ঢাকাঃ গণপরিবহনের তীব্র সংকটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন গুলিস্তান হয়ে ঘরে ফেরা যাত্রীরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও তারা কোনো যানবাহন পাচ্ছেন না।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সরেজমিনে গুলিস্তান মোড়ে কয়েক হাজার মানুষকে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
যাদের মধ্যে বেশির ভাগ যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, রায়েরবাগ, চিটাগাং রোড, ধোলাইপাড়ের যাত্রী। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যাত্রী আছেন যারা গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন।
সন্ধ্যার পর থেকেই এ সংকট শুরু হয়। বৃহস্পতিবার উপলক্ষে বাড়তি যাত্রীর চাপ এ সংকটের একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ। তবে সবচেয়ে বড় কারণ হানিফ ফ্লাইওভারের ওপরে এবং নিচের সড়কের তীব্র যানজট। যানজটের কারণে এদিকে গাড়ি আসতে পারছে না।
লম্বা সময় পরে দু-একটি বাস আসলে তাতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন অসংখ্য মানুষ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেউ কেউ বাসের দরজায় ঝুলে, কেউ খোলা পিকআপ ভ্যানে করে ঘরে ফেরার চেষ্টা করছেন। এ ধরনের গাড়ি সংখ্যাও খুব কম।
রাজধানীর রায়েরবাগের বাসিন্দা ইকবাল হোসেন (৫০) জানান, তিনি সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও কোনো গাড়ি পাননি।
তিনি বলেন, বয়স হয়েছে, এতটা পথ হেঁটে যাওয়া সম্ভব নয়। তার ওপর রাস্তায় ধুলো-বালি, সড়কের বেশির ভাগ অংশেই ফুটপাত নেই।
স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ যাবেন আবুল বাশার। তিনি বলেন, প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কোনো গাড়ি পাইনি।
আবুল বাশার জানান, তিনি খুবই খারাপ পরিস্থিতিতে পড়ে গেছেন। গুলিস্তান থেকে গ্রামে যাওয়ার গাড়ি পাচ্ছেন না, আবার বাসায় ফিরে যাবেন যে সেই গাড়িও পাচ্ছেন না।
এদিকে গুলিস্তান থেকে রায়েরবাগ আসার পথে দেখা গেছে- গুলিস্তান ও সায়েদাবাদ হয়ে ঢাকায় প্রবেশ করার পথ হানিফ ফ্লাইওভারের ওপরে ভয়াবহ জ্যাম। এ জ্যাম গুলিস্তান থেকে শুরু হয়ে পুরো ফ্লাইওভারের ওপর এবং ঢাকার অন্যতম প্রবেশ পথ যাত্রাবাড়ি-চিটাগাং রোডের কুতুবখালী, শনির আখড়া, রায়েরবাগ, মাতুয়াইল, সাইনবোর্ড এলাকা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে।
গুলিস্তানের সড়কগুলো দখল করে দোকানপাট বসানো এবং টোল আদায়ে ধীর গতির কারণে হানিফ ফ্লাইওভারের ওপর প্রায়ই জ্যাম হয়।
এ রূটের বেশ কয়েকজন যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, এ যানজট এবং পরিবহন সংকট নিয়ে কারো কোনো মাথা ব্যথা নেই। আজ হয়তো সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে কিন্তু এ রূটে এ দৃশ্য নিয়মিত ঘটনা।
বাংলাদেশ সময়: ০০০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০২২
এমইউএম/জেডএ