ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৭ কার্তিক ১৪৩২, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা দিবস

৫০ হাজার চালকের চক্ষু-পরীক্ষা ও ৩০ হাজার চশমা বিতরণ 

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:২৭, অক্টোবর ২২, ২০২৫
৫০ হাজার চালকের চক্ষু-পরীক্ষা ও ৩০ হাজার চশমা বিতরণ 

জাতীয় সড়ক-নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে বৈশ্বিক সামাজিক উদ্যোগ ভিশনস্প্রিং বাংলাদেশে চালকদের জন্য বিনামূল্যে চক্ষু-পরীক্ষা ও ৩০ হাজার চশমা বিতরণ কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে।  

ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির (বিআরটিসি) সঙ্গে অংশীদারত্বে এবং সরকারের সহযোগিতায় চালু হওয়া এই উদ্যোগের মাধ্যমে আগামী দুই বছরে ৫০ হাজার বাস–ট্রাকচালকের দৃষ্টি পরীক্ষা ও ৩০ হাজার জোড়া চশমা বিতরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।



বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালে পাঁচ হাজার ২৪ সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচ হাজার ৩৪৯ জন নিহত ও ছয় হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়। যেখানে উল্লেখযোগ্য অংশ পথচারী ও যুবক। চালকদের ঝাপসা বা ত্রুটিপূর্ণ দৃষ্টি সড়ক-নিরাপত্তার এক নীরব ঝুঁকি; সহজ একটি চশমা অনেক সময় নিরাপদ যাত্রা ও প্রাণঘাতী ঝুঁকির মধ্যে ফারাক গড়ে দেয়। এই প্রেক্ষাপটেই ভিশনস্প্রিংয়ের বৈশ্বিক ‘সি টু বি সেইফ’ প্রোগ্রাম বাংলাদেশে রোল-আউট হলো।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার, বিআরটিসির চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ মোল্লা (অতিরিক্ত সচিব), বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মো. সাইফুল আলম, ভিশনস্প্রিংয়ের কান্ট্রি ডিরেক্টর মিশা মাহজাবীন,বাং লাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আব্দুর রহিম বক্স দুদু ও ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান।

ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার বলেন, ডিটিসিএতে আমরা আমাদের তরুণ সহকর্মীদের সহযোগিতায় এই মডেলটি তৈরি করতে পেরে গর্বিত, যা উদ্ভাবন ও সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রতি আমাদের অঙ্গীকারকে প্রতিফলিত করে। ভিশনস্প্রিংয়ের সাথে অংশীদারত্বে আমরা উদ্যোগটি প্রসারিত করছি—যাতে সবার জন্য নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক গতিশীলতা নিশ্চিত হয়। ডিটিসিএ যাত্রী ও বৃহত্তর সমাজের কল্যাণে এমন প্রচেষ্টাকে সমর্থন ও টিকিয়ে রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ভিশনস্প্রিংয়ের কান্ট্রি ডিরেক্টর মিশা মাহজাবীন বলেন, চালকদের জন্য পরিষ্কার দৃষ্টি কোনো বিলাসিতা নয়—এটি আবশ্যিকতা। বাংলাদেশ সরকার, ডিটিসিএ ও বিএসপিএমএসের সমন্বয়ে আমরা একটি সহজ কিন্তু কার্যকর সমাধান দিচ্ছি, যা দুর্ঘটনা প্রতিরোধ, জীবিকা রক্ষা এবং সবাইকে নিরাপদ রাখায় সহায়তা করবে।

প্রোগ্রামের মূল বৈশিষ্ট্য হলো, ফ্রি ভিশন স্ক্রিনিং: প্রধান বাস/ট্রাক টার্মিনাল, গ্যারেজ ও স্ট্যান্ডে মোবাইল টিম। অন-সাইট চশমা বিতরণ: তাৎক্ষণিকভাবে রেডিমেড স্পেকট্যাকলস; প্রয়োজনে প্রেসক্রিপশন। সচেতনতা ও ফলো-আপ: দৃষ্টি-সচেতনতা সেশন, রেফারেল ও ফলো-আপ কেয়ার। টার্গেট (২ বছর): ৫০ হাজার চালকের দৃষ্টি পরীক্ষা, ৩০ হাজার চশমা বিতরণ। নীতিগত সমর্থন: সরকারের সহযোগিতায় ডিটিসিএর মাধ্যমে বাস্তবায়ন; বিএসপিএমএসের অপারেশনাল সাপোর্ট।

এই উদ্যোগটি জাতিসংঘের গ্লোবাল প্ল্যান ফর রোড সেফটি ও হুর এসপিইসিএস২০৩০ অ্যাজেন্ডার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ; যেখানে সড়ক-দুর্ঘটনা ও মৃত্যু কমাতে দৃষ্টি সংশোধনকে একটি সাশ্রয়ী ও কার্যকর ব্যবস্থা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ভারত, নাইজেরিয়া ও জাম্বিয়ায় ভিশনস্প্রিংয়ের ‘সি টু বি সেইফ’ ইতোমধ্যে ১০ লাখেরও বেশি বাণিজ্যিক চালক ও পরিবহন কর্মীর দৃষ্টি পরীক্ষা করেছে। বাংলাদেশে এই সফল অভিজ্ঞতা থেকেই রোল-আউট শুরু হলো।

এএটি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।