ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা অক্ষুণ্ন রেখে বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০১৭
রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা অক্ষুণ্ন রেখে বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি

ঢাকা: নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাবিধি হবে। তবে সংবিধানের আলোকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা অক্ষুণ্ন রেখে এই শৃঙ্খলাবিধি তৈরির বিষয়ে সরকার যা যা দরকার, সবই করবে।

রোববার (০৮ অক্টোবর) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

বিধিমালার গেজেট প্রকাশে রাষ্ট্রপক্ষের চার সপ্তাহের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (০৮ অক্টোবর) দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ আগামী ০৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেন।

পরে মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাবিধি প্রণয়নের বিষয়টি কার্যতালিকায় ছিল। সরকারের পক্ষে চার সপ্তাহের সময় চেয়েছি। আদালত বলেছেন, তারা অতি শিগগিরই এর সুরাহা চান। আমিও বলেছি, হ্যাঁ, সরকারও এ বিষয়ে আন্তরিক। সংবিধানের আলোকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা অক্ষুণ্ন রেখে এই শৃঙ্খলাবিধি তৈরির বিষয়ে সরকার যা যা দরকার, সবই করবে’।

‘সর্বোচ্চ আদালত বলেছেন- এটির নিষ্পত্তি চান। আমরাও একমত হয়েছি। হ্যাঁ, আমরাও নিষ্পত্তি চাই। শৃঙ্খলাবিধি হবে, তবে সংবিধানের যে বিধি-বিধান আছে সেটিকে অক্ষুণ্ন রেখে এবং এ বিষয়ে সংবিধানে রাষ্ট্রপতির যে ক্ষমতা দেওয়া আছে, সে ক্ষমতাকে অক্ষুণ্ন রেখে বিধি-বিধান তৈরি করতে হবে’।

গত ২০ আগস্ট প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ শুনানি শেষে ০৮ অক্টোবর পর্যন্ত গেজেট প্রকাশের সময় বাড়িয়েছিলেন। রোববার রাষ্ট্রপক্ষ আবারো ৪ সপ্তাহের সময়ের আবেদন জানালে তা মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ।

এর আগে ০৬ আগস্ট দুই সপ্তাহ সময় দিয়ে আলাপ-আলোচনা করার কথা বলেছিলেন সর্বোচ্চ আদালত। কিন্তু এর মধ্যে সরকার ও আদালতের মধ্যে কোনো আলাপ-আলোচনা হয়নি।

গত ৩০ জুলাইও প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, রোববার-বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই থেকে ০৩ আগস্ট) দুপুর ২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত আমি এবং আপিল বিভাগের বিচারপতিরা আপনাদের (সরকার) সময় দেবো। বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধিমালা নিয়ে আর রশি টানাটানি নয়। আইনমন্ত্রীসহ সরকারের যেকোনো বিশেষজ্ঞ আসবেন, বৈঠকে বসবো। আপনিও থাকবেন।
 
১৯৯৯ সালের ০২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেনের মামলায় (বিচার বিভাগ পৃথককরণ) ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেওয়া হয়। ওই রায়ের ভিত্তিতে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল। আপিল বিভাগের এ নির্দেশনার পর গত বছরের ০৭ মে আইন মন্ত্রণালয় একটি খসড়া শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধি প্রস্তুত করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়।

গত বছরের ২৮ আগস্ট শুনানিকালে আপিল বিভাগ খসড়ার বিষয়ে বলেন, শৃঙ্খলা বিধিমালা সংক্রান্ত সরকারের খসড়াটি ছিলো ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার হুবহু অনুরূপ। যা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী।

এর পরই সুপ্রিম কোর্ট একটি খসড়া বিধিমালা করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠান। গত ১৬ জুলাই প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এ সংক্রান্ত গেজেট শিগগিরই প্রস্তুত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন আইনমন্ত্রী। পরে ফের ২৭ জুলাই বিকেলে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে খসড়াটি হস্তান্তর করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

কিন্তু গত ৩০ জুলাই সকালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির বেঞ্চ আইনমন্ত্রীর দেওয়া খসড়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আইনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হলো। তিনি খসড়া দিয়ে গেলেন। আমি তো খুশি হয়ে গেলাম। যদিও খুলে দেখিনি। কিন্তু এটা কী!’

এরপর বৈঠক ডেকেছিলেন আপিল বিভাগ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৭
ইএস/এসএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।