ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নারীর উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২২
নারীর উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন

ঢাকা: সুইডেন দূতাবাসের পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিভাগের ফার্স্ট সেক্রেটারি নায়োকা মার্টিনেজ ব্যাকস্ট্রম বলেছেন, কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ, লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ, নারীর অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে কৌশলগত দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

রোববার (১১ ডিসেম্বর) ইউএন উইমেন বাংলাদেশের আয়োজনে রাজধানীর লেকশোর হোটেলে কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ের প্রভাব নিয়ে ‘জেন্ডার ইক্যুইলিটি ইন পোস্ট-কোভিড কনটেক্সট’ শীর্ষক এক আলোচনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন নায়োকা মার্টিনেজ ব্যাকস্ট্রম।

বাংলাদেশের সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি দুর্যোগ মোকাবিলা, জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারী-পুরুষের সমঅধিকার নিশ্চিতে বাংলাদেশ এবং ইউএন উইমেনের অবদানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

আলোচনার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল কোভিড-পরবর্তী সময়ে নারী, শিশু ও পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও মূল্যায়ন করা, সেই সঙ্গে গৃহীত পদক্ষেপগুলোর বাস্তবায়নের জন্য নীতি প্রণয়ন করা। ২০২১ সালে বাংলাদেশ তার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছিল। এই ৫০ বছরে নারীর ক্ষমতায়ন, নারী, শিশু ও পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিতকরণ, দুর্যোগ মোকাবেলায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে। এছাড়াও কিছু ক্ষেত্রে বৈষম্য বিদ্যমান থাকলেও নারীর সিদ্ধান্ত গ্রহণ, স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিযুক্তি প্রভৃতি ক্ষেত্রে উন্নতি সাধন করেছে।

বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব এবং এর থেকে উত্তরণের জন্য ন্যাশনাল রেজিলিয়েন্স প্রোগ্রাম ২০২০ সালে কোভিড-১৯ এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের উপর একটি সমীক্ষা পরিচালনা করে। যেখানে নারী, শিশু ও কিশোরীদের স্বাস্থ্যগত, মানসিক ও পারিপার্শ্বিক প্রতিবন্ধকতাগুলো আলোচনার পাশাপাশি এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য ও উপাত্ত জানানো হয়।

বাংলাদেশে মহামারির প্রাদুর্ভাব কমলেও এখনও নিয়মিত প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দার মতো নতুন এবং চলমান সমস্যাগুলির সাথে লড়াই করতে হচ্ছে। এসব সমস্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হন নারীরা। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কোভিড-১৯ এবং অন্যান্য জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা দ্বারা প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থ নারীরা বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ে নারী ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠি সংকটাপন্ন পরিস্থিতি মোকাবেলার দক্ষতা তৈরি এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউএন উইমেন বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ দিয়া নন্দা। শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশেরে আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটে দুর্যোগের প্রভাব ব্যাপক, যা পারিবারিক, সামাজিক এবং মানসিক সাস্থের ব্যাঘাত ঘটায়। ইউএন উইমেন সর্বদা সমাজে নারী পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠা এবং নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করে, যা স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ করতে সহায়তা করে।

তিনি আরও বলেন, নারীদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে দ্রুত অগ্রসমান করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা দূরীকরণে ইউএন উইমেন এর গৃহীত পদক্ষেপ গুলোর বাস্তবায়নে সবার অংশগ্রহণ কামনা করেন।

এরপর ‘জেন্ডারড ইম্প্যাক্ট অব কোভিড ১৯ অ্যান্ড ডিজার্টার্স ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এটি পরিচালনা করেন ইউএন উইমেন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট দিলরুবা হায়দার। অনুষ্ঠানে প্যানেল স্পিকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. নাজনীন আহমেদ, কান্ট্রি ইকোনমিস্ট, ইউএনডিপি, শামসুদ্দোহা, চিফ এক্সিকিউটিভ, সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-সিপিআরডি, শাহীন আনাম, নির্বাহী পরিচালক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এবং সাজিদ রায়হান, স্টার্ট ফান্ড নেটওয়ার্ক।

উল্লেখ্য, ইউএন উইমেন সরকার এবং সুশীল সমাজের সাথে সহযোগিতার মাধ্যমে আইন, নীতি এবং পরিষেবাগুলির সমন্বয়ের মাধ্যমে গৃহীত কার্যক্রমগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরনে কাজ করে যাচ্ছে। যাতে বিশ্বব্যাপী নারী, শিশু ও মেয়েদের কল্যাণ সাধিত হয়। ইউএন উইমেন বিশ্বব্যাপী নারী পুরুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে সাধুবাদ জানায় এবং এ লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী কাজ করে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২২
এমকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।