ঢাকা, সোমবার, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ জুন ২০২৪, ১৬ জিলহজ ১৪৪৫

আইন ও আদালত

তদন্তের সময় জবানবন্দির কপি সরবরাহ প্রশ্নে শুনানি বৃহত্তর বেঞ্চে 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৭ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০২৪
তদন্তের সময় জবানবন্দির কপি সরবরাহ প্রশ্নে শুনানি বৃহত্তর বেঞ্চে 

ঢাকা: তদন্ত পর্যায়ে পাওয়া যায় না স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির অনুলিপি আসামিকে দেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে হাইকোর্ট বিভাগে বৃহত্তর (লার্জার) বেঞ্চ গঠন করেছেন প্রধান বিচারপতি। বেঞ্চের প্রধান করা হয়েছে বিচারপতি নাইমা হায়দারকে।

বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন, বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপ শাহেদ নূরউদ্দিন।  

বৃহত্তর বেঞ্চ গঠনের বিষয়টি মঙ্গলবার (৪ জুন) জানিয়েছেন আসামির আইনজীবী মো. শিশির মনির।

তিনি জানান, তদন্ত চলাবস্থায় একজন আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি একজন আসামিকে দেওয়া হয় না। অথচ এটি তার বিরুদ্ধে আদালতে ব্যবহার করা হয়। উচ্চ আদালতে জামিন চাইতে গেলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লাগে, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট লাগে, ২২ ধারার জবানবন্দি লাগে। তদন্ত চলা অবস্থায় এগুলো দেওয়া হয় না। এর পেছনে কারণ হাইকোর্ট বিভাগের একটি রায়। এখন এ বিষয়ে একজন আসামি হাইকোর্টের সামনে একটি মামলা নিয়ে আসে। এ অবস্থায় হাইকোর্ট বিভাগের আগের রায়টি পর্যালোচনার জন্য পুনরায় বিবেচনার প্রয়োজন আছে, এমন কথা বলে প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হয়। এরপর প্রধান বিচারপতি একটি বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে দিয়েছেন।

শিশির মনির আরও জানান, এখন বৃহত্তর বেঞ্চে শুনানি হলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে বলে আশা করি।    

জমিতে সীমানা পিলার স্থাপন নিয়ে হামলায় একজনের মারা যাওয়ার ঘটনায় ২০২০ সালের ৮ জুলাই কুমিল্লার লাকসাম থানায় মামলা করেন পারুল বেগম। মামলার এজাহারে ৬ জনের নামোল্লেখসহ ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়।  

ওই মামলার আসামি লিংকন ও লিপন পাটোয়ারীকে ওই বছরের ১৫ অক্টোবর গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আসামি লিপনকে আদালতে হাজির করলে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এই জবানবন্দির সত্যায়িত অনুলিপি চেয়ে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ছয় নম্বর আমলি আদালতে আবেদন করে আসামি পক্ষ। বিচারক বেগম শারমিন রীমা আবেদনটি খারিজ করে দেন। খারিজ আদেশে বলা হয়, মামলাটি তদন্তাধীন। দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গোপনীয় বিষয়। এ পর্যায়ে ওই জবানবন্দির নকল সরবরাহ করা হলে তদন্ত ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

এই আদেশের বিরুদ্ধে কুমিল্লার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা করেন আসামি। ২০২১ সালের ১২ জানুয়ারি আবেদন খারিজ করে দেন জেলা ও দায়রা জজ মো. আতাবুল্লাহ।

নিম্ন আদালতের এই আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন আসামি লিপন। ওই বছরের ৯ মার্চ ওই আদেশ কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।  

সম্প্রতি ওই রুল শুনানির জন্য বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুসের নেতৃত্বাধীন দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় আসে। রুলের ওপর আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষ থেকে শুনানি করা হয়। শুনানিতে উঠে আসে যে, হাইকোর্টের আগের দেওয়া রায় রয়েছে তদন্ত পর্যায়ে আসামির জবানবন্দি দেওয়া যাবে না। তখন রুলটি হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে নিষ্পত্তির জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে মামলার নথি পাঠানো হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৭ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০২৪
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।