ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

‘ঢাকাকে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন ঘোষণার সময় এসেছে’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২০
‘ঢাকাকে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন ঘোষণার সময় এসেছে’

ঢাকা: দূষণের কারণে ঢাকা সিটিকে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইকোলজিক্যাল ক্রিটিক্যাল এরিয়া) ঘোষণা করার সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

বুড়িগঙ্গার দূষণ নিয়ে চলা এক মামলার শুনানিতে বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও মোহাম্মদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেছেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

আদালতে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আমাতুল করিম।

পরে মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, বুড়িগঙ্গার দূষণরোধ নিয়ে যে মামলা চলছে, সেখানে শ্যামপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকার বিভিন্ন শিল্প কারাখানার মালিক যুক্তি উত্থাপন করছে যে, তারা এখানে যে ব্যবসা করছে, সে ব্যবসা অব্যাহত রাখার আইনগত অধিকার তাদের আছে। তারা বলছে, হাইকোর্ট এর আগে ২০১২ সালে একটি অর্ডার দিয়েছিলেন। ওয়াসাকে জমি দিতে বর্জ্য শোধনাগার প্ল্যান্ট বা ইটিপি (ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট) স্থাপন করার জন্য।

‘পরে ইটিপি ছাড়া অবৈধভাবে চলা শিল্প কারাখানা উচ্ছেদে পরিবেশ অধিদপ্তর যখন নোটিশ দিয়েছিল, তখন সেটিকে চ্যালেঞ্জ করে তারা উচ্চ আদালতে এসেছিল। ২০১৬ সালে আপিল বিভাগ সেটেল করে দিয়েছিলেন যে, পরিবেশ অধিদপ্তরের উচ্ছেদ নোটিশ বৈধ এবং ইটিপি ছাড়া কোনো শিল্প-কারাখানা চালানো যাবে না। ’

তিনি বলেন, আদালত এই শুনানির মধ্যেই বলছিলেন, ‘এ সমস্ত কাজ অব্যাহত থাকলে ঢাকার অবস্থাটা... বর্তমানে ঢ‍াকাকে বিশ্বের এক নম্বর দূষিত শহর হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। পরিবেশ আইনে তো আছে, যদি এ রকম দূরাবস্থা হয়, সেক্ষেত্রে ইকোলজিক্যাল ক্রিটিক্যাল এরিয়া ঘোষণা করতে হবে। এখন যেহেতু ঢাকা সবচেয়ে দূষিত নগরী, তাই গোটা ঢাকা শহরটাকেই ইকোলজিক্যাল ক্রিটিক্যাল এরিয়া ঘোষণার জন্য সময় এসেছে। ’

এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে আদালতে ‍আবেদন করবেন কি-না সাংবাদিককের এমন প্রশ্নে মনজিল মোরসেদ বলেন, আদালতের এ আলোচনাটা (ইকোলজিক্যাল ক্রিটিক্যাল এরিয়া) শুনলাম, নিশ্চয় এর আইনগত বিষয়গুলো বিবেচনা করে পদক্ষেপ নেবো।

বুড়িগঙ্গার পানি দূষণরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে ২০১০ সালে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ওই রিট করা হয়েছিল। সে রিটের শুনানি শেষে তিন দফা নির্দেশনা দিয়ে ২০১১ সালের ১ জুন রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

চলতি বছরের শুরুতে এ রায় নিয়ে এইচআরপিবি একটি সম্পূরক আবেদন করে।

ওই আবেদনের পরে মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, জনস্বার্থে করা এক রিট মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বুড়িগঙ্গার পানি দূষণরোধে ২০১১ সালে আদালত অনেকগুলো নির্দেশনা দিয়েছিলেন। বুড়িগঙ্গার ভেতরে যেসব সুয়ারেজ লাইন আছে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল লাইন আছে, সেগুলো ছয় মাসের মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশের পাশাপাশি বুড়িগঙ্গার তীরে যাতে ময়লা আবর্জনা ফেলতে না পারে, সে জন্যে সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম করার জন্য বলা হয়েছিল রায়ে।

সংশ্লিষ্টরা এই নির্দেশনাগুলো পুরোপুরি পালন না করায় এ সম্পূরক আবেদন করা হয়েছিল বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২০
ইএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।