নেত্রকোনা: নেত্রকোনার মদনে মালিক সাজিয়ে জাল দলিল করায় আব্দুল গণি নামে এক দলিল লেখককে বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (২৩ জানুয়ারি) তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছেন মদন সাব-রেজিস্টার।
অভিযুক্ত আব্দুল গণি উপজেলার নায়েকপুর ইউনিয়নের চন্দ্রতলা গ্রামের ওমর আলীর ছেলে ও নায়েকপুর ইউনিয়ন শাখার যুবদলের সভাপতি। তিনি মদন উপজেলার দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বরখাস্তের সঙ্গে সঙ্গেই তাকে ওই পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা সাব-রেজিস্টারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দলিল লেখক আব্দুল গণি ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর জাহাঙ্গীরপুর মৌজার ৪.১ শতাংশ একটি জমি দলিল করেন। সেই জমির প্রকৃত মালিক দেবাশীষ বৈশ্য নামে এক ব্যক্তি। দেবাশীষ বৈশ্য প্রায় এক যুগ ধরে এলাকায় থাকেন না। সেই সুযোগে বৈশ্যপাড়া এলাকার দুলাল চন্দ্র সরকার মালিক সেজে জাহাঙ্গীর নামে আরেক ব্যক্তির কাছে ৩৫ লাখ টাকায় ৪.১ শতাংশ জমি বিক্রি করেন। ওই দলিলে দেবাশীষ বৈশ্যের জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে দুলালের ছবি ব্যবহার করা হয়। দলিল লেখক আব্দুল গণি দুলালকে দেবাশীষ বৈশ্য বলে শনাক্ত করে একটি ভুয়া দলিল করেন। পরে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হলে ২০২৩ সালের ৯ জানুয়ারি জমির প্রকৃত মালিক দেবাশীষ বৈশ্যর ভাই প্রবীর বৈশ্যর নামে পুনরায় আরেকটি দলিলের মাধ্যমে জমি ফিরিয়ে দেন জাহাঙ্গীর। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ২২ জানুয়ারি পুনরায় প্রবীর বৈশ্য ওই জমিটি তার ভাই দেবাশীষ বৈশ্যর নামে দলিল করে দেন। এ নাটকীয় ঘটনায় সোমবার দলিল লেখক আব্দুল গণিকে বরখাস্ত করা হয়।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত দলিল লেখক আব্দুল গণি বলেন, আমি তাদের বিশ্বাস করে বিপদে পড়েছি। এই ভুলের কারণে দলিল লেখক সমিতি সাধারণ সম্পাদকের পদ হারিয়েছি। সাব-রেজিস্টারের নির্দেশে সোমবার থেকে দলিল লেখা বন্ধ রেখেছি। তবে আমি এখনো বরখাস্তের লিখিত কোনো নির্দেশ পাইনি।
দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আল-মামুন আকন্দ রিপন জানান, আব্দুল গণি ভুয়া দলিল করে জঘন্য অপরাধ করায় লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করেছেন। সাব-রেজিস্টার তাকে বরখাস্ত করেছেন।
মদন সাব-রেজিস্টার মাহবুর রহমান জানান, ভুয়া মালিক সাজিয়ে জাল দলিল করায় আব্দুল গণি নামে এক দলিল লেখককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২৩
আরএ