ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

পুঠিয়ার সেই হত্যা মামলায় পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২১
পুঠিয়ার সেই হত্যা মামলায় পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব পুঠিয়ার শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম/ ফাইল ছবি

ঢাকা: পুঠিয়ার শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলায় তদন্ত কার্যক্রমে থাকা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তাকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।

উচ্চ আদালত এ মামলার তদন্তের জন্য ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

সে আদেশ অনুসারে সম্প্রতি পিবিআই তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। এর মধ্যে ওই মামলার সন্দেহভাজন আসামি আবুল কালাম ওরফে আবু হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

সোমবার (১৫ মার্চ) তার জামিন শুনানিতে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো.মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদেশে ১৫ এপ্রিল মামলার কেস ডকেট নিয়ে পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তাকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।  

একইসঙ্গে আসামিকে কেন জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল।

মো. খুরশীদ আলম জানান, গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর আবুল কালাম আবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি বিচারিক আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেন। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়।

এর আগে নুরুল ইসলামের মেয়ের করা রিটের শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর পুঠিয়া উপজেলার শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার এজাহার বদলে দেওয়ার অভিযোগের ঘটনায় রায় দেন হাইকোর্ট।

রায়ে আদালত আশা প্রকাশ করে বলেন, পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার তদন্ত তদারকিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবেন। বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা/সংস্থাকে অবিলম্বে কেস ডকেট পিবিআইয়ের নিকট হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হলো। পিবিআইকে তদন্তকালে মূল এজাহারের বর্ণনা, রাজশাহীর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অনুসন্ধান রিপোর্ট ও অনুসন্ধান কার্যক্রমে সাক্ষীদের সাক্ষ্য বিবেচনায় নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।

২০১৯ সালের ২২ জুলাই একটি জাতীয় দৈনিকে ‘এজাহার বদলে দিলেন ওসি’ শীর্ষক প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিকের প্রতিবেদন যুক্ত করে এ রিট করা হয়।

নুরুল ইসলামের মেয়ে নিগার সুলতানার ওই রিটের পর একই বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর ওসি সাকিল উদ্দিন আহমেদের এজাহার বদলে দেওয়ার ঘটনায় বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রুলও জারি করেন।

ওই আদেশের পর রাজশাহীর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনা তদন্ত করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দেন।

প্রতিবেদনে এজাহার বদলে দেওয়ার ঘটনায় ওসি সাকিল উদ্দিনসহ পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তা দায় এড়াতে পারেন না বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

২০১৯ সালের ১০ জুন নুরুল ইসলাম নিখোঁজ হন। পরদিন সকালে পুঠিয়ার একটি ইটভাটা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সেদিনই তার মেয়ে নিগার সুলতানা আটজনের নাম উল্লেখ করে পুঠিয়া থানার তৎকালীন ওসিকে একটি এজাহার দেন।

সেই এজাহারে শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনে পুঠিয়ার ওসির অবৈধ হস্তক্ষেপের বিষয়টি উল্লেখ ছিল। এ কারণে ওসি সাকিল উদ্দীন আহমেদ এজাহারটি রেকর্ড না করে নিগার সুলতানাকে তা সংশোধন করতে বলেন। নিগার সুলতানা ওসির বিষয়টি বাদ দিয়ে পুনরায় থানায় এজাহার দাখিল করেন। তখন তিনি এজাহারটি গ্রহণ করেন এবং কিছু সাদা কাগজে নিগার সুলতানার স্বাক্ষর নিয়ে তাকে চলে যেতে বলেন। পরবর্তীকালে নিগার সুলতানা পুঠিয়া থানা থেকে এজাহার ও মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণীর কপি সংগ্রহ করে দেখেন, প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে আসামিদের নাম-ঠিকানা লেখার কলামে ‘অজ্ঞাতনামা’ লেখা আছে।

আবার তার উল্লেখ করা আটজন আসামির পরিবর্তে সেখানে ছয়জনের নাম আছে। অথচ তিনি পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানাসহ আটজনকে আসামি করেছিলেন। নিগার সুলতানা এ বিতর্কিত এজাহারের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৯
ইএস/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।