ঢাকা: ভারত সহয়তা না করলে মাত্র ৯ মাসে স্বাধীনতা পেতাম না। অন্যদেশের মতো ৫ বছর কিংবা আরও দীর্ঘায়িত হতো বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন,আরও কিছু কিছু সমস্যা আছে, বিশেষ করে পানির সমস্যা আছে। আমরা আশাকরি কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যারও সমাধান হবে। তার মাধ্যমে দু'দেশের বন্ধুত্ব আরও গভীর হবে, সেই বন্ধুত্ব স্থায়ী হবে।
শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ‘বিজয়ী বাংলার স্বর্ণজয়ন্তী বাস্তবায়ন পর্ষদ’ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী স্মৃতিসৌধ কিছুদিনের মধ্যেই উদ্বোধন হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, একাত্তরে মিত্র বাহিনীর যেসব সেনা এদেশে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের স্মরণে আশুগঞ্জে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী স্মৃতিসৌধ নির্মিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে এসময় তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালে ইংরেজদের যখন বিতাড়ন করা হয় তখন মুসলমানদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান সৃষ্টি হয়। কিন্তু ৫৬ ভাগ বাঙালিকে তার ভাষার অধিকার দিতে অস্বীকার করে পাকিস্তানের শাসকরা। ফলে পাকিস্তান আন্দোলনের তরুণ নেতা শেখ মুজিব অনুভব করেছিলেন যে, সেখানে বাঙালিরা কোনো অধিকার পাবে না। ব্রিটিশদের পরিবর্তে নতুন পাকিস্তানি শাসক এসেছে। এরপর বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তির লক্ষ্যে ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন।
মন্ত্রী বলেন, ১৯৫৬ সালে আদমজী কারখানায় ইস্কান্দার মির্জা বাঙালি-বিহারী দাঙ্গা লাগিয়ে ৯২(ক) ধারা জারি করে শেরে বাংলার মন্ত্রীসভা বাতিল এবং বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করেছিল। এরপর বঙ্গবন্ধু ১৯৬৬ সালে ৬ দফা করলেন, ধীরে ধীরে দেশকে স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যান।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ভারত আমাদের অস্ত্র দিয়েছে, ট্রেনিং দিয়েছে, এক কোটি শরণার্থীকে অন্ন-বাসস্থানের সাহায্য করেছে। ইন্দিরা গান্ধী সে সময় শরণার্থীদের বলেছিলেন পূর্ণ জীবনের নিরাপত্তা ও অধিকার নিয়ে আপনারা আবারও দেশে ফিরতে পারবেন।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুকে যখন ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলানোর চেষ্টা শুরু করে পাকিস্তান, তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইন্দিরা গান্ধী এর বিরুদ্ধে সারাবিশ্বে জনমত তৈরি করেন। ব্যক্তিগতভাবেও সব জায়গায় চেষ্টা শুরু করেন। দেশ স্বাধীনের পরে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে তিনমাসের মাথায় ভারতীয় সেনাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী।
তিনি বলেন, ভারত সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও নাতি-নাতনীদের মুজিব স্কলার দেওয়া হয়। জটিল রোগে আক্রান্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সহযোগিতা করবে ভারত।
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্রের রচিয়তা ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতির প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক, ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল কাদের মজনু, অল ইন্ডিয়া বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. জয়দীপ মুখার্জি, পশ্চিম বাংলার কবি বিশ্বনাথ লাহা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭, ডিসেম্বর ১৭, ২০২২
এনবি/এমএমজেড