ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সিনহা হত্যা: ৩ দিনে দুই জনের সাক্ষ্য গ্রহণ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২১
সিনহা হত্যা: ৩ দিনে দুই জনের সাক্ষ্য গ্রহণ

কক্সবাজার: কক্সবাজারে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় তিনদিনে দুই জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। তারা হচ্ছেন মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়ার ও ১ নম্বর সাক্ষী মেজর সিনহার সহযোগী সাহেদুল ইসলাম সিফাত।

 

বুধবার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যা সাতটায় সাক্ষ্য গ্রহণের তৃতীয়দিনে সিফাতের জেরা সম্পন্ন হলে আদালতের বিচারক কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল আগামী ৫, ৬, ৭ ও ৮ সেপ্টেম্বর পরবর্তী সাক্ষ গ্রহণের দিন ধার্য করেন।

প্রসঙ্গত, আলোচিত এ মামলার অভিযোগে মোট ৮৩ জন সাক্ষী অন্তভুক্ত করা হয়। এরমধ্যে গত তিনদিনে ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের কথা থাকলেও সেখান থেকে মাত্র দুইজনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন শেষ হয়েছে।

আদালতের কার্যক্রম শেষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম জানান, ১৫ জনের মধ্যে মাত্র দুইজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে।

তিনি পুনরায় অভিযোগ করে বলেন, আসামি পরিদর্শক লিয়াকতের পক্ষের আইনজীবী আদালতে বিভিন্ন অযুহাতে দরখাস্ত দিয়ে মামলা বিলম্বিত করার চেষ্টা করছেন। মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) সাক্ষী সিফাতের জেরাকালে আসামি পক্ষের আইনজীবী আদালতে মামলা তদন্তকালীন সময়ে লিয়াকতের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে করা সইকে তার নিজের সই নয় বলে দরখাস্ত দিয়েছেন। যেটা মোটেও সমীচীন নয়।  

আগামী ধার্যদিনে ১০ থেকে ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পিপি ফরিদ।

অপর দিকে বরখাস্ত ওসি প্রদীপের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত জানান, মামলার এজহারে এবং জবানবন্দিতে এক নম্বর সাক্ষী সাহেদুল ইসলাম সিফাতের বক্তব্যে গরমিল রয়েছে। এজাহারের বিভিন্ন অসংগতি কথা উল্লেখ করে তিনি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

বুধবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে সিনহার সঙ্গী সাহেদুল ইসলাম সিফাতের মূলতবি সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে দিনের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে জেরা কার্যক্রম। এর আগে মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার প্রথম দিনে আদালতে জবানবন্দি দেন মামলার বাদী ও সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। তাকে আসামি পক্ষের আইনজীবীদের জেরা শেষ হয় দ্বিতীয় দিন বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে।

এরপর আদালতে সাক্ষ্য দেন ঘটনার সময় সিনহার সঙ্গে একই গাড়িতে থাকা সঙ্গী সাহেদুল ইসলাম সিফাত। দ্বিতীয় দিনে তার (সিফাত) সম্পূর্ণ সাক্ষ্যগ্রহণ সম্ভব হয়নি। এতে রাত ৮টায় বিচার কার্যক্রম মূলতবি ঘোষণা করে তৃতীয়দিনে তা গ্রহণ করা হবে বলে আদেশ দেন আদালত।

বুধবার সকাল পৌনে ১০টায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে করে ১৫ আসামিকে কড়া পুলিশ পাহারায় আদালতে আনা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম বলেন, বুধবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে সাক্ষ্যদানে অংশ নেওয়া সিনহার সঙ্গী সিফাতের মূলতবি সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে মামলার তৃতীয়দিনের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। তার সাক্ষ্য দেওয়া শেষ হলে আসামিদের আইনজীবীরা জেরা শুরু করেন। এ জেরা শেষ হয় বুধবার সন্ধ্যায়।  

তিনি জানান, প্রথম দফায় তিনদিনে সাক্ষ্যদানের জন্য মামলার ৮৩ আসামির মধ্যে ১৫ জনকে আদালতে উপস্থিত থাকতে সমন জারি করা হয়েছিল। গত তিনদিনে দুই জনের সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন সম্পন্ন হলো।  

গত বছর ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা। এ ঘটনার ৫ দিন পর সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ ও বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে র‌্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়।

তদন্ত শেষে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন র‌্যাব ১৫-এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাস ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

মামলার আসামিরা হলেন- বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের সাবেক পরির্দশক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ, এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল-মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, এপিবিএন এর তিন সদস্য এসআই মোহাম্মদ শাহজাহান, কনস্টেবল মোহাম্মদ রাজীব, মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, পুলিশের মামলার তিন সাক্ষী নুরুল আমিন, নেজাম উদ্দিন, মোহাম্মদ আয়াজ, টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও সাগর দেব।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২১
এসবি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।