বাগেরহাট: বাগেরহাটের কচুয়ায় কিশোরীকে ধর্ষণের অপরাধে ফেরদাউস শেখ (৪৪) নামের এক কথিত কবিরাজকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
সোমবার (২ অক্টোবর) দুপুরে বাগেরহাট নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মো. সাইফুল ইসলাম আসামির অনুপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
পাশাপাশি নির্যাতনের শিকার কিশোরীর সন্তানের বয়স ২১ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তার ভরণপোষণের ব্যয় রাষ্ট্র বহন করবে। ওই শিশু পিতা-মাতার পরিচয়ে পরিচিত হবে। শিশুর ভরণপোষণ ব্যয়িত অর্থ সরকার আসামির বিদ্যমান সম্পত্তি বা ভবিষ্যতে প্রাপ্য সম্পত্তি থেকে আদায় করতে পারবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত ফেরদাউস শেখ বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার ঝালডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি পলাতক।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৮ মার্চ দুপুরের দিকে ওই কিশোরীর বাড়িতে যান ফেরদাউস শেখ। তিনি এলাকায় কবিরাজ বলে পরিচিত ছিলেন। একপর্যায়ে তিনি কিশোরীকে জিম্মি করে ধর্ষণ করেন। লোকলজ্জার ভয়ে কিশোরী বিষয়টি কাউকে জানায়নি। এক পর্যায়ে কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। ঘটনার সাত মাস পর ভিকটিমের মা বাদি হয়ে ফেরদাউস শেখকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কচুয়া থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন।
কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা ও ঘটনার সত্যতা পেয়ে পরের বছর ২০১৫ সালের ৩১ জানুয়ারি আদালতে ফেরদাউস শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা এস আই হুমায়ুন কবির। ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সালের সংশোধিত ৯ (১) ধারায় অভিযুক্ত আসামি ফেরদাউস শেখের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এ রায় দেন।
এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন সিদ্দিকুর রহমান এবং আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন শেখ আনিছুর রহমান।
অ্যাড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। ধর্ষকের সম্পদ থেকে শিশুর ভরণপোষণের অর্থ আদায়ের বিষয়টি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এ ছাড়া শিশুটি মা-বাবা দুজনের পরিচয়ে বড় হবে। ভবিষ্যতে অপরাধীরা এই ধরনের অপরাধ করার আগে চিন্তা করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০২৩
এসএম