ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শীতের পিঠা বেচে চলে তাদের জীবন

হারুন-অর-রশীদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২২
শীতের পিঠা বেচে চলে তাদের জীবন ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সামনে পিঠা বেচেন লাইলী বেগম

ফরিদপুর: শীতের শুরুতেই ফরিদপুর শহর বা গ্রামের অলিগলিতে জমে উঠেছে মৌসুমি পিঠার দোকান। সেখানে মিলছে হরেক রকমের পিঠা।

এই পিঠা কারও বাড়তি আয়ের উৎস, কারো-বা জীবিকার প্রধান মাধ্যম।  

পিঠা বেচেই এখন জীবন চলে ফরিদপুরের কয়েক শতাধিক পরিবারের।  

ফরিদপুরে বিভিন্ন মোড় ও পাড়া-মহল্লায় স্বল্প আয়ের লোকজন গড়ে তুলেছে পিঠার দোকান। জেলার বাসস্ট্যান্ড, রেলওয়ে গেট, প্রেসক্লাবের সামনে, বিভিন্ন মার্কেটের সামনে, ফায়ার সার্ভিস অফিসের সামনে, কলেজ মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় এসব পিঠার দোকান বসেছে। চিতই পিঠা ৫ ও ভাপা পিঠা ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য পিঠা বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে।  

শীতকে উপলক্ষ্য করে ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন মোড়ে গড়ে উঠেছে ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান। বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত এসব দোকানে পিঠার স্বাদ নিতে ভিড় করছেন মানুষ।  

সন্ধ্যার পর ভিড় বাড়ে। রাত ১০টা পর্যন্ত চলে বিক্রি। হীম-শীতল পরিবেশে গরম পিঠা খেতে পরিবার নিয়ে বাড়ির সবাই বেরিয়ে পড়েন।

ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে পিঠার দোকানে এমন ভিড়ের দেখা মেলে শীতের প্রতি সন্ধ্যায়।  

সেখানে চল্লিশোর্ধ্ব কোহিনূর বেগম মাটির চুলায় চিতই, ভাপাসহ নানা পিঠা তৈরি করছেন। এর পাশেই ছোট ছোট বাটিতে থরে থরে সাজানো শর্ষে, মরিচ, চ্যাপা শুঁটকিসহ নানা স্বাদের ভর্তা। সেখানে ক্রেতাদের ভিড়। কেউ খাচ্ছেন, কেউবা কাগজের ঠোঙায় মুড়িয়ে পিঠা নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে।

পিঠা বিক্রির ফাঁকেই কোহিনূর বেগম বলেন, স্বামী ১০ বছর আগে তাকে ছেড়ে অন্য জায়গায় ফের বিয়ে করেছেন। এরপর থেকে খুব কষ্টে চলছে তার দিনগুলো। কষ্ট ঘুঁচাতে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অন্যের বাসায় কাজ করি। আর বিকাল থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত এ পিঠা বিক্রি করছি। পিঠা বিক্রিও হচ্ছে বেশ ভালো। প্রতিদিন ২-৩ হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করি । লাভও হয় ভালো।

ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সামনে পিঠা বেচেন লাইলী বেগম। বয়স পঞ্চাশের মতো। তিনি বলেন, শীতকালেই  পিঠা বেশি বিক্রি হয়ে। আমি চিতই, ভাপা, পাটিসাপটাসহ তিন-চার রকমের পিঠা তৈরি করছি। চিতই ও ভাপা পিঠা খাওয়ার জন্য থাকছে নারকেল, খেঁজুরের গুড়সহ বাহারি পদের ভর্তা। লাভ হচ্ছে ভালোই।

পিঠা খেতে এসেছেন শহরের লক্ষীপুর এলাকার পঞ্চাশোর্ধ জুলেখা বেগম।  

পিঠার স্বাদ নিতে নিতে বললেন, আগে চুলার পাশে বসে পিঠা খাওয়ার ছবি এখনো চোখে ভেসে ওঠে। এখন নগর জীবনে সেসব উঠে গেছে। শহরের বাড়িতে পিঠা বানানো ঝামেলা। এ ছাড়া সরঞ্জামও নেই। আর বানালেও দোকানের মতো হয় না। তাই ঝামেলা কমাতে দোকান থেকেই কিনে নিচ্ছি। এরা আছে বলেই পিঠা খাওয়ার সুযোগ হয়।

পিঠা কিনতে আসা আরেকজন শহরের পূর্ব খাবাসপুর এলাকার সাইদুল ইসলাম (২৫)। তিনি বলেন, এখান থেকে চিতই পিঠা কিনে খেলাম। স্বাদে ও গুনে অসাধারণ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২২
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।