ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

বাবুলের দস্যিপনা | আব্দুস সালাম

গল্প/ইচ্ছেঘুড়ি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৯ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৭
বাবুলের দস্যিপনা | আব্দুস সালাম বাবুলের দস্যিপনা

বাবুল খুব চঞ্চল ছেলে। স্কুল ছুটির পর তার দুষ্টুমি অনেকগুণ বেড়ে যায়। তাকে নিয়ে মা-বাবার দুশ্চিন্তার শেষ নেই। সারাদিন বাগানে বাগানে ঘুরে বেড়ায়। বন্ধুদের সাথে খেলায় মেতে থাকে। নাওয়া-খাওয়ারও ঠিক নেই। গাছের শাখায় শাখায় পাখির বাসা খোঁজে। পাখির বাসা চোখে পড়লে ডিম আছে কিনা দেখার জন্য গাছে ওঠে। গাছে উঠতে গিয়ে বেশ কয়েকবার পড়ে গিয়ে হাত-পায়ে ব্যথাও পেয়েছে।

পাখির ডিম নষ্ট করার জন্য বাবুলকে তার বাবা কয়েকবার পিটুনি দিয়ে কড়া নিষেধ করে দিয়েছে এরকম কাজ না করার জন্য। কিন্তু কে শোনে কার কথা।

কোনো কিছুতেই তার শিক্ষা হয়নি। প্রজাপতি, ফড়িং ধরার জন্য পাঠকাঠিতে জিউল গাছের আঠা লাগিয়ে ঝোপঝাড়ে ঘুরে বেড়ায়। মাঝে মাঝে বাবুল তার বন্ধুদের সঙ্গে সিগারেটের প্যাকেট ও প্লাস্টিকের বলপেন কুড়িয়ে বেড়ায়। এছাড়াও বাবুলকে কয়েকদিন আগুন নিয়েও খেলতে দেখা গেছে। এরজন্য তাকে খুব বকাবকি করা হয়েছে। তারপরও সে কথা শোনেনি। সবসময় সে মা-বাবার চোখকে ফাঁকি দেয়। ছেলের চিন্তায় মা-বাবার ঠিকমতো ঘুম হয় না।

বাবুলের বাবা প্রতিদিন ভোরবেলায় ঘুম থেকে উঠে মাঠে চলে যান। আসতে আসতে প্রায় সন্ধ্যা হয়। সারাদিন মাকেই সামলাতে হয় বাবুলকে। একদিন তার মা একটা কাজে পাড়ায় বের হন। বাড়িতে তখন কেউ ছিল না। ঠিক ওইসময় বাবুল রান্নাঘর থেকে কেরোসিনের ল্যাম্প জ্বালিয়ে চৌকির উপর রাখে।

প্লাস্টিকের বলপেন জোড়া লাগিয়ে খেলনা তৈরি করতে শুরু করে। অসতর্ক হয়ে খেলার কারণে তার হাতের ধাক্কায় ল্যাম্পটি বিছানায় পড়ে যায়। ল্যাম্পটি পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিছানায় আগুন লেগে যায়। ভয় পেয়ে বাবুল দ্রুত ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে ভয়ে কাঁপতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে থাকে। ভয় পেয়ে সে পালিয়ে যায়।

ঘরে আগুন লাগা দেখে লোকজন চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকে। তারা দ্রুত আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। উপস্থিত গ্রামবাসীদের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও তেমন কোনো লাভ হয়নি। ঘরের ভিতরের সব জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এ ঘটনায় বাবুলের মা খুব কান্নাকাটি করতে থাকে। খবর পেয়ে বাবাও দ্রুত মাঠ থেকে বাড়িতে ফিরে আসেন।

তাৎক্ষণিকভাবে কেউ আগুন লাগার কারণ বলতে পারে না। কিন্তু বাবুলকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে সন্ধ্যার আগে বাবুল বাড়িতে ফিরে আসে। ভয়ে কাঁদতে থাকে। সে ঘরে আগুন লাগার কথা সবার কাছে স্বীকার করে। আর কখনও এধরনের কাজ করবে না বলে অনুতপ্ত হয়ে মা-বাবার কাছে ক্ষমা চায়। মা-বাবা তাকে ক্ষমা করে দেয়। এরপর থেকে বাবুল কখনও মা-বাবার অবাধ্য হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৭
এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।