ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নতুন অভিজ্ঞতা অর্জনেই মেট্রোরেল ভ্রমণে আগ্রহী নগরবাসী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০২৩
নতুন অভিজ্ঞতা অর্জনেই মেট্রোরেল ভ্রমণে আগ্রহী নগরবাসী

ঢাকা: সরকারি ছুটির দিন রাজধানীবাসীর কাছে আকাঙ্ক্ষিত একটি দিন। নগরের চিরায়ত যানজট কিছুটা কমই থাকে এ দিনে।

তাই পরিবার-পরিজন নিয়ে শহরে কিংবা শহরের অদূরে ঘুরতে যেতেই পছন্দ করে নগরবাসী।

আমাদের বাংলাদেশিদের কাছে মেট্রোরেল একটি স্বপ্নের নাম। উদ্বোধন হওয়ার পর থেকেই উৎসুক জনতার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু এটি। তাইতো রাজধানীবাসীর কর্ম ক্লান্তি কাটাতে ও একটু চিত্ত বিনোদনের জায়গায় পরিণত হয়েছে মেট্রোরেল।

মেট্রোরেল ভ্রমণে আসা মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা অনেকেই নতুন অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য মেট্রোরেল ভ্রমণে এসেছেন।

শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে গাজীপুর মাওনা থেকে মেট্রোরেল ভ্রমণে এসেছেন মাসুম বিল্লাহ। তিনি একটি সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করেন। তার স্ত্রী ও ছেলে সন্তান নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে অপেক্ষা করছেন৷ 

সকাল থেকে তিনি লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। তবে রাজধানীর দিয়াবাড়ি উত্তরা নর্থ মেট্রোরেল স্টেশন গেটে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন। সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন অসংখ্য যাত্রী। তাদের অধিকাংশই মাসুম বিল্লাহর মত মেট্রোরেল ভ্রমণে এসেছেন।

এদিকে স্টেশন গেটে থানা নিরাপত্তা প্রহরীরা কলাপসিবল গেট বন্ধ করে রেখেছেন। স্টেশনের যাত্রীর চাহিদা অনুযায়ী কিছুক্ষণ পর পর গেট খুলে ৫০-৭০ জন্য যাত্রী ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন।  

এদিকে যারাই ভেতরে প্রবেশ করছেন তারাই আনন্দে উল্লাসে মেতে উঠেছেন স্বপ্নের মেট্রোরেলে ভ্রমণের খুশিতে।  

মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমি একটি সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করি। সপ্তাহে শুক্রবার ছুটি থাকে তাই পরিবারের অনুরোধে মেট্রোরেল ভ্রমণে এসেছি। সেই সকালে গাজীপুর মাওনা থেকে বাসে করে রওয়ানা হয়ে উত্তরায় হাউজবিল্ডিং নেমেছি। সেখান থেকে রিকশা যোগে দিয়াবাড়ি মেট্রোরেল স্টেশনে এসে দেখি যাত্রীদের অনেক বড় লাইন। দেরি না করে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লাম। লাইন ভেঙে যাওয়ার কোনো কারণ নেই।

আগারগাঁও থেকে মেট্রোরেল চড়ে উত্তরা দিয়াবাড়ি মেট্রোরেল স্টেশনে নেমেছেন দুই বন্ধু হৃদয় ও রাব্বি। তারা জানালেন, চমৎকার ভালো লাগার বিষয়টি।  

কোথাও কোনো সমস্যা হয়নি। মেট্রোরেল স্টেশনে প্রতিটি পয়েন্টে স্কাউট রয়েছে। তারা সব ব্যবহার বিধি চমৎকারভাবে দেখিয়ে দিচ্ছেন। তবে একটি সমস্যা মনে হয়েছে সেটি হলো ৫০ টাকা ও ১০০ টাকার নতুন নোট মেশিন নিচ্ছে না। এতে বিভ্রান্তিতে পড়েছি। এখন এ নোট পরিবর্তন না করে টিকিট কাটতে পারছি না। তবে মেশিনের গায়ে নির্দেশিকা দেওয়া আছে দেখেছি। কোন কোন নোট নিবে সেটি স্পষ্ট দেওয়া আছে৷ তবে ১০০ টাকার ময়লা বা পুরনো নোট হলে টিকিট মেশিন খপ করে নিয়ে নিচ্ছে।

ধীরে ধীরে এগিয়ে অবশেষে স্বপ্নের সেই মেট্রোরেল স্টেশন গেটে এসে পৌঁছেছি। এখন ওপরে উঠে টিকিট কাটার পালা।  

তিনি বলেন, আমার ইচ্ছে মেশিনে টিকিট কাটবো। এতে নতুন এক অভিজ্ঞতাও অর্জন করতে পারবো৷ স্বপ্ন যখন সত্যি হয়ে মেট্রোরেলে রূপান্তরিত হয়েছে, তাই স্বপ্নের মেট্রোরেলে চড়ে আনন্দ উপভোগ করতে এসেছি।  

এদিকে, তাসলিমা আফরিন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষার্থী। তিনি তার কয়েকজন সহপাঠী ও বন্ধুর সঙ্গে রামপুরা থেকে উত্তরা দিয়াবাড়ি মেট্রোরেল স্টেশনে এসেছেন। মেট্রোরেলে ভ্রমণের খুশীতে তিনি অনেক উল্লাসে মেতে রয়েছেন। তার চোখে মুখে যেন আনন্দের বন্যা।  

তাসলিমা আফরিন বলেন, আমি অনেক খুশী। মেট্রোরেল এখন বাংলাদেশে। যদি পুরো নগরী জুড়ে মেট্রোরেল চালু হতো তবে অনেক ভালো হতো। মানুষ নিরাপদে চলাচল করতে পারতো। আশা করছি এমনটাই হবে। কারণ আমি আমার আব্বুর কাছে শুনেছি বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোতে মেট্রোরেল সবচেয়ে আরামদায়ক গণবাহন।  

আশা করি ভবিষ্যতে মেট্রোরেল আমাদের প্রধান বাহন হবে- যোগ করেন তিনি।  

এদিকে শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, উত্তরা দিয়াবাড়ি মেট্রোরেল স্টেশনে যাত্রীদের প্রচণ্ড ভিড়। এ ভিড় চলে সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২৩
এসজেএ/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।