্রিক সরকার এর যাবতীয় খরচ বহন করবে।

উল্লেখ্য যে, ওসমানি শাসন অবসানের পর অর্থোডক্স চার্চ গ্রিসের ধর্মীয় কর্তৃত্ব পায়। সে সময় মসজিদসহ মুসলিম যুগের অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনা ও চিহ্ন নিশ্চিহ্ন করা দেওয়া হয়।

এথেন্সে ওসমানি যুগের শেষ কয়েকটি স্থাপনার অন্যতম হলো- জিসটারাকিস মসজিদ। মুসলিম শাসনের অবসান ঘটলে ঐতিহাসিক এ মসজিদকে কারাগার এবং লোকশিল্প যাদুঘরে রূপান্তর করা হয়।  

গ্রিসে ১৮২৯ সালে ওসমানি শাসন অবসানের পর থেকে এথেন্সে আর মসজিদ তৈরি করা হয়নি।

ওসমানি সাম্রাজ্যের রাষ্ট্রীয় ধর্ম ছিল ইসলাম। অনুমান করা হয় গ্রিসে ১০ লাখের মতো মুসলমান বসবাস করেন। তন্মধ্যে এথেন্সেই রয়েছে ২ লাখ মুসলমানের বাস।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।