জামালপুরে রফিকুল ইসলাম গাদু হত্যা মামলায় দুজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে জামালপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক মো. আবু বকর সিদ্দিক এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এ কে এম নাজমুল হুদা জানান, ১৯৯৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর রাতে জামালপুর সদরের হাসিল গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম গাদু নিজের বাড়ির পাশের পুকুর পাহারা দিতে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। রাত পার হলেও তার কোনো খোঁজ না পেয়ে পরদিন সকালে স্ত্রী লাইলী বেগম খোঁজ করতে গিয়ে দেখতে পান, পুকুর পাড়ের ছাপরা ঘরের বিছানা এলোমেলো, ঘরের ভেতরে ধস্তাধস্তির চিহ্ন রয়েছে এবং একটি গামছা পড়ে আছে। পরে সেটি স্থানীয় লেবু মিয়ার বলে শনাক্ত করেন প্রতিবেশীরা। নিখোঁজ হওয়ার পাঁচদিন পর ১৯৯৮ সালের ২৮ ডিসেম্বরে এক প্রতিবেশীর বাড়ির টয়লেটের ট্যাংকির ভেতর থেকে পুলিশ গাদুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার গলায় একটি মাফলার প্যাঁচানো ছিল। পরবর্তীতে মাফলারটি মজনু মিয়ার বলে শনাক্ত করা হয়।
ঘটনার পরদিন নিহতের স্ত্রী লাইলী জামালপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। শুরুতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হলেও পুলিশ তদন্ত শেষে ২০০০ সালের ৬ জুন লেবু মিয়াসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে।
মামলায় মোট ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বুধবার আসামিদের উপস্থিতিতে লেবু ও মজনুকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং মরদেহ গুমের ঘটনায় সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দেন। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ডও দেন। রায় ঘোষণার পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। বাকি ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়। দীর্ঘ ২৬ বছর পর এই রায়ে সন্তুষ্টি জানিয়েছে বাদী পক্ষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২৫
এসআরএস