ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ঐশীর ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় যেকোনো দিন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০০ ঘণ্টা, মে ৭, ২০১৭
ঐশীর ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় যেকোনো দিন গত ১০ এপ্রিল হাইকোর্টে হাজির করা হয় ঐশী রহমানকে

ঢাকা: বাবা-মাকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার মেয়ে ঐশী রহমানের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষ হয়েছে। যেকোনো দিন দেওয়া হবে বলে জানিয়ে রায় ঘোষণা অপেক্ষমান (সিএভি) রেখেছেন হাইকোর্ট।

রোববার (০৭ মে) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।  

গত ১২ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এ শুনানিতে ঐশীর পক্ষে অংশ নেন আইনজীবী আফজাল এইচ খান ও সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির।

গত ১০ এপ্রিল ঐশীর  মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে ১৫ মিনিট ধরে একান্তে তার কথা শোনেন হাইকোর্ট।

ওইদিন সকাল পৌনে দশটার দিকে হাইকোর্টের নির্দেশে ঐশীকে হাজির করে কারা কর্তৃপক্ষ। সেদিন দশটা ৪৫ মিনিট থেকে বেলা এগারটা পর্যন্ত খাসকামরায় নিয়ে ঐশীর বক্তব্য শোনেন হাইকোর্ট। সেখানে ছিলেন কেবলমাত্র আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের একজন করে আইনজীবী। বক্তব্য শোনার পরে ফের কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ঐশী রহমানকে।

এর আগে শুনানি চলাকালে গত ০৩ এপ্রিল ঐশীর আইনজীবীরা বলেন, কোনো সুস্থ ব্যক্তি বাবা-মাকে হত্যা করতে পারে না। একটি মেডিকেল রিপোর্টেও দেখা গেছে, সে মানসিক বিকারগ্রস্ত।
 

এরপর তার মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে আইজিকে (প্রিজন) তাকে ১০ এপ্রিল হাজির করার আদেশ দেন হাইকোর্ট।

২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল শাখা) ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরদিন ঐশী গৃহকর্মী সুমীকে নিয়ে রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করেন।

২০১৪ সালের ০৯ মার্চ ডিবির ইন্সপেক্টর আবুয়াল খায়ের মাতুব্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে ঐশীসহ ৪ জনকে অভিযুক্ত করে পৃথক দু’টি চার্জশিট দাখিল করেন।

অপর আসামি গৃহকর্মী খাদিজা আক্তার সুমি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার মামলাটির বিচার চলছে শিশু আদালতে।

এ হত্যা মামলার বিচার শেষে ২০১৫ সালের  ১২ নভেম্বর নিহতদের একমাত্র মেয়ে ঐশী রহমানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদের আদালত। ঐশীকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মামলার অন্য আসামি ঐশীর বন্ধু মিজানুর রহমান রনিকে খুনের ঘটনার পর ঐশীদের আশ্রয় দেওয়ার অপরাধে দু’বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও একমাস কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। অপর আসামি ঐশীর বন্ধু আসাদুজ্জামান জনি খালাস পেয়েছেন।

দু’টি খুনের জন্য পৃথক দু’টি অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। দু’টি অপরাধের জন্য আলাদা আলাদা করে ঐশীকে দু’বার ফাঁসি ও দু’বারে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

রায়ের ০৭ দিন পর গত বছরের ১৯ নভেম্বর ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে এসে পৌঁছে। পরে এ মামলায় শুনানির জন্য আপিল গ্রহণ করেন হাইকোর্ট।

এরপর রাষ্ট্রীয় প্রকাশনা সংস্থা বিজি প্রেসে আপিল শুনানির জন্য ঐশীর মামলার পেপারবুক তৈরির পর হাইকোর্টে পৌঁছে।

পরে গত বছর শুনানির জন্য ডেথ রেফারেন্স ও ঐশীর আপিল কার্যতালিকাভুক্ত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।