ঢাকা, বুধবার, ২০ ভাদ্র ১৪৩১, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

দ্বৈত নাগরিক ১৩৯৩১ জন, হাইকোর্টে ইমিগ্রেশন পুলিশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৭ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২১
দ্বৈত নাগরিক ১৩৯৩১ জন, হাইকোর্টে ইমিগ্রেশন পুলিশ

ঢাকা: ১৩ হাজার ৯৩১ বাংলাদেশির দ্বৈত নাগরিকত্ব ও পাসপোর্ট রয়েছে বলে তথ্য দিয়েছে ইমিগ্রেশন পুলিশ।

তবে কারা অর্থপাচার এবং দুর্নীতির মাধ্যমে বিদেশে বাড়ি নির্মাণ বা কিনেছে তার তথ্য যাছাই করার সুযোগ ইমিগ্রেশন পুলিশের নেই বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

 

বুধবার (৩১ মার্চ) অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে এ তথ্য দেওয়া হয়। পুলিশের এই তথ্য যে কোনো দিন হাইকোর্টে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আদালতে দায়িত্বরত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

তিনি বলেন, বিষয়টি কার্যতালিকায় এলে নাগরিকত্ব বিষয়ে তথ্য আদালতে উপস্থাপন করা হবে।

অর্থপাচার ও দুর্নীতির মাধ্যমে যারা বিদেশে বাড়ি নির্মাণ করেছে অথবা কিনেছে, সেই বাংলাদেশিদের মধ্যে যাদের দ্বৈত নাগরিকত্ব ও পাসপোর্ট আছে এবং যারা দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশে-বিদেশে ঘন ঘন আসা-যাওয়া করছেন, তাদের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট।  

গত বছরের ২১ ডিসেম্বর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে আদেশ দেন।
ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় বিশেষ শাখার পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) এ তথ্য অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে জমা দেন।

এর আগে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এক আদেশে বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের সব ধরনের তথ্য চেয়েছিলেন।

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, রাজনীতিবিদরা নন, বিদেশে বেশি অর্থপাচার করেন সরকারি চাকুরেরা। সম্প্রতি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

গোপনে কানাডার টরেন্টোতে অবস্থিত বাংলাদেশিদের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমার ধারণা ছিল রাজনীতিবিদদের সংখ্যা বেশি হবে, কিন্তু আমার কাছে যে তথ্য এসেছে, যদিও এটি সামগ্রিক তথ্য নয়, সেটিতে আমি অবাক হয়েছি। সংখ্যার দিক থেকে আমাদের অনেক সরকারি কর্মচারীর বাড়িঘর সেখানে বেশি আছে এবং তাদের ছেলে-মেয়েরা সেখানে থাকে।  

মন্ত্রী বলেন, আমার কাছে ২৮টি কেস এসেছে এবং এর মধ্যে রাজনীতিবিদ হলেন চারজন। এছাড়া কিছু আছেন তৈরি পোশাকশিল্পের ব্যবসায়ী। আমরা আরও তথ্য সংগ্রহ করছি। পাচারে শুধু কানাডা নয়, মালয়েশিয়াতেও একই অবস্থা। তবে তথ্য পাওয়া খুব কঠিন। বিভিন্ন মিডিয়ায় যে তথ্য বের হয়, হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে, আসলে সংখ্যাটি তত নয়।  

পাচারের দায় বিদেশি সরকারও এড়াতে পারে না উল্লেখ করে আব্দুল মোমেন বলেন, যেমন সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে টাকা রাখলেন, সেই তথ্য আমাদের দেয় না। তারা ট্রান্সপারেন্সির কথা বলে, কিন্তু যদি বলি কার কার টাকা আছে, সেই তথ্য দাও, তখন তারা দেয় না। এটি একটি ডাবল স্ট্যান্ডার্ড।  

এ বিষয়ে আদালত অন্তর্বর্তীকালীন আদেশসহ রুল জারি করেন। রুলে টাকা পাচারকারী সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট টাকা পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

এ রুল বিবেচনায় থাকা অবস্থায় বিদেশে টাকা পাচারকারীদের নাম-ঠিকানাসহ সব ধরনের তথ্য (মামলাসহ, কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা) প্রতিবেদন আকারে জমা দিতে দুদক চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, এনবিআর চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২১
ইএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।