শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে তাদের খুলনা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে ১৫ দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানায় পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের ১০ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এর আগে ভোরে নগরের গল্লামারী এলাকার একটি বাড়িতে খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) একটি বিশেষ দল দীর্ঘ তিন ঘণ্টার বেশি সময় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।
আটকরা হলেন- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট (এইচ আর এম) ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র নূর মোহাম্মাদ অনিক (২৪) ও পরিসংখ্যান ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মো. মোজাহিদুল ইসলাম রাফি (২৩)।
আটক অনিক মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার মোড়াবাড়ি গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে ও রাফি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ঘাগুর দোয়ার গ্রামের মো. রেজাউল করিমের ছেলে।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) দিনগত রাত আড়াইটা থেকে শনিবার ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত খুলনা মহানগর পুলিশের একটি বিশেষ দল নগরের গল্লামারী খোরশেদ নগর এলাকার হাসনাহেনা নামের চতুর্থ তলা বিল্ডিংয়ের নিচতলায় অভিযান চালিয়ে অনিক ও রাফিকে আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে দু’টি কালো রঙের রিমোট কন্ট্রোল, একটি ল্যাপটপ, ১৪৪ বক্স দেশলাই, ব্যাটারি ও বৈদ্যুতিক তারসহ বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। অনিক খুবির বঙ্গবন্ধু হলের ৩১৮ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র ও রাফি খান বাহাদুর আহছানউল্লাহ হলের ২০৩ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র।
পুলিশ আরও জানায়, অনিক বিবাহিত। তিনি ওই বাসাটি ভাড়া নিয়েছিলেন। তার স্ত্রী সোমাইয়া চৌধুরী যখন বাসায় থাকতেন না সেসময় অনিক ও তার বন্ধু রাফি বাসাটিতে অবস্থান করতেন।
খুলনা মহানগর পুলিশের কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির বলেন, গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর খানজাহান আলী থানা কৃষকলীগ কার্যালয় ও ৫ ডিসেম্বর আড়ংঘাটা থানার গাড়ি রাখার গ্যারেজে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। অনিক ও রাফি প্রাথমিকভাবে ওই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তারা নব্য জেএমবি সদস্য।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরও জানিয়েছে, স্বপ্রণোদিত হয়ে তারা জঙ্গি তৎপরতায় উদ্বুদ্ধ হয়েছে। বোমা তৈরির কলাকৌশলও তারা নিজেরা শিখেছে। জঙ্গি সংগঠনের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য তারা এ কাজে জড়িয়েছেন।
সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমতাজুল ইসলাম জানান, আটক নব্য জেএমবির সদস্য অনিক ও রাফির বিরুদ্ধে সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক শরীফ হাসান লিমন বলেন, জানুয়ারি মাসের প্রথম থেকেই ওই দুই ছাত্র নিখোঁজ ছিলেন। আমরা পুলিশের প্রেসব্রিফিংয়ের মাধ্যমে তাদের আটকের খবর ও জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত থাকার কথা জানতে পেরেছি। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২০
এমআরএম/আরবি/