ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

জমি দখল করতে না পেরে কবরস্থানের প্রাচীর ভাঙচুর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৩
জমি দখল করতে না পেরে কবরস্থানের প্রাচীর ভাঙচুর

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে জোর করে অবৈধভাবে জমি দখল করতে না পেরে সেখানে থাকা কবরস্থানের প্রাচীর ভাঙচুর করেছেন মো. আজাদ হোসেন নামে এক ব্যক্তি। এ সময় ওই জমিতে থাকা সবজি গাছ কেটে ফেলেন তিনি।

এছাড়া জমির মালিকদের প্রাণে হত্যার হুমকিসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের শিল্পী কলোনী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত আজাদ একই এলাকার মৃত মোহাম্মদ উল্যার ছেলে। তিনি এলাকায় একজন মাদকাসক্ত হিসেবে পরিচিত। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন স্থানীয়রা।

স্থানীদের অভিযোগ, প্রতিনিয়তই আজাদ একের পর এক স্থানীয় লোকজনের কাছে জমি দাবি করে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেন।

জানা গেছে, পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শিল্পী কলোনিতে মৃত হারিছ মিয়া গংদের ৫ শতাংশ জমি আছে। যা বিগত ৫০ বছর ধরে তাদের দখলে আছে। ওই জমির একাংশে মৃত হারিছ মিয়া ও তার স্ত্রীর পাকা প্রাচীর বেষ্টিত কবরস্থান। দীর্ঘদিন থেকে আজাদ কবরস্থানসহ ওই জমি জবরদখলের চেষ্টা করে আসছিলেন। রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) লাঠিসোঁটা নিয়ে ওই জমি জবরদখল করতে আসেন আজাদ ও তার অনুসারীরা। এ সময় বাধা দিলে মৃত হারিছ মিয়ার ছেলে আবু ছায়েদ, মৃত আবুল বাসারের ছেলে সোহাগ ও শাওনে সঙ্গে বাকবিতাণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তিনি দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সোহাগের মাথায় আঘাত করে হত্যার চেষ্টা করেন। স্থানীয়রা বাধা দিলে তিনি ব্যর্থ হয়ে সবাইকে অশালীন গালমন্দ করেন ও জমির মালিকদের প্রাণে হত্যার হুমকি দেন। তখন খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার বিষয়টি টের পেয়ে ছটকে পড়েন অভিযুক্ত আজাদ।

এরপর সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে জমি জবরদখলের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে মৃত হারিছ মিয়ার কবরস্থানের পাকা প্রাচীর ভাঙচুর করেন আজাদ। এ সময় ওই জমিতে থাকা সবজিগাছসহ বেশ কয়েকটি গাছ কেটে ফেলেন তিনি।

এ ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন মৃত হারিছ মিয়ার ছেলে ও নাতিরা।

তার বিরুদ্ধে স্থানীয় এক প্রবাসীর সীমানা প্রাচীরসহ ৯ শতাংশ জমি জবর দখল করে রাখারও অভিযোগ আছে। এ ঘটনায় ওই প্রবাসীর পরিবারের লোকজনকে মারধরসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করছেন আজাদ ও তার অনুসারীরা।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য সোহাগ ও শাওন বলেন, এ জমিতে আমাদের দুইটি ঘর ও এটি দোকান ছিল। পুরনো হওয়ায় ভেঙে ফেলা হয়েছে। যার পৌর হোল্ডিং নাম্বার ও বৈদ্যুতিক মিটার এখনও আছে। আজাদ অন্যায়ভাবে জমি দখলে ব্যর্থ হয়ে আমাদের প্রাণে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। এমনকি আমাদের দাদা-দাদির কবরের পাকা দেয়াল ভাঙচুর করেছেন।

অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে মো. আজাদ হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ এনে কি হবে? পুলিশ আমার ডান পকেটে থাকে। ওই জমি আমার, আমি দখল করবো। কেউ এলে হাত-পা কেটে রেখে দেবো। প্রয়োজনে রক্তের বন্যা বইবে।

লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন বলেন, জমি নিয়ে ঝামেলার বিষয়টি শুনে ঘটনাস্থে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু পুলিশ যাওয়ার আগেই অভিযুক্ত আজাদ সটকে পড়েন। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২৩
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।