ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

ইসলাম

হজ ব্যবস্থাপনায় সব টাকা একসঙ্গে নিলে রিপ্লেসমেন্ট কমবে

ইয়াসির আরাফাত রিপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৮
হজ ব্যবস্থাপনায় সব টাকা একসঙ্গে নিলে রিপ্লেসমেন্ট কমবে কথা বলছেন আশকোনা হজ অফিসের পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম-ছবি-বাংলানিউজ

ঢাকা: চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনের উদ্দেশে সৌদি যাচ্ছেন ৬ হাজার ৭৯৮ জন। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাচ্ছেন ১ লাখ ২০ হাজার। ইতোমধ্যে সৌদি এয়ারলাইন্স ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটযোগে রোববার (২৯ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত মোট ৬৫ হাজার ৭৯০ হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন।

হজ ব্যবস্থাপনা শুরুর আগেই এজেন্সিগুলোকে ৪ শতাংশ হারে রিপ্লেসমেন্ট করার ব্যবস্থা রাখে সরকার। কোনো হজযাত্রী মারাত্বক অসুস্থ হলে বা মারা গেলে তার স্থানে অন্য একজনকে এই ৪ শতাংশ হারের মধ্যে রিপ্লেস করা হবে।

কিন্তু এজেন্সিগুলো রিপ্লেসমেন্টের এই হার বাড়ানোর জোর দাবি জানিয়ে আসছিলো। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার আরও ৪ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। এখন তারা দাবি করছে, এটা বাড়িয়ে ১৫ শতাংশে উন্নীত করার। যদিও এ দাবির যৌক্তিক কারণ দেখছে না কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, একসঙ্গে সব হজব্রত পালন ইচ্ছুক ব্যক্তির টাকা জমা নেওয়া হলে রিপ্লেসমেন্টের সংখ্যা কমবে।

হজ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছরের শুরুতেই ৪ শতাংশ হারে রিপ্লেসমেন্ট সুবিধা দেওয়ায় ৪ হাজার জনকে রিপ্লেসমেন্ট করা হয়। যাদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় রিপ্লেসমেন্ট করা হয়েছে মাত্র ৪ জনকে। বাকিদের সবাইকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় রিপ্লেসমেন্ট করা হয়েছে। গত ২১ জুলাই ধর্মমন্ত্রী আবারও ৪ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দেন। যেখানে ৩ হাজার ৮শ’ হজযাত্রীকে রিপ্লেসমেন্ট করা হয়। সেখানে সরকারি ব্যবস্থাপনায় মাত্র দুইজন আর বাকিদের বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় রিপ্লেসমেন্ট করা হয়েছে। এখন এজেন্সিগুলো রিপ্লেসমেন্টের হার আরও বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার কথা বলছে।

এ বিষয়ে আশকোনা হজ অফিসের পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, কিছু নিয়মের মধ্যে হজ পালন ইচ্ছুক ব্যক্তিদের নিয়ে আনা গেলে রিপ্লেসমেন্টের সংখ্যা অনেক কমে যাবে। আমরা এ বছরেই এই নিয়মটার কার্যকর করতে চেয়েছিলাম যেটা হয়নি। আগামীতে এটা করার চেষ্টা করা হবে। কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে আগেই প্রস্তাব দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, আমাদের প্রথমে প্রাক-নিবন্ধন যেটা হয় সেটা আগেই একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে। বেঁধে দেওয়া এই সময়ের মধ্যে যদি কেউ নিবন্ধন না করতে পারেন তাহলে কোনো এজেন্সিকে আর এটা করতে দেওয়া হবে না। তাহলে এই রিপ্লেসমেন্ট নিয়ে আর কথা হবে না। তাছাড়া প্রতিটি এজেন্সিকে আগেই সৌদি আরবে ভাড়া বাসা, ক্যাটারিং সার্ভিস ও মুয়াল্লিম ঠিক করে রাখতে হবে।

বিমান ভাড়া নিয়ে যে ভোগান্তি হয় সেটা কি কমে যাবে এমন প্রশ্নের উত্তরে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ভিসা ছাড়া টিকিট হবে না। আর ভিসা করতে হলে অবশ্যই তাকে সৌদি আরবে হজের সব আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, কোনো ব্যক্তি হজ পালনে যেতে চাইলে তার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নেওয়া হয়। আর রিপ্লেসমেন্ট করলে বা টাকা ফেরত নিতে চাইলে সরকারি ফি ৫ হাজার ব্যতিত সব টাকা ফেরত দেওয়া হয়। এজন্য প্রতিটি ব্যক্তির কাছ থেকে হজের পুরো (৩ লাখ ৩০ হাজার) টাকা নিয়ে নিতে হবে। এটা হলে প্রকৃত ব্যক্তিরাই আসবে এবং তাদের রিপ্লেসমেন্ট হবে না। তবে মারাত্বক অসুস্থ বা মারা যাওয়া ব্যক্তির ক্ষেত্রে সরকারি বেঁধে দেওয়া ৪ শতাংশই যথেষ্ঠ হবে। আর রিপ্লেসমেন্টের সংখ্যাও জ্যামিতিক হারে কমে যাবে।

হজ এজেন্সি অব বাংলাদেশ (হাব) মহাসচিব শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, বিমানের টিকিট কাটতে এখনও বাকি আছে। অনেকের আরও রিপ্লেসমেন্ট প্রয়োজন। তাই এটা ১৫ শতাংশে করার জোর দাবি জানাই। এটা না করা হলে বিমান খালি অবস্থায় সৌদি যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩২ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৮
ইএআর/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।