জ্বল জ্বল করছে লাল টকটকে দুইচোখ! সঙ্গে আছে ক্ষুরধার লিকলিকে ক্ষুধার্ত জিহবা! মুহুর্তেই যেন হলুদাভ দীপ্তি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়বে মানুষের ওপর। না, অতটা ভয়ের কিছু নেই।
প্রতি বছর ৩১ অক্টোবর বিশ্বের অনেকগুলো দেশে বেশ আড়ম্বরভাবেই পালিত হয় হ্যালোয়েইন উৎসব। হ্যালোয়েইন উৎসবে আয়োজনের মধ্যে আছে ট্রিক-অর ট্রিট, ভুতের ট্যুর, বনফায়ার, আজব পোশাকের পার্টি, ভৌতিক স্থান ভ্রমণ, ভয়ের চলচ্চিত্র দেখা ইত্যাদি। আইরিশ ও স্কটিশ অদিবাসীরা উনিশ শতকে এই ঐতিহ্য উত্তর আমেরিকায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোতেও এই উৎসব ছড়িয়ে পড়ে।
বিশেষত স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোতে। মূলধারার ধর্মীয় উৎসব থেকে বেরিয়ে এসে হ্যালোয়েইন এখন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যপূর্ন অনুষ্ঠানে রূপ নিয়েছে। প্রত্যেক নতুন বছর শুরুর আগের রাতে মৃত আত্মারা নতুন দেহ সংগ্রহের জন্য জীবিতদের বিশ্বে আগমন করে বলেই আইরিশ ও ওয়েলস সম্প্রদায়ের মানুষের বিশ্বাস। আর তাই গ্রামবাসীরা মৃত ওই আত্মাদের কাছ থেকে বাঁচার জন্য তাদের পবিত্র বেদি, পবিত্র ওক বনের ছোট পাহাড়ে আগুন জ্বালিয়ে রাখতো পরবর্তী সকাল হওয়া পর্যন্ত। আর সেই সঙ্গে চলতো আগুনের চারধারে বিচিত্র পোশাক পরে উদ্ভট সব নাচ আর গান। শুধু কি তাই? বিভিন্ন বীজ থেকে শুরু করে প্রাণীদের বলি দিয়েও উৎসর্গ করা হতো পাপাত্মাদের উদ্দেশ্যে!
এখন প্রতিবছরই ইউরোপে হ্যালোয়েইন উৎসব জমকালো ভাবে আয়োজন করা হয়। এবছরও হলিউডের ভৌতিক সব চরিত্রের অবয়বে নিজেকে সাজাতে এবং সেই চরিত্রানুযায়ী একে অন্যকে ভয় দেখানোর প্রচেষ্টাতে সবাই মোটামুটি হ্যালোয়েইনের আগে প্রস্তুত হয়ে আছে। যত ভীতিকর ভাবে নিজেকে উপস্থাপন করা যায় আনন্দ যেন ততই বাড়তে থাকে।

সেই সঙ্গে থাকে ভৌতিক আলোকসজ্জ্বার নানারকম সামগ্রী। উৎসবে বাবা মায়ের সাথে যোগ দিতে শিশুদের আগ্রহেরও কোন জুড়ি নেই। পুরো উৎসব জুড়ে শিশুদের কাল্পনিক জগতের বাসিন্দাদের উপস্থিতি। শিশুদের কল্পনাকে আরেক ধাপ উসকে দিতে হ্যালোয়েইনের আসলেই কোন কমতি নেই। আর তাই সবার জন্য উৎসবমুখর হয়ে উঠুক হ্যালোয়েইন। হ্যাপি হ্যালোয়েইন।