ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৩০)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৭
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৩০) রহস্য দ্বীপ

[পূর্বপ্রকাশের পর]
কিন্তু আমার যে ঘুম আসছে, নোরা বলে। ছোট্ট এই মেয়েটা খুবই অলস, সে ভেবেছিল সবাই কাজে ব্যস্ত থাকার ফাঁকে একটু ঘুমিয়ে নেওয়া যাক। কিন্তু জ্যাক কাউকেই কাজে ফাঁকি দিতে দেবে না। সে নোরার পা ধরে ঝাঁকায় এবং ধাক্কা মারে।

যাও। আলসের হাড্ডি, সে বলে।

আমি এখানকার ক্যাপ্টেন। যেমন বলা হয়েছে তা এখনই করো।
আমি জানতাম না তুমি ক্যাপ্টেন, গোমড়া মুখে, নোরা বলে।

ঠিক আছে, এখন জানলে, জ্যাক বলে। এনিয়ে অন্যেরা কী বলে?
হ্যাঁ, তুমিই ক্যাপটেন, জ্যাক, মাইক ও পেগি একত্রে বলে ওঠে। এই এই, স্যার!
কেউ আর কথা বাড়ায় না। নোরা আর পেগি লেকের পানিতে এঁটো জিনিসপত্র নিখুঁতভাবে ধোয়। জ্বালিয়ে রাখবার জন্য ওরা আগুনের ওপর আরও কিছু কাঠ চাপায়, কারণ জ্যাক বলেছে এর থেকে আলো বেরুতে দেয়া বোকামি হবে।

এরপর ওরা ছেলেদের সঙ্গে যোগ দিতে উইলো বনের দিকে ছুটে।
জ্যাক তখন ভয়ানক ব্যস্ত। সে কুঠার দিয়ে কয়েকটা উইলোর চারা কাটে আর লম্বা শাখাগুলো ছাঁটাই করে।
এগুলোকে আমরা নিচের দেয়ালে ব্যবহার করবো, জ্যাক বলে। পুরাতন কোদালটা কোথায়, মাইক? আমি বলার পর তুমি কি সেটা এনেছিলে?

হ্যাঁ, এই তো এখানে, মাইক বলে। ডালগুলো পোতার জন্য আমি কি গর্ত খুঁড়বো?
হ্যাঁ, জ্যাক বলে। দেখো একটু গভীর করে খুঁড়বে।

তাই কড়া রোদের মধ্যে মাইক গর্ত খুঁড়তে থাকে, যাতে সেখানে জ্যাকের উইলোর ডালগুলো পোঁতা যায়। মেয়েরা জ্যাকের ছুরি দিয়ে কাটা গাছের পাতা আর ছোট ডালপালা ছাড়াতে থাকে। ওরা বড় বড় শাখাগুলোকে ভালোমতো পরিষ্কার করে।

সূর্য ডুবতে থাকার আগপর্যন্ত ওরা সবাই কঠোর পরিশ্রম করে। বাড়ি তৈরির কাজ এখনও বাকি। কাজটা শেষ হতে আরও কয়েক দিন লাগবে। তবে এরই মধ্যে মাথার ওপর খুব চমৎকার একটা ছাদ দাঁড়িয়ে গেছে। আর দেয়ালের কিছু অংশের কাজ শেষের পথে। বাচ্চারা সবাই ভালোই বুঝতে পারছে কাজ শেষে তাদের নতুন বাড়ি দেখতে কেমন দেখাবে। অবশ্যই সেটা খুব বড় আর শক্তপোক্ত হবে। ভেতর ভেতর সবাই খুব গর্ব অনুভব করে।
ঠিক আছে আজ আর নয়, জ্যাক বলে। আমরা সবাই এখন খুব ক্লান্ত। যাই গিয়ে দেখি আমার বড়শিতে কোনো মাছ আটকা পড়লো কিনা।

কিন্তু হায়! সেই রাতে কোনো মাছ ধরা দেয় না!
কয়েকটা রুটি আর এক প্যাকেট কিসমিস বাকি, পেগি বলে। আর আছে সামান্য লেটুস ও মার্জারিন। এতে আমাদের ক’দিন চলবে?

খাবারের প্রশ্নটা জটিল হয়ে দেখা দিচ্ছে, চিন্তুকের মতো জ্যাক বলে। আমাদের প্রচুর পানি আছে। খুব শিগগিরই আমরা একটি বাড়ি পাচ্ছি। কিন্তু আমাদের কাছে খাবার থাকতে হবে তা না হলে সবার উপোস করতে হবে। আমি খরগোশ ধরতে পারবো, আমার ধারণা।

আরে না, জ্যাক, এসবের দরকার নেই, নোরা বলে। খরগোশ আমার খুব একটা পছন্দ না।
আমারও না, নোরা, জ্যাক বলে। কিন্তু এখনই খরগোশ মারা না হলে, শিগগিরই জায়গাটা খরগোশে ছেয়ে যাবে, জানো। মাঝে মধ্যেই খরগোশের গর্ত দেখতে পাচ্ছ, কি পাচ্ছ না? আর আমার ধারণা তুমিও এটা পছন্দ করো!

হ্যাঁ, করি তো, নোরা বলে। ঠিক আছে, যদি নিশ্চিত হও ব্যথা না দিয়েই তুমি ওদের ধরতে পারবে, জ্যাক। আমার ধারণা তুমি তা পারবে।

সেটা আমার ওপর ছেড়ে দাও, জ্যাক বলে। তোমার মতোই আমারও কাউকে অযথা ব্যথা দিতে ভালো লাগে না। তবে কীভাবে খরগোশের চামড়া ছাড়াতে হয় সেটা আমার খুব ভালো করেই জানা। কাজটা পুরুষদের, তাই, তোমরা দুজন মেয়ে এটা মাইক আর আমার ওপর ছেড়ে দিতে পারো।

খরগোশ রান্না করতে পারবে কিনা এখন সেটা নিয়েই তোমাদের ভাবা উচিত। আর পেগি গরু আর মুরগির নিয়ে ভাবতে শুরু করার পর থেকে আমিও ওসবের কথা ভাবছি। আমার বিশ্বাস আমি ওগুলো দ্বীপে নিয়ে আসতে পারবো- তখন আমাদের আর কোনো চিন্তা থাকবে না!

চলবে....

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৭
এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।