প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ রোববার (২১ মে) এ আদেশ দেন।
ফলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে আপাতত ভ্রাম্যমাণ আদালত চলবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ছয় সপ্তাহের সময়ের আবেদন জানিয়েছিলেন। সর্বোচ্চ আদালত ০২ জুলাই পর্যন্ত সময় দিয়ে ওইদিনই লিভ টু আপিল করতে বলেছেন রাষ্ট্রপক্ষকে। ওইদিনই শুনানি শুরু হবে বলেও জানিয়েছেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বৈধতা নিয়ে তিনটি রিটের শুনানি শেষে গত ১১ মে রায় দেন হাইকোর্ট। ১৪ মে এ রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন জানান রাষ্ট্রপক্ষ। ওই দিন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত ১৮ মে পর্যন্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে শুনানির জন্য পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানোর আদেশ দেন। কিন্তু ১৮ মে এটি আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠেনি।
আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
২০১১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ভবন নির্মাণ আইনের কয়েকটি ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে আবাসন কোম্পানি এসথেটিক প্রপার্টিজ ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান খানকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ৩০ দিনের বিনা শ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। ২০ সেপ্টেম্বর তিনি জামিনে মুক্তি পান। এরপর তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন (মোবাইল কোর্ট অ্যাক্ট, ২০০৯) কয়েকটি ধারা ও উপধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১১ অক্টোবর রিট আবেদন করেন।
এ রিটের শুনানি নিয়ে একই বছর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। আদালতের জারি করা রুলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত
পরিচালনার ৫ ধারা, এবং ৬(১), ৬(২), ৬(৪), ৭, ৮(১), ৯, ১০, ১১, ১৩, ১৫ ধারা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিলো।
পরে এ রকম আরও দু’টি রিট করা হয়। তিন রিটে মোট ১৯ আবেদনকারীর শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করা হয়।
হাইকোর্টের রায়ের পরে হাসান এম এস আজিম বলেন, রায়ের হাইকোর্ট বলেছেন এটা অসাংবিধানিক ও মাসদার হোসেন মামলার (বিচার বিভাগ পৃথককরণ) রায়ের পরিপন্থি। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পরিপন্থি।
এছাড়াও মোবাইল কোর্ট আইনে আবেদনকারীদের দেওয়া সাজাও বাতিল করেছেন। এরমধ্যে একজনকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিলো। তার টাকাও ৯০দিনের মধ্যে ফেরত দিতে রায় দিয়েছেন।
হাসান আজিম বলেন, কতিপয় ধারা অবৈধ হয়ে যাওয়ায় এখন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ধারা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অবৈধ। এ অবস্থায় মোবাইল কোর্ট আর পরিচালনার সুযোগ নেই। এখন যদি মোবাইল কোর্ট আইন পরিচালনা করতে হয়, তাহলে নতুনভাবে একটি আইন করতে হবে, যেখানে সংবিধান ও মাসদার হোসেন মামলার রায়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য করতে হবে।
তবে আইন হওয়ার পরে যাদের সাজা হয়েছে তাদের ব্যাপারে তিনি বলেন, এ বিষয়টি মার্জনা করেছেন। তবে যেসব সাজার বিষয়ে এখন বিচারাধীন সেগুলো নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলবে।
২০০৭ সালে ভ্রাম্যমাণ আদালত অধ্যাদেশ জারি করে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বধীন মহাজোট সরকার ২০০৯ সালের ৪ অক্টোবর জাতীয় সংসদে এটিকে আইনে পরিণত করে। এরপর থেকে এটি ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন ২০০৯ নামে পরিচিত।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৭ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৭
ইএস/এসএইচ/এএসআর
