ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, কোন দেশি-বিদেশি শক্তি যাতে দেশের সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে না পারে সে ব্যাপারে আমাদের সবাইকে সদা সতর্ক থাকতে হবে। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আজকে বিশ্বমহলে প্রশংসিত, আমরা চাই না ধর্মকে আবর্তন করে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটুক।
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) ঢাবির আর. সি. মজুমদার আর্টস অডিটোরিয়ামে ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’ আয়োজিত সম্প্রীতি সম্মিলন উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সংগঠনের আহ্বায়ক পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে সম্মিলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুল্লাহ আল হাওলাদার। অনুষ্ঠানে ‘সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফার্সি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. বাহাউদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, আমরা যদি ধর্মের শাখা-প্রশাখা বাদ দিয়ে শুধুমাত্র ধর্মকে মূল উপজীব্য বিষয় হিসেবে বিবেচনা করি তাহলে এই ধর্মীয় উস্কানি সহিংসতা আসতো না। কিন্তু আমরা যখন ধর্মের মৌলিক বিষয় থেকে দূরে সরে গেলাম তখনই ধর্মীয় সহিংসতা ছড়াতে লাগলো।
নিজের ধর্মের প্রতি যে ব্যক্তি শ্রদ্ধাশীল তিনি অন্য কোনো ধর্মকে ঘৃণা করতে পারেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বের যা কিছু মহৎ অর্জন সবকিছুই অর্জিত হয়েছে একটা সাধারণ মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে। ধর্মের ওপর ভিত্তি করে নয়। সেই মূল্যবোধটি হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক মানবিক মূল্যবোধ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও এই অসাম্প্রদায়িক মানবিক মূল্যবোধে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত হয়েছিলেন। সেই কারণে মহান মুক্তিযুদ্ধে সংগঠন এবং পটভূমি তৈরির পেছনে তিনি এই মূল্যবোধটি উপজীব্য বিষয় হিসেবে ব্যবহার করেছেন এবং এটির মাধ্যমে বাংলা ভাষাভাষী মানুষকে তিনি ঐক্যবদ্ধ করতে সফল হয়েছিলেন এবং সুমহান অর্জন স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন।
উপাচার্য আরও বলেন, বাংলার এই মাটি কোনোদিন সাম্প্রদায়িক ছিল না। যুগে যুগে অনেক শাসকগোষ্ঠী বাংলায় সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়ানোর চেষ্টায় লিপ্ত ছিল। কিন্তু তার একটাও এদেশে টেকেনি। কিন্তু দুর্ভাগ্য এখনো অনেক সময় এরকম অনেক গোষ্ঠী মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে এবং দেশের সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে।
তিনি বলেন, যে সমাজে ৯ মিনিট ধরে একটা মানুষকে চেপে রেখে হত্যা করা হয়, যে সমাজে বন্দুকধারী স্কুলের ছোট্ট ছোট্ট ছাত্র-ছাত্রীদেরকে গুলি করে হত্যা করে সেই সমাজের মানুষজন যখন এখানে এসে বড় বড় কথা বলে তখন খুবই বিস্মিত হই। তাই আমাদেরকে এই দেশি-বিদেশি অপশক্তির বিরুদ্ধে সদা সতর্ক থাকতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯,২০২২
এসকেবি/এমএমজেড