ঢাকা: অবকাশকালীন ও ঈদ-উল ফিতরের ছুটির পর উচ্চ আদালতে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অর্থপাচার মামলাসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার নিষ্পত্তি হবে।
এর মধ্যে হাইকোর্টে রয়েছে তারেক রহমানের অর্থপাচার মামলার রায়, ৩৪টি ওষুধ কোম্পানির লাইসেন্স বাতিলের বিষয়ে রুল নিষ্পত্তি।
মানবতাবিরোধী অপরাধে মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনের শুনানি, গাজীপুরের আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলার খালাসপ্রাপ্তদের রায় স্থগিতের শুনানি ও টাঙ্গাইল -৪ আসনের উপনির্বাচনে কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র নিয়ে আপিলের শুনানি হবে আপিল বিভাগে।
তারেকের অর্থপাচার মামলা
২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় তারেক রহমান ও তার বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগে মামলাটি করে দুদক।
২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দিয়ে মামুনকে ৭ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৪০ কোটি টাকা জরিমানার রায় দেন বিচারিক আদালত।
এ রায়ের বিরুদ্ধে একই বছর আপিল করে দুদক ও মামুন।
আপিল শুনানি শেষে গত ১৬ জুন হাইকোর্ট রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন মামলাটি।
ছুটির পরই এ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
মীর কাসেম আলী
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীর বিচারের প্রায় সব ধাপ শেষ। বাকি আছে তার রিভিউ আবেদন। এ ধাপের শুনানি হবে আগামী ২৫ জুলাই। এ আবেদনের নিষ্পত্তি সাপেক্ষে রায় কার্যকরের পরবর্তী পদক্ষেপ নিবে সরকার।
আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলা
২০০৪ সালের ৭ মে গাজীপুরের টঙ্গীতে আহসান উল্লাহ মাস্টারকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ মামলায় ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল বিচারিক আদালত বিএনপি নেতা নূরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ ও ২ জনকে খালাস দেন।
পরে বিচারিক আদালতের রায়ের বিষয়ে হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিল হয়।
আপিল মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে ১৫ জুন হাইকোর্ট জীবিত ২৬ আসামির মধ্যে ১১ জনকে খালাস, ৬ জনকে ফাঁসি, ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত একজন পলাতক একজনের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে ২১ জুন অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতির আদালত ১১ আসামির খালাসের রায় স্থগিত করেন। আগামী ১৪ জুলাই প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে আপিল শুনানি হবে।
২০ কোম্পানির ওষুধ উৎপাদন
মানসম্মত ওষুধ উৎপাদনে ব্যর্থতার অভিযোগে করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ০৭ জুন ২০টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ওষুধ উৎপাদন এবং ১৪টির অ্যান্টিবায়েটিক উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
পাশাপাশি রুলও জারি করেন আদালত।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে কয়েকটি কোম্পানি আবেদন করলেও তাতে সাড়া দেননি আপিল বিভাগ। তবে হাইকোর্টের জারি করা রুল আগামী ১৮ আগস্টের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলেছেন সর্বোচ্চ আদালত।
কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র
গত বছরের ১০ নভেম্বর টাঙ্গাইল-৪ আসনে উপনির্বাচনের দিন ধার্য করেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ঋণখেলাপের অভিযোগে গত বছরের ১৩ অক্টোবর রিটার্নিং কর্মকর্তা কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন। আপিলের পরও নির্বাচন কমিশন কাদের সিদ্দিকীর আপিল খারিজ করেন।
এরপর ইসি’র বাতিল আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন কাদের সিদ্দিকী। গত ০৪ ফেব্রুয়ারি কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র বৈধ নয় বলে ইসি’র সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন হাইকোর্ট।
এর বিরুদ্ধে কাদের সিদ্দিকী লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি) করলে ১৫ মার্চ মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ। এ আপিলের শুনানি হবে ১৯ জুলাই।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৬
ইএস/এএসআর