ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দর্শনার্থীদের নজর কাড়ছে সৈয়দপুরের যে মসজিদ

মো. আমিরুজ্জামান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২৩
দর্শনার্থীদের নজর কাড়ছে সৈয়দপুরের যে মসজিদ ছবি: বাংলানিউজ

নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুরের পল্লীতে গড়ে উঠেছে দৃষ্টিনন্দন একটি মসজিদ। দৃষ্টিনন্দন সুউচ্চ মিনার আর সোনালী রঙ্গের বিশাল গম্বুজ সহজেই আকৃষ্ট করছে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিসহ সাধারণ দর্শনার্থীদের।

বিশেষ করে মাগরিবের নামাজের পর যখন লাইটগুলো জ্বালানো হয় তখন এক অপরূপ সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে।

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের জুম্মাপাড় খোর্দ বোতলাগাড়ি গ্রামে অবস্থিত এ তালেব উদ্দিন সরকার জামে মসজিদ। অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত এ মসজিদের সৌন্দর্য আর নজরকাড়া নির্মাণশৈলী দুটোই এখন আলোচনায়। মসজিদটি এক নজর দেখার জন্য বর্তমানে দুর-দূরান্ত থেকে মানুষজন ছুটে আসছেন। মসজিদের ভেতরে ও বাইরে ব্যবহার করা হয়েছে বিদেশি টাইলস ও মার্বেল পাথর। পাশেই স্থাপন করা হয়েছে একটি মাদরাসাও।

তালেব উদ্দিন সরকার জামে মসজিদটি ৭০ বছর আগে ১৯৫৩ সালে আলহাজ্ব তালেব উদ্দিন সরকারের হাতে বাঁশ ও বেড়া দিয়ে গোড়াপত্তন হয়। ছোট এ মসজিদে তখন ৭০ থেকে ৮০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারতেন। পরবর্তীতে আলহাজ্ব তালেব উদ্দিন সরকারের বড় ছেলে আলহাজ্ব কুতুবুল আলম সরকার নিজ উদ্যোগ ও সহযোগিতায় ১৯৯৫ সালে মসজিদটি সংস্কার করেন। তখন মসজিদটি বর্ধিত করে প্রায় ২০০ জনের মত মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। তখন আলহাজ্ব কুতুবুল আলম সরকার মসজিদ সংস্কারের পাশাপাশি সংলগ্ন একটি হেফজখানাও প্রতিষ্ঠা করেন। যেখানে এলাকার শিশুদের পবিত্র কুরআন শিক্ষা দেওয়া হয়।

সর্বশেষ আলহাজ্ব তালেব উদ্দিন সরকারের ছোট ছেলে আলহাজ্ব সাইদুর রহমান সরকারের আত্মনিয়োগ ও সার্বিক সহযোগিতায় বদলে যায় এ মসজিদের অবকাঠামো। রূপ নেয় এক অত্যাধুনিক মসজিদে।

বর্তমানে নীলফামারী জেলায় দৃষ্টিনন্দন মসজিদগুলোর মধ্যে এটিই প্রথম। সৌন্দর্যের দিক দিয়ে এমন মসজিদ শুধু সৈয়দপুরে না গোটা নীলফামারী জেলাতেও নেই। আকৃষ্ট করার মতো নির্মাণশৈলীর কারণে বর্তমানে সবার নজর কাড়ছে এ পবিত্র মসজিদটি। আয়তনের দিক থেকেও এটি অনেক বড়। মসজিদে রয়েছে দুইটি প্রধান প্রবেশ ফটক। বর্তমানে মসজিদটি তিনতলা বিশিষ্ট হলেও ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত করা হবে বলে জানান মসজিদ কমিটির সদস্যরা।

প্রশস্থ সিঁড়ি, সুউচ্চ মিনার, বিশাল গম্বুজ, চোখ ধাঁধানো মেহরাব এবং দেয়ালে বসানো সোনালী রঙের টাইলস মসজিদের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে কয়েকগুণ। মসজিদটির ভেতরের পরিসর অনেক বেশি। একেবারে শেষ প্রান্ত থেকেও খতিব বা ইমাম সাহেবকে সহজে দেখা যায়।

এ মসজিদের মূল কাঠামোতে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। মূল কাঠামো ছাড়া বর্ধিত অংশেও নামাজ আদায় করা যায়। সে হিসেবে পুরো মসজিদে একসঙ্গে এক হাজার ৫০০ মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

একসঙ্গে অনেক লোকের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকায় শুক্রবার দুর-দূরান্ত থেকে অনেকে জুম্মার নামাজ আদায় করতে আসেন। এছাড়া শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় অনেক দর্শনার্থী দেখার পাশাপাশি নামাজ আদায় করতে আসেন। মসজিদের নির্মাণ কাজ এখনও চলমান এবং মসজিদের পাশেই অবস্থিত হাফিজিয়া মাদরাসায় চলছে শিশুদের কোরআন শিক্ষাও।

মসজিদটি প্রায় সাড়ে তিন একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। মসজিদের একটি অংশে ইমাম সাহেবদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে তার পাশেই রয়েছে আধুনিক ওযুখানা। মসজিদের পেছন সাইডে রয়েছে হাফিজিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা করার মাঠ।

মসজিদের বর্তমান ইমাম ও খতিব আমিনুল ইসলাম বলেন, আল্লাহর অশেষ রহমতে মসজিদের নির্মাণ এখনও চলমান। দৃষ্টিনন্দন নির্মাণ শৈলী, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও নির্মল পরিবেশ মুসল্লিদের ইবাদত বন্দেগির অনুকূল হওয়ায় বিভিন্ন বয়সের অনেক মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করেন। মসজিদ নির্মাণ হলেও এখন প্রধান কাজ নামাজ কায়েম করা। কারণ মুসল্লি ছাড়া মসজিদের সৌন্দর্য বেমানান। তাই আমরা সকলকেই নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের দাওয়াত দিচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২৩
এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।