ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সোহরাওয়ার্দীতে গাছ কাটা: হাইকোর্টে আদালত অবমাননার আবেদন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪০ ঘণ্টা, মে ৯, ২০২১
সোহরাওয়ার্দীতে গাছ কাটা: হাইকোর্টে আদালত অবমাননার আবেদন

ঢাকা: আদালতের নির্দেশনার বাইরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রেস্টুরেন্ট স্থাপনের জন্য গাছ কাটায় সরকারের এক সচিবসহ তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়েছে।

একইসঙ্গে গাছ কাটা বন্ধ এবং রেস্টুরেন্ট ও দোকান নির্মাণের কার্যক্রমের ওপর স্থিতাবস্থা জারির আবেদন করা হয়েছে।

এছাড়াও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রকল্পের নকশার বিস্তারিত পরিকল্পনা ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিলের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

রোববার (০৯ মে) এ আবেদন করার কথা জানিয়েছেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ৪৮ ঘণ্টার সময় দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ, গণপূর্ত বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার মো. শামিম আখতার এবং চিফ অর্কিটেক্ট অব বাংলাদেশ মীর মনজুর রহমানকে ইমেইল যোগে নোটিশ পাঠানো হয়েছিলো।

নোটিশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মধ্যে গাছ কাটা বন্ধ করে রেস্টুরেন্ট/দোকান স্থাপনের কার্যক্রম বাতিল করার জন্য বলা হয়েছে অন্যথায় আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছেন মনজিল মোরসেদ।

নোটিশ দেওয়ার পর তিনি জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে ২০০৯ সালে একটি রিট পিটিশন দায়ের করলে বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ও বিচারপতি মো. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এ বিষয়ে আদেশে দেন।

আদেশে আদালত এক বা একাধিক কমিটি গঠন করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নিম্নলিখিত স্থানগুলি চিহ্নিত করে সংরক্ষণ করার নির্দেশ দেন।

এক. ১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ভাষণের স্থান
দুই. ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবর রহমানের ভাষণের স্থান
তিন. ১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় ও প্রাদেশিক সংসদে নির্বাচিত সদস্যদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের স্থান
চার. ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের স্থান
পাঁচ. ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের স্থান
ছয়. ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের স্থান
সাত. ১৯৭২ সালের ১৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ভাষণের স্থান এবং স্মৃতিফলক/জয় স্থাপনা ও সংরক্ষণ করার নির্দেশ দেন।

আদালতের নির্দেশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বিদ্যমান সব ধরনের স্থাপনা অপসারণ করে কমিটির চিহ্নিত স্থানগুলোতে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও বিবেচনাপ্রসূত দৃষ্টিনন্দন ও ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ স্মৃতিসৌধ নির্মাণ ও সংরক্ষণকরণ, তবে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর তারিখের আগের কোনো স্থাপনা এবং বিদ্যমান মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত স্মারক, ভাস্কর্য, স্মৃতিফলক বা জয় এই আদেশের আওতাবহির্ভূত হবে। অন্য সব স্থাপনা ব্যতিক্রমহীনভাবে অবিলম্বে অপসারণ করাসহ কয়েকটি নির্দেশনা দেন।

আদালতের রায় উপেক্ষা করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মধ্যে ব্যবসায়িক স্বার্থে রেস্টুরেন্ট/দোকান প্রতিষ্ঠার জন্য পরিবেশ ধ্বংস করে অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে, যা রায়ের সম্পূর্ণ পরিপন্থি বলে উল্লেখ করেন মনজিল মোরসেদ।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৯ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০২১
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।