ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

জামালপুরে শীতে কদর বাড়ছে মিল্লির

গোলাম রাব্বানী নাদিম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২৩
জামালপুরে শীতে কদর বাড়ছে মিল্লির বিক্রি হচ্ছে মিল্লি।

জামালপুর: জামালপুরের পথে পথে মিলছে মিল্লি। আঞ্চলিকতা ভেদে মিল্লিকে কেউ বলে মিলানী, কেউ মেন্দা আবার কেউ বলে পিঠালী।

ঐতিহ্যগতভাবে জামালপুরের মানুষের কাছে এটি একটি প্রিয় খাবার। বিয়ে বা বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে পিঠালীই জামালপুরের মানুষের প্রিয় খাবার। মিল্লি ছাড়া যেন আয়োজনই থাকে অপূর্ণ।

বিশেষ করে শীতকালে মেন্দা খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। গরম গরম মেন্দার চেয়ে ঠাণ্ডা মেন্দার কদর অনেক বেশি। রান্নার প্রক্রিয়া একটু জটিল হওয়ায় মেন্দা রান্না করে বিক্রিও করা হয়। প্রতি কেজির দাম ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায় এসব মেন্দা।

সোমবার (২ জানুয়ারি) সীমান্তবর্তী কামালপুর বাজারে দেখা যায় মেন্দা বিক্রির দৃশ্য। স্থানীয় হেলাল মিয়া বিক্রি করছেন মেন্দা। তিনি পেশায় বাবুর্চী। তিনি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি) দীর্ঘদিন বাবুর্চী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অবসর নেওয়ার পরও সেই পেশা ধরে রেখেছেন ষাটোর্ধ্ব হেলাল মিয়া।

জামালপুরের ঐতিহ্যবাহী মিল্লি তরকারি রান্না করে অনেক খ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি।
সারা বছরই গ্রামে-গঞ্জে ছুটে বেড়ান চল্লিশা (মজলিস), মিলাদ, বিয়ের অনুষ্ঠানে রান্না করতে। বিশেষ করে মিল্লি তরকারি রান্না করে এলাকায় নামডাক, যশ তৈরি করেছেন হেলাল মিয়া।

গরু বা মহিষের মাংস এবং চালের আটা দিয়ে মিল্লি তৈরি হয়। জামালপুরে শীতের দিন এলেই রান্না করা তরকারি মিল্লির কদর বেড়ে যায়। ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নের কামালপুর মোড়ে নিজের হাতে রান্না করা মিল্লি তরকারি বিক্রি করছিলেন হেলাল মিয়া।

তার সঙ্গে সহকারী ছিল আরও দুইজন। প্রতি কেজি তরকারি বিক্রি হচ্ছিল ১৫০ টাকায়। সকালে গরু জবাই করে মিল্লি তরকারি রান্না করেন তিনি। যে যার মত সামর্থ্য অনুযায়ী ৫ কেজি, ১০ কেজি, ২০ কেজি পর্যন্ত তরকারি নিয়ে যাচ্ছেন।

অনেকেই জামাই, বেয়াই ও আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে মিল্লি কিনে পাঠিয়েদিচ্ছেন। হেলাল মিয়ার রান্না করা মিল্লি নিতে হলে আবার আগেই বলে রাখতে হয়। তা না হলে সহসাই পাওয়া খুবই কষ্টকর হয়। কারণ শীতের দিনে হেলালের মিল্লির চাহিদা বেড়ে যায় বহুগুণ।  

বিভিন্ন উপজেলা থেকে এসেও এই তরকারি নিয়ে যান ভোজনপ্রেমীরা। সাধারণত প্রতি সোমবার কামালপুর মোড়ে বিক্রি হয় হেলালের মিল্লি। এই মিল্লি এতই জনপ্রিয়তা পেয়েছে যে দূর-দূরান্ত থেকে ফোন করে অর্ডার দিয়ে এই তরকারি নিয়ে যান।
এই তরকারি বিক্রি করেই বাজিমাত করেছেন হেলাল মিয়া। মিল্লি বিক্রি কেমন চলছে জানতে চাইলে হেলাল মিয়া জানান, শীত এলেই তার রান্না মিল্লি তরকারি কিনতে উপচে পড়ে মানুষ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।