ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

ইন্দোনেশিয়া থেকে সাইকেল চালিয়ে ওমরা পালন

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮
ইন্দোনেশিয়া থেকে সাইকেল চালিয়ে ওমরা পালন ইন্দোনেশিয়ান এক দম্পতি সাইকেলে চড়ে এক বছরে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে উমরা পালন করছেন

মানুষ তার স্বপ্নপূরণে অনেক কিছুই করে থাকে। সাধারণ চোখে যেটা অসম্ভব মনে হয়, সেটা সাধনার কাছে অনেকটাই তুচ্ছ। ইন্দোনেশিয়ান এক দম্পতি এমনই এক অসাধ্য কাজ করে খবরের শিরোনাম হলেন।

তারা দীর্ঘ এক বছর ধরে সাইকেল চালিয়ে পবিত্র ওমরা আদায় করলেন। সম্প্রতি সৌদি গেজেট তাদের নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

 

প্রতিবেদনে প্রকাশ, আকাশ পথে যেয়ে ওমরা পালনের সামর্থ্য নেই, কিন্তু মনের তীব্র ইচ্ছা ওমরা পালনের। তাই ইন্দোনেশিয়ান এই দম্পতি একটি বিশেষ সাইকেলে চড়ে এক বছরে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে উমরা পালন করছেন।  

ইন্দোনেশিয়ার ৩৫ বছর বয়সী হাকাম মাবরুরি ও তার স্ত্রী রফফুল ইসলামিয়া বাইসাইকেলে করে সাতটি দেশ পাড়ি দিয়ে সৌদি আরবের মক্কা পৌঁছান।
মদিনায় ইন্দোনেশিয়ান দম্পতি
ইন্দোনেশিয়া থেকে সৌদি আরব পৌঁছতে তারা পাড়ি দেন ১২ হাজার কিলোমিটার পথ। তাদের সময় লেগেছে প্রায় এক বছর।  

ইন্দোনেশিয়ার মালাং প্রদেশের বাসিন্দা এই দম্পতি ২০১৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর ওমরার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।  

দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার জন্য এ দম্পত্তি একটি বিশেষ সাইকেল তৈরি করেন। যার মাঝে দু’টি সীট ও দু’টি প্যাডেল যোগের পাশাপাশি সাইকেলে আসবাবপত্র রাখার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়। এই দম্পতির ওমরা পালনসহ এই দীর্ঘ সফরের খরচ বহন করেছে স্থানীয় একটি এনজিও।  

যাত্রাপথে তারা যেসব এলাকা অতিক্রম করেছেন, সেসব এলাকায় ইসলামের শান্তিপূর্ণ বার্তা ছড়িয়ে দিতে মনোযোগী ছিলেন।  

কৃষিকাজ করে জীবন নির্বাহ করেন তারা। তাই সাইকেলে করে এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিকে খুব সমস্যা হয়নি। যাত্রাপথে সাইকেলের সামনে বসতেন হাকিম। তবে দু’জনেই প্যাডেল চালিয়েছেন সমানতালে।  
ভারতে অবস্থানকালে
এ প্রসঙ্গে রফফুল ইসলামিয়া হাসতে হাসতে বলেন, স্বামী কিংবা পুরুষরা হলেন সমাজের ইমাম বা নেতা। তাই তাকে সামনেই বসতে হয়।  

সাইকেলে মক্কা সফরের আগে তারা ইন্দোনেশিয়ায় ও এর আশপাশের দেশ ভ্রমণ করেন। তার স্ত্রীও ভ্রমণ ভালোবাসেন।  

আরেকটি বড় খবর হলো- এই দম্পতি চার বছর ধরে ঘর-সংসার করছেন। আশা করা যাচ্ছে, কয়েক মাসের মধ্যে তাদের ঘর আলো করে প্রথম সন্তান আসবে।

সৌদি যাত্রার আগে, মাবরুরি বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি নিয়ে বিস্তর পড়াশোন করেছেন। প্রশিক্ষণ নিয়েছেন জিপিএস টেকনোলজি এবং গুগল ম্যাপস ব্যবহার বিষয়ে। সেই সঙ্গে সাইকেল মেরামত, রান্নাও শেখেন।  

ইন্দোনেশিয়া থেকে যাত্রা শুরু করে তারা মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, ভারত হয়ে জর্দান যান। পরে জর্ডান থেকে মিসর হয়ে শেষ পর্যন্ত সৌদি আরব পৌঁছান। চলতি পথে তারা বিভিন্ন জাতির সঙ্গে মিলিত হয়েছেন, পথে মানুষ তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা ও স্বাগত জানিয়েছে।  

ভারত অতিক্রমের সময়

চলতি পথে তারা থাইল্যান্ডের দক্ষিণ অঞ্চলে রমজানের রোজা পালন করেছেন। ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছেন ভারতে। আর জর্ডানের রাজধানী আম্মানে পালন করেন কোরবানির ঈদ।  

সাইকেলে উমরা পালন করতে আসলেও তারা দেশে ফিরে গেছেন বিমানে। সঙ্গে নিয়ে গেছেন সাইকেলটি।

সাইকেল নিয়ে ওমরা পালনের পেছনে কোন বিষয়টি তাদের অনুপ্রাণিত করেছে এমন প্রশ্নে তারা বলেন, আল্লাহতায়ালার প্রতি গভীর বিশ্বাস ও ধৈর্যধারণ। আমরা মনে করি, বান্দার সবকিছু আল্লাহর ওপর সোপর্দ করলে তার সঙ্গে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে উঠে। যে সম্পর্কের ভিত্তিতে অনেক কিছুই সহজ হয়ে যায়।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।