ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সিদ্ধান্ত এখন রাষ্ট্রপতির

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৭
সিদ্ধান্ত এখন রাষ্ট্রপতির ছুটি নিয়ে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার প্রাক্কালে বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (ফাইল ফটো)

ঢাকা: ২১তম প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদত্যাগের পর ২২তম প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

শনিবার (১১ নভেম্বর) আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘যা হওয়ার, তা হয়ে গেছে। এখন নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগে সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপতির’।


 
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সংবিধানের এ সংক্রান্ত ধারা অনুসরণের কথা জানিয়ে বলেন, ‘সিদ্ধান্ত এখন কেবল রাষ্ট্রপতির’।    

প্রধান বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘(১) প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন’।

সংবিধানের ৪৮ (৩) অনুচ্ছেদ মতে, ‘এই সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদের (৩) দফা অনুসারে কেবল প্রধানমন্ত্রী ও ৯৫ অনুচ্ছেদের (১) দফা অনুসারে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্র ব্যতীত রাষ্টপতি তাঁহার অন্য সকল দায়িত্ব পালনে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কার্য করিবেন’।

এছাড়া দায়িত্বপ্রাপ্ত বা অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রধান বিচারপতির পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে প্রধান বিচারপতি তাঁহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ বলিয়া রাষ্ট্রপতির নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইলে ক্ষেত্রমত অন্য কোন ব্যক্তি অনুরূপ পদে যোগদান না করা পর্যন্ত কিংবা প্রধান বিচারপতি স্বীয় কার্যভার পুনরায় গ্রহণ না করা পর্যন্ত আপীল বিভাগের অন্যান্য বিচারকের মধ্যে যিনি কর্মে প্রবীণতম, তিনি অনুরূপ কার্যভার পালন করিবেন’।
 
বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদত্যাগপত্র বঙ্গভবনে গ্রহণের আগে শনিবার সকালে আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘তিনি (বিচারপতি সিনহা) ছুটির মেয়াদ বাড়াননি। এখন তার অনুপস্থিতিতে সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুসারে দায়িত্ব পালন করে যাবেন আপিল বিভাগের কর্মে প্রবীণতম বিচারপতি ((বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্‌হাব মিঞা)।   ইতোমধ্যেই তিনি দায়িত্ব পালনরত আছেন। সেটি অব্যাহত থাকবে’।  

** আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ

শুক্রবার (১০ নভেম্বর) দীর্ঘ একমাস ১০ দিনের ছুটি শেষ হয় বিচারপতি সিনহার। ওইদিনই অস্ট্রেলিয়া থেকে কানাডা যাওয়ার পথে সিঙ্গাপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে রাষ্ট্রপতি বরাবর তার পদত্যাগপত্র জমা দেন বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বাংলানিউজকে জানায়।

আর শনিবার দুপুরে পদত্যাগপত্র বঙ্গভবনে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদিন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির পদ থেকে সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদত্যাগপত্র আমরা গ্রহণ করেছি’।

অবকাশকালীন ছুটি শেষে গত ০২ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট খোলার আগের দিন অসুস্থতার কথা জানিয়ে একমাসের (০৩ অক্টোবর থেকে ০১ নভেম্বর) ছুটিতে যান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। পরে বিদেশে যেতে আরও দশদিনের (০২ থেকে ১০ নভেম্বর) ছুটি বাড়িয়ে নেন তিনি।

গত ১৩ অক্টোবর রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের এসকিউ-৪৪৭ ফ্লাইটে অস্ট্রেলিয়া যান প্রধান বিচারপতি। এর চারদিনের মাথায় ১৭ অক্টোবর রাতে একই ফ্লাইটে দেশটিতে যান তার স্ত্রী সুষমা সিনহাও। সেখানে বড় মেয়ের বাসায় উঠেছিলেন বিচারপতি সিনহা দম্পতি।

অস্ট্রেলিয়া থেকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যান গত সোমবার (০৬ নভেম্বর)। সেখান থেকে তিনি কানাডায় তার ছোট মেয়ে আশা সিনহার কাছে যাবেন।

গত ০২ অক্টোবর আপিল বিভাগের কর্মে প্রবীণতম বিচারক বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্‌হাব মিঞাকে ওই একমাসের জন্য প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালনের দায়িত্ব দেন রাষ্ট্রপতি। বিচারপতি সিনহার ছুটি বেড়ে যাওয়ায় বিচারপতি ওয়াহ্‌হাব মিঞার দায়িত্বকালও ১০ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে দেন রাষ্ট্রপতি।

২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি থেকে দায়িত্ব পালনকারী এ বিচারপতির আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসরে যাওয়ার কথা ছিলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।