ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মানিকগঞ্জে বি সি ডি এস কোর্সে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০২৩
মানিকগঞ্জে বি সি ডি এস কোর্সে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ 

মানিকগঞ্জ: বাংলাদেশ কেমিস্ট্র এবং ড্রাগিস্ট সমিতি মানিকগঞ্জ শাখার প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অনলাইন ভর্তিসহ নানাভাবে অতিরিক্ত তিন থেকে চার হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে শাখার সভাপতি মো. রেজা মিয়ার বিরুদ্ধে।  

গত ২০২২ সালের ১১ই নভেম্বর মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মো. রেজা মিয়া ওরফে রাজা মিয়ার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে বি সি ডি এস কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিল ৬১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কয়েক দিন পর ওই সব শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেন মোহাম্মদ রেজা মিয়া।  

সরেজমিনে অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, মানিকগঞ্জ জেলা শহরের জরিনা কলেজে প্রতি শুক্রবার বাংলাদেশ কেমিস্ট্র এবং ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি মো. রেজা মিয়া ওরফে রাজা মিয়ার নিযুক্ত শিক্ষকরা ক্লাস নিয়ে থাকেন। ভর্তি প্রক্রিয়ার শুরুতে বুকিং দেওয়ার জন্য দুই হাজার, অনলাইনে আবেদনের জন্য সাড়ে তিন হাজার, ব্যাংক ড্রাফটের জন্য ১৫শ এবং বই ও মডেল টেস্টের জন্য আরও গুনতে হয় দুই থেকে তিন হাজার টাকা।

কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, পুরো কোর্স সম্পন্ন করতে পাঁচ হাজার টাকা ব্যয় হয়, বাকি অতিরিক্ত টাকা বিভিন্ন ভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে নিচ্ছে রেজা মিয়া ওরফে রাজা মিয়া।  

জেলার হরিরামপুর উপজেলার সুনিল কাপাসিয়া বলেন, আমি আমার স্ত্রীকে সাত হাজার টাকা ফি দিয়ে এখানে ভর্তি করেছি। এই টাকা ছাড়াও বই ও মডেল টেস্টের জন্য কয়েকবার টাকা দিয়েছি কিন্তু কোনো টাকারই মানি রিসিভ পাইনি।  

সদর উপজেলার আরও এক শিক্ষার্থী ৬২তম ব্যাচের আব্দুল হালিম বলেন, করোনার সময় বুকিং দেওয়ার জন্য দুই হাজার, অনলাইন ও ব্যাংক ড্রাফটের জন্য ৫ হাজার টাকা দিয়েছি রেজা মিয়ার কাছে। এখন ওই টাকা ছাড়াও বইয়ের জন্য ৬০০ টাকা এবং মডেল টেস্টের জন্য ২০০ টাকা দিয়েছি। কোর্স সম্পূর্ণ করতে আরও প্রায় চার হাজার টাকা লাগবে বলেও জানিয়েছেন রেজা মিয়া।  

৬১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সানোয়ার হোসেন বলেন, আমরা কয়েক জন বি সি ডি এস কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে। লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরপরই জেলা সভাপতি মো. রেজা মিয়া আমাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত যে টাকা নিয়েছিল তা ফেরত দিয়েছেন।

বাংলাদেশ কেমিস্ট্র এবং ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি রেজা মিয়া বলেন, সব শিক্ষার্থীরা অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করে ভর্তি হয়েছে, এখানে হাতে বা অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। সামাজিকভাবে অসম্মান করতে একটি চক্র আমার পেছনে লেগেছে। ৬১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা আপনার বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে দিয়েছে এমন প্রশ্ন করলে তিনি আরও বলেন, যে টাকা অতিরিক্ত নেওয়া হয়েছিল সে টাকা তাদের ফেরত দেওয়া হয়েছে।  

কেন্দ্রীয় কমিটির নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শীর্ষ নেতা বলেন, বাংলাদেশ কেমিস্ট এবং ড্রাগিস্ট সমিতির মানিকগঞ্জের সভাপতি রেজা মিয়ার নামে মাঝে মাঝেই অনিয়মের অভিযোগ শুনি। রেজা মিয়া চালাক প্রকৃতির লোক হওয়ায় সব কিছু ম্যানেজ করে ফেলেন যার কারণে কেন্দ্রীয় কমিটি কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না তার বিরুদ্ধে।  

বাংলাদেশ কেমিস্ট এবং ড্রাগিস্ট সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, বি সি ডি এস মানিকগঞ্জ শাখার সভাপতি মো. রেজা মিয়ার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তা শুনেছি। সংগঠনবিরোধী কার্যক্রম করার কোনো অধিকার তার নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।